দ্রুতগতিতে আসা বিয়ে বাড়ির গাড়ি উল্টে মৃত্যু চারজনের

দ্রুতগতিতে আসা বিয়ে বাড়ির গাড়ি উল্টে মৃত্যু চারজনের

Facebook
Twitter
LinkedIn
Email
WhatsApp
Print
Telegram

দ্রুতগতিতে আসা বিয়ে বাড়ির গাড়ি উল্টে মৃত্যু চারজনের। নববধূকে নিয়ে ঘরে ফেরার কথা ছিল। তবে মর্মান্তিক দূর্ঘটনায় বদলে দিলো সে ছবি। শিলিগুড়ি প্রধাননগর এলাকার বিয়ের অনুষ্ঠান বাড়ির উঠোনে এসে পৌঁছলো চার নিথর দেহ। ঘটনাটি ঘটেছে শুক্রবার রাতে কালিম্পংয়ের মংপো থানা এলাকায়।

 

মংপোর থানা এলাকার রংটুঙ নদীর সেতুর কাছে জাতীয় সড়কে এদিন গভীর রাত একটা নাগাদ বিয়ের অনুষ্ঠান সেরে ফেরার পথে একটি চারচাকা বোলেরো গাড়ি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে উল্টে যায়। সে সময় গাড়িতে ছিলেন চালক সহ নয় জন।
জানা গিয়েছে শিলিগুড়ির প্রধান নগর থানা এলাকার বাসিন্দা রাজেশ এক্কার সঙ্গে বিবাহ হয় বানারহাট নিবাসী পুনম ওরাও এর। এদিন বানারহাটে বিয়ের অনুষ্ঠান সেরে গাড়িতে করে শিলিগুড়ির উদ্দেশ্যে রওয়ানা দেন নব বরও বধূকে নিয়ে বরযাত্রীরা।

 

বারারহাট থেকে কিছুটা দূরে মংপো থানার অন্তর্গত ডুয়ার্সের কিছুটা সমতল এলাকার রঙডুঙ নদীর সেতু সংলগ্ন জাতীয় সড়কের ওপর দ্রুতগতিতে আসা গাড়িটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে গার্ড ওয়ালে ধাক্কা মারে। এরপরই সেতু থেকে নিচে খাদে পড়ে যায় গাড়িটি। ঘটনার খবর পেয়ে এই ঘটনাস্থলে পৌঁছায় মংপো থানার পুলিশ। কালিম্পং পুলিশ সুপার অপরাজিতা রাই জানান ঘটনাটি ঘটে গভীর রাত ১টা থেকে ১.৩০ নাগাদ। গাড়িতে চালক সহ ৯ জন ছিলেন।

 

গুরুতর আহত অবস্থায় ঘটনাস্থল থেকে তাদের উদ্ধার করে ওদলাবাড়ি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। এরমধ্যে ঘটনাস্থলে মৃত্যু হয় তিনজনের। পরবর্তীতে গাড়ির চালো শাহিল শেখকে গুরুতর জখম অবস্থায় চিকিৎসার জন্য ওদলাবাড়ি হাসপাতাল থেকে শিলিগুড়িতে নিয়ে যাওয়ার সময় রাস্তাতেও তার মৃত্যু হয়। নব বর ও বধূ দুজনেই আহত হয়েছেন। বর যাত্রীতে আসা আরও তিনজনও জখম অবস্থায় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে। তিনি বলেন দ্রুততার সঙ্গে এক ঘন্টার সময়ের মধ্যেই দুর্গময়ী এলাকা থেকে পুলিশ আহতদের উদ্ধার করে হাসপাতালে পৌছায়।

আরও পড়ুন – বিনা নোটিশে জাতীয় সড়কের টোল প্লাজা খোলায় ধুন্ধুমার রায়গঞ্জে

মৃতরা হলেন তিলক মন্ডল (৩৪) দক্ষিণ ২৪ পরগনার নিবাসী, কলকাতার বাসিন্দা সুশান্ত জয়ধর( ৩৮), শিলিগুড়ি নিবাসী গাড়ির চালক সাহিল শেখ (২৩), শুক্লা কুন্ডু (৫৭)। তিনিও শিলিগুড়ি বাসিন্দা। শনিবার সকালে শিলিগুড়ি একটি বেসরকারি হাসপাতালে মৃত্যু হয় কলকাতা নিবাসী সুশান্ত জয় ধরের। এদিকে শনিবার সকালে শিলিগুড়ি প্রধাননগর এলাকায় খবর ছড়িয়ে পড়তেই নব বর বধূ বাড়ির সামনে ভিড় জমান এলাকা বাসীরা।

 

আহত রাজেশ এক্কা ও তার সদ্য বিবাহিত স্ত্রী পুনম দেবী শিলিগুড়ির একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। আহত তিনজনও শিলিগুড়ির বিভিন্ন বেসরকারি হাসপাতালে বর্তমানে চিকিৎসাধীন। আহত তিনজনের মধ্যে দুজন কলকাতা ও বাঙুরের বাসিন্দাও রয়েছেন। স্থানীয়দের সূত্রে জানা গিয়েছে রাজেশ এক্কা বিবাহের অনুষ্ঠান উপলক্ষ্যেই তার আত্মীয় ও পরিজনের বানারহাট গিয়েছিলেন। বানারহাটে বিবাহের অনুষ্ঠান সেরে চালক সহ মোট নয় জন ওই বোলেরো গাড়ি করে নব বধূকে নিয়ে শিলিগুড়ির উদ্দেশ্যে ফিরছিলেন। জাতীয় সড়কের ওপর এই ভয়ঙ্কর দুর্ঘটনায় রাতারাতি বিবাহের আনন্দ অনুষ্ঠানের ছবি বদলে গিয়ে নেমে এসেছে গভীর শোকের ছায়া।

 

এদিন রাজেশ এক্কা বলেন শরীরের বিভিন্ন অংশে প্রচণ্ড যন্ত্রনা রয়েছে। হাসপাতালে চিকিৎসা চলছে। কথা বলতে পর্যন্ত পারছি না। স্ত্রী কিছুটা সুস্থ্য হয়ে উঠছে। স্থানীয়রা জানান রাজেশ এক্কার পরিবারের কেউ নেই।গত ২৬শে জানুয়ারি তাদের বিবাহ হয়। তার পরিবারের কেউ না থাকায় বানার হাটে স্ত্রীর বাড়িতেই একটি বিবাহের পরে একটি অনুষ্ঠান করা হয়। সেজন্যই বানারহাট গিয়েছিলেন সকলে।

 

প্রতিবেশী মৃত মহিলা শুক্লা কুন্ডুর দেহ এদিন জলপাইগুড়ি হাসপাতাল থেকে শিলিগুড়িতে তার পরিবারের কাছে নিয়ে আসা হয়। মৃত গাড়ির চালক সাহিল শেখ সমননগরের বাসিন্দা। এদিকে সুন্দরবন এবং কলকাতার বাসিন্দা দুই যুবকের দেহ উত্তরবঙ্গ মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের মর্গে রয়েছে। পুলিশের তরফে যুবকদ্বয়ের পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে।

RECOMMENDED FOR YOU.....

Scroll to Top