শাড়িতে পুথির কাজ দেওয়ার নামে লক্ষাধিক টাকা প্রতারণা । অভিযুক্তের বাড়ি ঘেরাও করে বিক্ষোভ । প্রতারণার নতুন কৌশল। শাড়িতে পুথির কাজ দেওয়ার নামে লক্ষাধিক টাকা প্রতারণা করার অভিযোগে অভিযুক্তের বাড়ি ঘেরাও করে বিক্ষোভ প্রতারিতদের৷ বুধবার চাঞ্চল্যকর ঘটনাটি ঘটেছে দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার কুমারগঞ্জ ব্লকের রামকৃষ্ণ গ্রাম পঞ্চায়েতের ডাঙ্গারহাটে। টাকা ফেরতের দাবিতে কয়েকশো মহিলা বিক্ষোভ দেখায়৷ খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যায় কুমারগঞ্জ থানার বিশাল পুলিশ বাহিনী। এমনকি অভিযুক্তের বাড়িতে ভাঙচুর চালানো হয়৷ সেই সময় বিক্ষোভ সামাল দিতে গিয়ে পুলিশকে বাধার মুখে পড়তে হয়। পুলিশকে লক্ষ্য করে পাটকেল ছোড়া হয় বলে অভিযোগ। সেই সময় পুলিশ লাঠিচার্জ করে।
এমনকি বেশ কয়েক রাউন্ড টিয়ার গ্যাস ফাটানো হয় বলে জানা গেছে। যদিও টিয়ার গ্যাস ফাটানোর কথা অস্বীকার করেছে পুলিশ। এদিকে লাঠি ও ইটের আঘাতে আহত হয়েছেন একাধিক পুলিশকর্মী। এদিকে এই ঘটনায় এখন পর্যন্ত পাঁচজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। যদিও পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে তিন জন পুলিশ কর্মী আহত হয়েছেন। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছেছেন জেলা পুলিশ সুপার রাহুল দে, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মহঃ নাসিম সহ বিশাল পুলিশ বাহিনী। এলাকায় উত্তেজনা থাকায় বিশাল পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। রাতভর অভিযান চালানো হবে বলে জেলা পুলিশ সুপার জানিয়েছেন।
এলাকাবাসীর অভিযোগ, একটি বেসরকারি সংস্থা গ্রামের মহিলাদের কাজ দেওয়ার নাম করে প্রায় ৪ হাজার জনের কাছ থেকে ১৫০০ টাকা নেয়। প্রত্যেক জনের কাছ থেকে নাম নথিভুক্ত করার জন্য এই টাকা নেয়। ওই সংস্থা কথা দেয় সপ্তাহে একটি করে শাড়িতে জড়ির কাজ করে দিতে পারলেই ২০০ – ৪০০ টাকা করে মজুরি দেওয়া হবে। ঘরে বসে এই উপার্জনের সুযোগ ছাড়তে চাননি অনেকেই। এলাকার প্রায় হাজার খানেক মহিলা নাম নথিভুক্ত করেন।
প্রথম কয়েক সপ্তাহে সঠিকভাবে পেমেন্ট দিলেও সোমবার থেকে হঠাৎ উধাও হয়ে যায় ওই সংস্থার লোকজন। এরপর বুধবার দুপুরে কয়েক হাজার মহিলা ডাঙ্গারহাটে অবস্থিত মর্তুজ সরকারের বাড়ির সামনে এসে উপস্থিত হন। এবং তারা তাদের টাকা ফেরতের দাবি জানাতে থাকেন। কুমারগঞ্জ থানা থেকে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করলেও বিফল হয়। এরপরে বিশাল সংখ্যক পুলিশ নিয়ে উপস্থিত হন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কিন্তু তাতেও নিয়ন্ত্রণে আনা যায়নি বিক্ষোভ। পুলিশকে লক্ষ্য করে চলে ইঁট বৃষ্টি। উত্তেজিত জনতাকে ছত্রভঙ্গ করতে কাঁদানে গ্যাসের ছুড়তে হয় পুলিশকে। তিন পুলিশকর্মী এই ঘটনায় আহত হয়েছেন। অ্যারেস্ট করা হয়েছে পাঁচজনকে।
আরও পড়ুন – মধ্যপ্রদেশে পুরসভা নির্বাচনে বিজেপির বড় জয়
জানা গেছে, এই মর্তুজ সরকারের বাড়িতে ওই সংস্থার কর্মীরা ভাড়া নিয়েছিল। যার ফলে সংস্থার লোকেদের না পেয়ে আজ তার বাড়িতেই ভাংচুর চালায় বিক্ষোভকারীরা। ঘটনাস্থলে পুলিশ সুপার রয়েছেন।
এবিষয়ে জেলা পুলিশ সুপার রাহুল দে জানিয়েছেন, কুমারগঞ্জের একটি ঘটনা ঘটেছে। সেখানে বিক্ষোভ সামাল দিতে গেলে পরে পুলিশের উপর হামলা চালানো হয়। সেই ঘটনায় পুলিশ লাঠি চার্জ করে। বিক্ষোভকারীদের আঘাতে ৩ জন পুলিশ কর্মী আহত হয়েছে। এখন পর্যন্ত পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।