বইমেলায় এসেও সেলফিতে মগ্ন উৎসবপ্রেমীরা। কোচবিহার জেলা বইমেলায় সোমবার শেষ দিন বইপ্রেমীদের ভিড় অনেকটাই লক্ষ্য করা যায়। পাশাপাশি মেলায় এসে বই কেনা ছাড়াও সেলফিতেও মজলো বইপ্রেমীদের অনেককেই। তবে বই বিক্রি সেভাবে হয়নি বলেই দাবি প্রকাশনী দাবি সংস্থাগুলির ব্যবসায়ীদের একাংশের। মেলা কর্তৃপক্ষ অবশ্য জানান, আশা করছি আমাদের লক্ষ্যমাত্রা পৌঁছানো সম্ভব হবে। এবছর কোচবিহার জেলা বইমেলা গত ২৭ ডিসেম্বর থেকে শুরু হয়েছে দিনহাটা সংহতি ময়দানে।
মেলার পাশাপাশি সাংস্কৃতিক মঞ্চে নানা অনুষ্ঠান। এছাড়াও বহিরাগত শিল্পীদের নানা অনুষ্ঠান মেলায় আসা বইপ্রেমী থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষকে অনেকটাই আকৃষ্ট করেছে। প্রথম কয়েকদিন বইপ্রেমীদের ভিড় সেভাবে না হলেও শেষের দুই তিন দিন ধীরে ধীরে সাড়া মেলে। শেষ দিন সোমবার দিনহাটার বেশ কয়েকটি স্কুল কর্তৃপক্ষ ছাড়াও দিনহাটা কলেজ, পুরসভার পক্ষ থেকে বই কেনা হয়।
পুরসভার কাউন্সিলর পার্থনাথ সরকার, রমেন বর্মণ রা বিভিন্ন স্টলে গিয়ে যেমন বই কেনেন তেমনি কলেজ কর্তৃপক্ষকে বই কিনতে দেখা যায়।মেলা কর্তৃপক্ষ দিনহাটার এই বইমেলায় বই বিক্রির যে লক্ষ্যমাত্রা নিয়েছিলেন শেষ পর্যন্ত সেই লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হবে কিনা সেটা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। এদিকে অনেকেই বই কিনতে এসে মেলা প্রাঙ্গণে সেলফিতেও বুঝেছেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী জয়ী ধর, মুনমুন শর্মা জানান, প্রথম কয়েকদিন বই কিনলেও শেষ দিন মেলায় বেশ কয়েকটি বই কিনলাম। এর মধ্যে যেমন রয়েছে স্বামীজীর উপরে লেখা বই, শিবরাম চক্রবর্তীর লেখা কয়েকটি হাসির বই, বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের অলৌকিক গল্প, আমি চন্দ্রাবলী বলছি ছাড়াও বেশ কয়েকটি বই সংগ্রহ করলাম। এবছর দিনহাটায় জেলা বইমেলায় ছোটদের বইয়ের বিক্রি তুলনামূলক বেশি হয় বলে এখনো পর্যন্ত জানা গিয়েছে।
আরও পড়ুন – পঞ্চায়েত ( Panchayats ), টিকিট মহার্ঘ, জ্বলছে আগুন, অভিষেক তৎপর, আইপাকের বড় দায়িত্ব
এদিন দিনহাটা বেশ কয়েকটি স্কুলের পাশাপাশি গোসানি রোড শরণার্থী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পক্ষ থেকেও শিক্ষক শিক্ষিকারা ছোট ছোট ছাত্র ছাত্রীদের নিয়ে এসেছে মেলা প্রাঙ্গণ। মূলত তাদের বইয়ের প্রতি আরো আগ্রহ বাড়াতে এদিন সকলকেই বই কিনে দেয় কর্তৃপক্ষ। স্কুলের প্রধান শিক্ষক বরুণ মজুমদার জানান, বর্তমান সময়ে বইয়ের থেকে অনেকটাই দূরে সরে গিয়েছে ছাত্র সমাজ। তাই এদের বইমুখী করতে বইমেলায় নিয়ে এসেছি।এর আগে রবিবার মেলার ষষ্ঠ দিনও গোপালনগর শরণার্থী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক শিক্ষিকারা ছোট ছোট ছাত্র ছাত্রীদের মেলায় নিয়ে এসে তাদের পছন্দের মত গল্পের বই কিনে দেয়।
বইমেলায় আসা এক প্রকাশনী সংস্থার অনিমা সাহা জানান, শেষ দিনেও এখনও সেভাবে বই বিক্রির সাড়া মেলেনি। গত কয়েকদিন বই মানুষ এসে দেখছে, ঘাটাঘাটি করছে, কিছু মানুষ নিচ্ছে। কোচবিহারে জেলা বইমেলায় গত কয়েক বছর ধরে দেখেছি, কোচবিহারের উপর লেখা বই, রাজবাড়ী নিয়ে লেখা বই এসবের উপরে আলাদা একটা সেন্টিমেন্ট কাজ করে। দিনহাটায় সেটা সেভাবে দেখছি না। ইতিপূর্বে বছর ২৫ আগে দিনহাটায় একবার বইমেলা হয়েছিল। বইমেলায় যখন থেকে শুরু হয় তখন থেকেই আমরা বইমেলায় স্টল নিয়ে আসি। কোচবিহারে আগে রাস মেলার সাথে বইমেলা হতো।
মেলা কমিটির যুগ্ম সম্পাদক দিলীপ দে জানান, জেলা বইমেলায় আমরা যা আশা করেছিলাম বই বিক্রির ক্ষেত্রে তার কাছাকাছি গিয়েছে। আশা করছি আমরা লক্ষ্যমাত্রায় পৌঁছাতে পারবো। বিভিন্ন লাইব্রেরি এবং স্কুল, কলেজ, ক্লাব গুলিকেও বলা হয়েছে, তারা যাতে অন্ততপক্ষে ২০-২৫ টা স্টল থেকে বই কেনে। এ দিন দিনহাটা পুরসভা ছাড়াও বেশ কয়েকটি স্কুল বিভিন্ন রকম বই কেনেন। সব মিলিয়ে দিনহাটায় কোচবিহার জেলা বইমেলা সার্থকতা লাভ করবে বলেও আমরা মনে করছি।