ঘণ্টা দুয়েক বৈঠক! তার পরেই রাজ্য নিয়ে কড়া বিবৃতি জারি করলেন রাজ্যপাল , জগদীপ ধনখড় রাজ্যপাল থাকার সময় রাজ্য প্রশাসনের সঙ্গে তাঁর সংঘাত ছিল প্রতিদিনের ঘটনা। কিন্তু আনন্দ বোসের সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রীর সম্পর্ক যথেষ্ট ভাল।বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারের সঙ্গে ঘণ্টাদু’য়েক বৈঠকের পরেই রাজভবনের তরফে ‘কড়া বিবৃতি’ জারি করলেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। শনিবার সকালে রাজভবনে যান বালুরঘাটের সাংসদ সুকান্ত। প্রায় দু’ঘণ্টা একান্তে তাঁর বৈঠক হয় রাজ্যপালের সঙ্গে। একটি অভিযোগপত্রও রাজ্যপালের হাতে তুলে দেন তিনি। তার পর বিকালেই রাজভবন থেকে সেই সাক্ষাতের কথা উল্লেখ করে একটি বিবৃতি জারি করা হয়েছে। সেই বিবৃতিতেই আনন্দ বোস রাজ্যের বেশ কয়েকটি বিষয় নিয়ে ‘কড়া অবস্থান’ ব্যক্ত করেছেন।
তার আগে রাজ্যপালের সঙ্গে সুকান্তের বৈঠক নিয়ে তৃণমূল মুখপাত্র কুণাল ঘোষ মন্তব্য করেছিলেন। তিনি দাবি করেছিলেন, বিধানসভায় বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর নেতৃত্বে বিজেপির বিধায়কেরা যে ভাবে রাজ্যপালকে ঘিরে ধরে বিক্ষোভ দেখিয়েছেন, সুকান্ত সেই বিষয়েই ক্ষমা চাইতে রাজভবনে গিয়েছিলেন। রাজ্যপালের ওই বিবৃতির পর বিরোধী সিপিএমের নেতা সুজন চক্রবর্তী বলেছেন, ‘‘এই রাজ্যপাল একদিন মুখ্যমন্ত্রীকে সর্বপল্লি রাধাকৃষ্ণনের সঙ্গে তুলনা করেন! তার পরে আবার রাজ্যের বিষয়ে কড়া বিবৃতি দেন। উনি তো এই বাবে নিজের পদটাকেই মর্যাদাহীন করে ফেলছেন। এক একদিন এক এক রকমের কথা বলছেন!’’
এ ছাড়া লোকায়ুক্ত নিয়োগ নিয়েও বিজেপি সভাপতি তাঁদের আপত্তির কথা রাজ্যপাল আনন্দ বোসকে জানিয়েছিলেন। সে বিষয়ে রাজ্যপাল সরকারপক্ষকে একটি অধ্যাদেশ (অর্ডিন্যান্স) আনার পরামর্শ দিয়েছেন। রাজ্য রাজনীতির কারবারিরা বিজেপি সভাপতি সুকান্তের সঙ্গে রাজ্যপালের একান্ত বৈঠককে যথেষ্ট গুরুত্ব দিয়েই দেখছেন। কারণ, সুকান্তের দাবিপত্র হাতে পাওয়ার পরেই রাজ্যপাল রাজ্যের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে নিজের ‘অবস্থান’ জানিয়েছেন।
আরও পড়ুন – নেপালের হাইকোর্ট জামিনে মুক্তি!ধর্ষণে অভিযুক্ত প্রাক্তন অধিনায়ককে দলে ফেরাল নেপাল
শনিবার সুকান্ত রাজভবনে যান রাজ্যপালের সঙ্গে দেখা করতে। সে অর্থে এই প্রথম বিজেপির কোনও নেতা রাজ্যপালের সঙ্গে একান্ত বৈঠক করলেন। তার পরেই রাজ্যপাল ‘কঠোর’ বিবৃতি জারি করেছেন। যা ‘ইঙ্গিতপূর্ণ’। ঘটনাচক্রে, শনিবার রাজ্যপাল যখন ‘কড়া’ বিবৃতি জারি করছেন, তার কিছুক্ষণের মধ্যেই কলকাতায় আসছেন বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নড্ডা। তার সঙ্গে রাতে শুভেন্দু-সুকান্তের বৈঠক হওয়ার কথা। ওই বৈঠকেও রাজ্যপালকে নিয়ে কথা হতে পারে বলে বিজেপি সূত্রের খবর। এখন দেখার, রাজ্যপালের বিবৃতির পরে রাজ্য সরকার তথা মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে রাজভবনের সম্পর্ক কেমন দাঁড়ায়।