মাটি রক্ষার বার্তা দিতে ভুট্টা দিয়েই তৈরি হচ্ছে প্রতিমা

মাটি রক্ষার বার্তা দিতে ভুট্টা দিয়েই তৈরি হচ্ছে প্রতিমা

Facebook
Twitter
LinkedIn
Email
WhatsApp
Print
Telegram
মাটি রক্ষার বার্তা দিতে ভুট্টা দিয়েই তৈরি হচ্ছে প্রতিমা

ভুট্টা দিয়েই তৈরি হচ্ছে প্রতিমা। মাটি রক্ষার বার্তা দিতে অভিনব দুর্গা প্রতিমা তৈরি করছেন মালদহের অবসরপ্রাপ্ত হোমগার্ড কর্মী বিষ্ণুচন্দ্র সাহা। ভারতীয় শিল্পের সঙ্গে পাশ্চাত্য শিল্পের মেলবন্ধনে ফুটে উঠছে দেবী দুর্গার মৃন্ময়ী রূপ। ভুট্টার দানা, খোসা, মঞ্জুরী ব্যবহার করেই ফুটিয়ে তোলা হচ্ছে দেবী দুর্গাকে। ভারতীয় বৃন্দাবনে নকশার প্রতিমা সঙ্গে পাশ্চাত্যের ট্যাটো শিল্পকে তুলে ধরা হয়েছে প্রতিমার মধ্যে। কোনরকম মাটির ব্যবহার নেই প্রতিমা তৈরিতে। খড়, ধানের তুষ গমের ভুসি এই তিন উপকররণ দিয়ে তৈরি করা হয়েছে প্রতিবার কাঠামো। তার ওপরে মাটির বদলে ভুট্টার খোসার প্রলেপ। আঠার সাহায্যে কাঠামোর ওপর ভুট্টার খোসা দিয়ে তৈরি করা হচ্ছে প্রতিমা। প্রতিমার সাজে ব্যবহার করা হচ্ছে ভুট্টার দানা ও ভুট্টার মঞ্জুরী। মঞ্জুরি পাকিয়ে বিভিন্ন নকশা তৈরি করা হচ্ছে। এই মঞ্জুরীর সাহায্যে ই তৈরি করা হয়েছে টেটো। গ্রাম বাংলার ঐতিহ্য গোধনা। এই গোধনা পাশ্চাত্যের ট্যাটো হিসেবেই পরিচিত। দুর্গা প্রতিমার সাজের মধ্যে এই বার্তায় তুলে ধরতে চেয়েছেন শিল্পী।

আরও পড়ুনঃ রাইস মিলে বড়সড়ো দুর্নীতির পর্দাফাঁস, ন্যায্য মূল্যে ধান নিয়ে চাল না দেওয়ার অভিযোগ, পলাতক অভিযুক্তরা

সম্পূর্ণ নিজস্ব চিন্তাভাবনা থেকেই এমন প্রতিমা তৈরীর পরিকল্পনা শিল্পী বিষ্ণুচন্দ্র সাহার। বিগত কয়েক বছর ধরেই তিনি মাটি ছাড়া বিভিন্ন উপকরণ দিয়ে প্রতিমা তৈরি করে দর্শকদের তাক লাগিয়ে এসেছেন। তাই এই বছরও অভিনব পরিকল্পনা। গত ছয় মাস ধরে তিনি এই প্রতিমা তৈরি করছেন। এখন পর্যন্ত প্রায় ৭০০ পিস ভুট্টা প্রয়োজন হয়েছে প্রতিমা তৈরি করতে। মোট ৩০ কেজি ভুট্টা তিনি কিনেছিলেন। এছাড়াও ভুট্টার গাছ কেউ ব্যবহার করা হচ্ছে প্রতিমা তৈরিতে। ভুট্টা দিয়ে প্রতিমা তৈরীর চিন্তাভাবনার কারণ? ভুট্টা পচনশীল। প্রতিমা বিসর্জনের সময় ভুট্টা ও অন্যান্য সামগ্রী জলে পচে মাছের খাবার হবে। এই প্রতিমা জল দূষণ করবে না। একদিকে যেমন তিনি মাটি রক্ষার বার্তা দিচ্ছেন পাশাপাশি পরিবেশের দূষণ রোধ করারও বার্তা দিচ্ছেন এই শিল্পের মধ্যে দিয়ে।ক্রমশ ভূমিক্ষয়, ভাঙন এই সমস্ত কারণে প্রতিমা তৈরীর মাটি পর্যাপ্ত পরিমাণে মিলছে না। বর্তমানে প্রতিমা তৈরি করতে গিয়ে মৃৎশিল্পীরা হিমশিম খাচ্ছেন মাটির যোগান দিতে। আগামী প্রজন্মের শিল্পীরা মাটি ছাড়াও যেন প্রতিমা তৈরি করতে পারেন এ শিল্পকে ধরে রাখতে পারেন সেই বার্তা দিতেই বিগত কয়েক বছর ধরে তিনি মাটি ছাড়া প্রতিমা তৈরি করে চলেছেন।

 

প্রতিবছরের মতো এই বছরও তার তৈরি এই প্রতিমা মালদহ শহরের দুই নম্বর গভমেন্ট কলোনি বাঘাযতীন ক্লাব দেখতে পাওয়া যাবে। প্রতিমা তৈরীর খরচ ক্লাব কর্তৃপক্ষ কিছু পরিমাণে দিয়েছে। যদিও শিল্পী বিষ্ণুচন্দ্র সাহা খরচের চিন্তা করেন না। বাবা একজন নামকরা মৃৎশিল্পী ছিলেন। সেখান থেকেই হাতে খড়ি। কর্মজীবন থেকে তিনিও এখন অবসর নিয়েছেন। তাই নিত্য নতুন চিন্তাভাবনার শিল্পকলা সৃষ্টি করেই মনের তৃপ্তি পান তিনি। দর্শকদের বিনোদনের পাশাপাশি সমাজের বিভিন্ন বার্তা দিতেই এইভাবে প্রতিমা তৈরি করতে চান আগামীতেও।

en.wikipedia.org

RECOMMENDED FOR YOU.....

Scroll to Top