হার্টে তিনটি ব্লক রয়েছে, SSKM-এ ভরসা রাখতে পারছেন না ‘কালীঘাটের কাকু’? নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় গ্রেফতার সুজয়কৃষ্ণ ভদ্র ওরফে ‘কালীঘাটের কাকু’ জামিন পেতে মরিয়া হয়ে উঠেছেন। বৃহস্পতিবার ফের তাঁর জামিনের জন্য সওয়াল করেন সুজয়কৃষ্ণের আইনজীবী সেলিম রহমান। মেডিক্যাল রিপোর্টও জমা দেওয়া হয় আদালতে। সেখানে উল্লেখ রয়েছে হার্টে তিনটি ব্লক রয়েছে। ওপেন হার্ট সার্জারির প্রয়োজন রয়েছে। সেই মর্মে যাতে মেডিক্যাল ও মানবিক কারণে জামিন দেওয়া হয়, সেই আর্জি জানান সুজয়ের আইনজীবী। উঠে আসে তাঁর স্ত্রী-বিয়োগের প্রসঙ্গও। কালীঘাটের কাকুর আইনজীবীর বক্তব্য, গ্রেফতার হওয়ার কারণে সুজয়কৃষ্ণ তাঁর স্ত্রীর চিকিৎসা ঠিকঠাক করাতে পারেননি। পরে তাঁর স্ত্রীর মৃত্যু হয়েছে। আর এখন তিনি নিজেও চিকিৎসা করাতে পারছেন না।
সুজয়কৃষ্ণের প্যারোলের সময়ের কথাও উঠে আসে আদালতে। ইডির আইনজীবী বলেন, ‘১৬ দিন যখন উনি বাড়িতে ছিলেন, তখন কিছু হল না। প্যারোল শেষে জেলে নিয়ে যাওয়ার আগে পর্যন্তও তিনি সুস্থ ছিলেন। জেলে যাওয়ার সময় হঠাৎ হঠাৎ অক্সিজেন ঘাটতি। এতেই বোঝাচ্ছে তিনি কতটা প্রভাবশালী। অতীতে পার্থর ক্ষেত্রেও এমনই হয়েছিল।’ সেক্ষেত্রে ইডির আইনজীবীর বক্তব্য, ‘এসএসকেএম হাসপাতালের চিকিৎসকদের যোগ্যতা প্রশ্নাতীত। কিন্তু তাঁদের উপর রাজনৈতিক চাপ নিয়ে আগেই প্রশ্ন উঠেছে হাইকোর্টে।’ এমন অবস্থায় যাতে সুজয়কৃষ্ণের জামিনের আবেদন খারিজ করা হয়, সেই আর্জি জানান ইডির আইনজীবী। একইসঙ্গে যাবতীয় রিপোর্ট দিল্লির এইএমসে পাঠিয়ে, সেখানকার মেডিক্যাল বোর্ড দিয়ে দ্বিতীয় একটি মতামত নেওয়া প্রয়োজন বলেও দাবি ইডির আইনজীবীর।
সুজয়কৃষ্ণের আইনজীবীর বক্তব্য, তাঁর মক্কেল ২০১১ সাল থেকে হার্টের সমস্যায় ভুগছেন। তাঁর হার্টের যে ধরনের অপারেশন প্রয়োজন, সেটার সাফল্যের হার খুবই কম। কালীঘাটের কাকুর আইনজীবীর এই বক্তব্য শুনে বিচারক তাঁকে সতর্ক করে দেন, যাতে এখানকার চিকিৎসকদের খাটো না করা হয়। তখন সুজয় ভদ্রের আইনজীবী বলেন, তাঁর মক্কেলকে বিদেশে নিয়ে যাওয়ার আবেদন করা হচ্ছে না। দেশের মধ্যেই চিকিৎসা করাতে চান তিনি। সেক্ষেত্রে তাঁর মক্কেলকে যাতে পছন্দমতো হাসপাতালে চিকিৎসার অনুমতি দেওয়া হয়, সেই আর্জি জানানো হয় আদালতে। একইসঙ্গে চিকিৎসার স্বার্থে যাতে তাঁর মক্কেলকে জামিন কিংবা অন্তর্বর্তী জামিন দেওয়া হয়, সেই আর্জিও জানান তাঁরা। অর্থাৎ, এসএসকেএম-এর চিকিৎসা ব্যবস্থার উপর যে কালীঘাটের কাকু ভরসা রাখতে পারছেন না, ঘুরিয়ে সেই কথাটাই বোঝানোর চেষ্টা করেন তাঁর আইনজীবী।
আরও পড়ুন – বাংলায় পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, বললেন ‘ডেঙ্গি বাংলাদেশ থেকে আসছে,…
অন্যদিকে ইডির তরফে আইনজীবীর আবার পাল্টা বক্তব্য, রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী এসএসকেএম হাসপাতালের উপর সম্পূর্ণ ভরসা রাখেন। তিনিও কোনও সমস্যা হলেই সেখানেই যান। চিকিৎসকদের রিপোর্টের উপরেও ভরসা করেন। ইডির বক্তব্য, এসএসকেএম হাসপাতাল হল কলকাতায় ট্রান্সপ্লান্ট সার্জারির অন্যতম শ্রেষ্ঠ প্রতিষ্ঠান। সুজয় ভদ্রের আইনজীবীর এমন বক্তব্যের ফলে চিকিৎসকদের অপমান করা হয়েছে বলেও আদালতে জানান ইডির আইনজীবী।