বাইরনকে নিয়ে কী ভাবছে ফুরফুরা শরিফ? কি বললেন পীরজাদারা? বাইরন বিশ্বাসের তৃণমূলে যোগ দেওয়া নিয়ে রাজনৈতিক মহলে শুরু হয়েছে বিভিন্ন পর্যালোচনা। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, বাইরন বিশ্বাসের তৃণমূলে যোগ দেওয়ায় সবচেয়ে বেশি প্রভাব পড়বে সংখ্যালঘুদের ওপরেই। কিন্তু কী বলছে ফুরফুরা শরিফ? ইতিমধ্যেই বাইরন বিশ্বাসের গায়ে লেগেছে বিশ্বাসঘাতক তকমা। সাগরদিঘির একাধিক জায়গায় বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন গ্রামবাসীরা। এবার বাইরনকে ‘বিশ্বাসঘাতক’ বলল ফুরফুরা শরিফও। ফুরফুরা শরিফের পীরজাদা নাজমুস সায়াদাত সিদ্দিকি বলেন, “সাগরদিঘির মানুষ ভোট দিয়েছিল দুর্নীতির বিরুদ্ধে। তৃণমূলের নীচুতলা থেকে ওপরতলার নেতাকর্মীদের অন্যায়ের বিরুদ্ধে ভোট দিয়েছিল। বাইরন বিশ্বাস বিশ্বাসঘাতক। ওঁ পয়সা ছাড়া কিছু চেনেন না। বাইরন তৃণমূলে গেলেও সাগরদিঘির মানুষ যায়নি।”
বাংলার ভোটব্যাঙ্কে সবচেয়ে বড় ফ্যাক্টর সংখ্যালঘু ভোট। আর রাজনৈতিকভাবে মনে করা হয়, সংখ্যালঘু ভোট কোন দিকে যাবে তা এক প্রকার নির্ধারিত হয় ফুরফুরা শরিফ থেকে। সাগরদিঘির উপ নির্বাচনের ফলাফল ইঙ্গিত দিয়েছিল শাসকদলের থেকে থেকে মুখ ফেরাচ্ছে সংখ্যালঘু ভোটাররা। বগটুই কাণ্ড, আনিস হত্যা কাণ্ড এবং নওশাদ সিদ্দিকির ৪২ দিনের জেলবন্দি-এরকম একগুচ্ছ সাম্প্রতিক ইস্যু সাগরদিঘিতে তৃণমূলের পরাজয়ের অন্যতম কারণ ছিল বলে রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের একাংশের মত। সাগরদিঘির উপনির্বাচনের ফল নতুন করে ভাবাচ্ছিল শাসকদলকেও।
আর এদিকে বাংলায় বাড়তি অক্সিজেন পেয়েছিল বিরোধী দলগুলিও। বিশেষ করে বাম-কংগ্রেস। সাগরদিঘিকে মডেল করার চিন্তাভাবনা করছিলেন বিরোধীরা। কিন্তু তিন মাসের মধ্যে পুরো হিসাবটা গুলিয়ে গেল। বদলে গেল রাজনীতির সমীকরণ। বাইরনের দলবদল কংগ্রেসকে স্বাভাবিকভাবেই ধাক্কা দিয়েছে। তবে জোটের চেয়ে সবচেয়ে বেশি ধাক্কা যে খেয়েছেন সংখ্যালঘুরাই, তা দাবি করেছেন বিজেপির সর্বভারতীয় সহ সভাপতি দিলীপ ঘোষও। তিনি বলেন, “সব থেকে বড় দুঃখের বিষয় সংখ্যালঘু সমাজ এতদিন তৃণমূল কংগ্রেসকে ভোট দিয়ে এসেছে, প্রতারিত হয়েছে, বঞ্চিত হয়েছে। তাঁরাই তৃণমূলের বিরুদ্ধে ভোট দিয়ে ওঁকে জিতিয়েছিলেন। তাঁরা এখন সব থেকে বেশি হতাশ।”
আরও পড়ুন – পায়ের অবস্থা ভাল নেই পার্থর, বললেন ‘সেটাই দুর্ভাগ্যের, প্রদীপের নীচেই অন্ধকার’,
ফুরফুরা শরিফের বর্ষীয়ান পীরজাদা ইব্রাহিম সিদ্দিকি বলেন, “বাইরন বিশ্বাস গদ্দার, বেইমান। সংখ্যালঘু মানুষের সঙ্গে গদ্দারি করেছেন, দ্বিচারিতা করেছেন। আবার ভোট হলে হেরে যাবে গদ্দার বাইরন বিশ্বাস।” তবে তিনি এও বলেছেন, “এতে তৃণমূলেরই বেশি ক্ষতি হবে। বাম-কংগ্রেস আরও মজবুত হবে। টাকা দিয়ে বিধায়ক কেনা তৃণমূলের পলিসি। তৃণমূল দুর্নীতিতে ভরাডুবি হয়ে আছে। বাইরন বিক্রি হলেও, মানুষ ওদের সঙ্গে যাবে না।”