‘বাংলার মাটি’ গানের শব্দ বদল নিয়েও ভাবনা মুখ্যমন্ত্রীর, পশ্চিমবঙ্গ দিবসের দিনক্ষণ নিয়ে চলছে চাপানউতর। এদিনই নবান্নে ডাকা হয়েছিল সর্বদলীয় বৈঠক। সেখানে নিজেদের মতামত রাখেন রাজ্যের বিশিষ্টজনেরা। ৭ সেপ্টেম্বর এ নিয়ে ফের আলোচনার কথা বিধানসভায়। তারপরই বিল পেশের সম্ভাবনা। এদিকে পশ্চিমবঙ্গ (West Bengal) দিবসের পাশাপাশি রাজ্য সঙ্গীত নিয়ে ভাবনা শুরু করেছিল রাজ্য। বাংলার আমজনতার আত্মিক সম্পর্ক রয়েছে, এমন কোনও গানকে ‘রাজ্য সঙ্গীত’ করতে পারে সরকার। এমনই শোনা যাচ্ছিল। সূত্রের খবর, এদিনের আলোচনা বারবার উঠে আসে রবীন্দ্রনাথের লেখা, ‘বাংলার মাটি, বাংলার জল’ গানটির কথা।
এসএউসিআই -র প্রতিনিধি অমিতাভ চক্রবর্তী সাফ বলেন, “আপনি এটা করবেন না। রবীন্দ্রনাথের গানের লাইনকে বদলে দিতে পারেন না। বিতর্ক তৈরি হতে পারে।” তাঁর কথা শুনে মমতা বলেন, তাহলে ‘ধনধান্যে পুষ্পে ভরা’ গানটিকে রাজ্য সঙ্গীত করে দিই। কিন্তু, তাতেও মেলে না সকলের সম্মতি। তা দেখেই মমতা বলেন, “যেহেতু আমরা একমত হতে পারছি না। তাই আপনাদের যে মতামত আছে এ নিয়ে ৫ তারিখের মধ্যে আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে পাঠান। ৭ তারিখে পশ্চিমবঙ্গ দিবস নিয়ে আলাপ-আলোচনা করার দিনে এ নিয়ে আলোচনা করব।” সূত্রের খবর, মমতা মূলত তিনটি বিষয় ভাবতে বলেছেন। ‘বাংলার মাটি, বাংলার জল’ বা ‘ধনধান্যে পুষ্পে ভরা’ এই দুই গানের মধ্যে যে কোনও একটার পক্ষে মতামত দিতে বলেছেন। পাশাপাশি ‘বাংলার মাটি, বাংলার জল’ গানে বাঙালি শব্দ বদলে বাংলা করা যায় কিনা সে বিষয়েও তাঁর পরামর্শদাতা আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে তাঁদের মতামত পাঠাতে বলেন। সূত্রের খবর, এখনও পর্যন্ত যা ঠিক হয়েছে তাতে জানা যাচ্ছে, রাজ্যের যে কোনও অনুষ্ঠানের পর এই গান গাওয়া হবে। তবে জাতীয় সঙ্গীতের পাশাপাশি ঠিক কোন সময়, কোন আঙ্গিকে তা গাওয়া হবে তা এখনও পরিষ্কার নয়।
আরও পড়ুন – শিশিরকে দেখে ‘চোর চোর’ স্লোগান! ‘তৃণমূল’ সাংসদ বললেন ফল ভুগতে হবে মুখ্যমন্ত্রীকে
আলোচনার একদম শেষ পর্বে সকলে উঠে দাঁড়িয়ে সমবেত সুরে গেয়েও ওঠেন গানটি। প্রসঙ্গত, এই গানের মধ্য়ে রয়েছে, ‘বাঙালির পণ, বাঙালির আশা, বাঙালির কাজ, বাঙালির ভাষা– সত্য হউক, সত্য হউক, সত্য হউক হে ভগবান। বাঙালির প্রাণ, বাঙালির মন, বাঙালির ঘরে যত ভাই বোন– এক হউক, এক হউক, এক হউক হে ভগবান’ এর মতো শব্দ। এখানেই মমতা বাঙালি বদলে বাংলা করা যায় কি না, তা নিয়ে বলেন। তাঁর যুক্তি, স্বাধীনতার আগে বাঙালি মানে ইংরেজদের বিরুদ্ধে লড়াই, সামগ্রিক জাতির, গোটা দেশের বিষয় ছিল। এখন সেটা একটা শুধু বাংলা বোঝায়। বাঙালি জাতি বোঝায়। তাই তাঁর যুক্তি বাংলা করে দেওয়ার পক্ষে। যদিও তাঁর যুক্তিতে বাকিরা নীরব থাকলেও আপত্তি তোলেন এসএউসিআই -র প্রতিনিধি অমিতাভ চক্রবর্তী।