‘মেরে ফেলব মোদী-শাহ-নীতীশ কুমারকে’, প্রাণনাশের হুমকি!শোরগোল দিল্লি পুলিশে, বুধবারই (২১ জুন) মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সফর শুরু করেছেন নরেন্দ্র মোদী। একই দিনে দেশে তাঁকে ফের হত্যার হুমকি দেওয়া হল। তবে শুধু প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীই নন, একইসঙ্গে প্রাণনাশের হুমকি দেওয়া হয়েছে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ এবং বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমারকেও। দিল্লি পুলিশ জানিয়েছে, বুধবার (২১ জুন), তাদের এক আউটার ডিস্ট্রিক্ট কন্ট্রোল রুমে দুটি ফোন কল এসেছে। প্রথম ফোন কলে বিহারের মুখ্যমন্ত্রীকে হত্যার হুমকি দেওয়া হয়। একটু পরেই আসে আরও এক ফোনকল। সেটিতে দেশের প্রধানমন্ত্রী এবং স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর প্রাণনাশের হুমকি দেওয়া হয়। এরপরই দিল্লি পুলিশ এই বিষয়ে একটি বিশেষ দল গঠন করে তদন্ত শুরু করে। পুলিশ জানিয়েছে ওই দুই হুমকি কলই করেছে একই ব্যক্তি। তাকে ইতিমধ্যেই শনাক্তও করা হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী মোদী বর্তমানে তিন দিনের রাষ্ট্রীয় সফরে আমেরিকায় আছেন। সেখানে স্পেশাল প্রোটেকশন গ্রুপ বা এসপিজি তাঁকে নিরাপত্তা দিচ্ছে। একই সঙ্গে তাঁর নিরাপত্তার দায়িত্ব নিয়েছে মার্কিন সিক্রেট সার্ভিসও। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ আছেন দিল্লিতে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর নিরাপত্তার দায়িত্বে রয়েছে দিল্লি পুলিশ ও সিআরপিএফ। প্রোটোকল মেনে তাঁকে জেড ক্যাটেগরির নিরাপত্তা দেওয়া হয়। অন্যদিকে, বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমারের নিরাপত্তার দায়িত্বে আছে বিহার পুলিশের এসএসজি বা স্পেশাল সিকিউরিটি গ্রুপ। প্রোটোকল অনুযায়ী তিনি জেড প্লাস নিরাপত্তা পান। কাজেই তিনজনেরই নিরাপত্তা নিয়ে কোনও ঝুঁকি নেই বললেই চলে।
আরও পড়ুন – ভাঙারে নওশাদ সিদ্দিকি-সহ ৬৮ জনের বিরুদ্ধে খুনের অভিযোগ, মামলা রুজু করল পুলিশ
এর আগেও মে মাসের শেষেও প্রধানমন্ত্রী মোদীর প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে একটি ফোনকল করা হয়েছিল দিল্লি পুলিশকে। সেই ফোনকল ট্রেস করে, দিল্লির প্রসাদ নগর এলাকার করোলবাগ থেকে, হেমন্ত নামে ৪৮ বছরের এক ব্যক্তিকে গ্রেফতার করেছিল পুলিশ। সে দিল্লির য়ারগড়পুরার বাসিন্দা বলে জানিয়েছিল পুলিশ। তদন্তের পর পুলিশ জানিয়েছিল, মদ্যপ অবস্থায় সে ওই হুমকি ফোনকল করেছিল। প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তা নয়ে সত্যিকারের কোনও ঝুঁকি ছিল না। অন্যদিকে, মার্চ মাসের শেষে হোয়াটসঅ্যাপে হুমকি দেওয়া হয়েছিল নীতীশ কুমারকে। তদন্তে নেমে বিহার পুলিশ জানতে পেরেছিল, প্রাণনাশের হুমকি দিয়েছিলেন অঙ্কিত মিশ্র নামে গুজরাটের এক বাসিন্দা। পরে বিহার এবং গুজরাট পুলিশের এক যৌথ অভিযানে সুরাট থেকে ওই ব্যক্তিকে গ্রেফতার করা হয়।
দিল্লি পুলিশ জানিয়েছে, সঞ্জয় ভার্মা নামে এক যুবক ওই হুমকি ফোনকল দুটি করেছে। সে দিল্লির মাদিপুর এলাকার বাসিন্দা। তার পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছিল পুলিশ। তাঁরা জানিয়েছেন, মঙ্গলবার রাতে সঞ্জয় প্রচুর মদ্যপান করেছে। এমনকি রাতে সে বাড়িও ফেরেনি। সঞ্জয়ের খোঁজে জায়গায় জায়গায় তল্লাশি শুরু করেছে পুলিশ। তাকে শিগগিরই গ্রেফতার করা হবে বলে জানিয়েছে দিল্লি পুলিশ। এটা শুধুই মাতলামি না, এর পিছনে সত্যিকারের কোনও হুমকি রয়েছে, তা তদন্ত করে দেখছে পুলিশ। একইসঙ্গে, কোনও সন্ত্রাসবাদী গোষ্ঠীর সঙ্গে সঞ্জয় ভার্মার যোগ আছে কিনা, সেই দিকটিও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। বিহার পুলিশকে সতর্কও করেছে দিল্লি পুলিশ।