‘পর্যাপ্ত পুলিশ আছে, কেন্দ্রীয় বাহিনী কি সব করবে?’, পঞ্চায়েত মামলায় সওয়াল রাজ্যের। হাইকোর্ট নির্দেশ দেওয়া সত্ত্বেও কোনও জেলায় কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করেনি রাজ্য নির্বাচন কমিশন। স্পর্শকাতর জেলা নিয়ে আদালত যে নির্দেশ দিয়েছিল, তা সংশোধনেরও আর্জি জানিয়েছে কমিশন ও রাজ্য। সেই আর্জি শুনে রীতিমতো ক্ষুব্ধ হয়েছেন প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানম। প্রয়োজনে সব জেলায় কেন্দ্রীয় বাহিনী দেওয়া হবে বলেও উল্লেখ করেছেন তিনি। প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানম ও বিচারপতি উদয় কুমারের ডিভিশন বেঞ্চে চলছে সেই মামলার শুনানি।
রাজ্যের তরফে আইনজীবী কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘অনেক রিসার্চ করে জনস্বার্থ মামলা করা উচিৎ। শুধুমাত্র একটি জায়গার কথা উল্লেখ করে শুভেন্দু অধিকারী অভিযোগ করছেন।’ তিনি দাবি করেন, মিডিয়া ট্রায়াল চলছে। মনোনয়নের সংখ্যা উল্লেখ করে আইনজীনী বলেন, ‘দেখুন বিরোধীরা প্রচুর সংখ্যায় মনোনয়ন দিতে পেরেছেন। ভাঙড় ও কাশীপুরের ঘটনায় ১৩ টি মামলা রুজু হয়েছে। ৫২ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।’ তাঁর প্রশ্ন, রাজ্যের কি নিজের নাগরিকদের সুরক্ষা দেওয়ার আত্মবিশ্বাস থাকবে না? কেন্দ্রীয় বাহিনী সব করবে? কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্য়ায় বলেন, রাজ্য প্রস্তুত কমিশনকে সাহায্য করতে। পর্যাপ্ত পুলিশ আছে।’
কংগ্রেসের তরফে আইনজীবী কৌস্তুভ বাগচি বলেন, আদালত নির্দেশ দেওয়ার পরও জেলায় জেলায় সন্ত্রাসের ছবি। বিরোধী দলের একজনের মৃত্যুও হয়েছে।
বিজেপির পক্ষ থেকে আইনজীবী সৌম্য মজুমদার বলেন, আদালতের নির্দেশ কার্যকর করা হোক। রাজ্য নির্বাচন কমিশনকে এর আগে বিধাননগর পুরসভার জন্য প্রয়োজনে কেন্দ্রীয় বাহিনীর কথা বলা হয়েছিল। যেখানে পুলিশ কম থাকবে সেখানেই কেন্দ্রীয় বাহিনী দেওয়ার কথা। আজও বিভিন্ন জায়গা থেকে অশান্তির খবর আসছে।
নির্বাচন কমিশনের তরফে আইনজীবী জয়ন্ত মিত্র বলেন, “আমরা এই আদালতের কথা শুনতে প্রস্তুত। আমরা উচ্চ আদালতে যাব নাকি শুধু সংশোধন চাইব, সেটা পরে জানাচ্ছি।”
কমিশনকে কড়া বার্তা দিয়ে প্রধান বিচারপতি শিবজ্ঞানম বলেন, “আপনারা যদি মনে করেন আমাদের রায় মানবেন না, তাহলে আমরা চুপ করে থাকব না। কমিশন চুপ করে বসে থাকলে হবে না। আপনাদের হয়ত মনে হচ্ছে না যে ঘটনার তীব্রতা অনেক বেশি। আমরা প্রার্থীদের নিয়ে চিন্তিত নই। আমরা ভোটারদের নিয়ে চিন্তিত। কমিশন স্বাধীন সংস্থা বলে আমরা কোনও হস্তক্ষেপ করিনি।”
আরও পড়ুন – অতীতের ভোটে মৃত্যুর পরিসংখ্যান তুলে ধরলেন মমতা, বললেন ‘আমাদের দল জড়িত নয়’,
প্রধান বিচারপতি উল্লেখ করেন, শিক্ষাবন্ধুদের গতকালই অনুমতি দেওয়া হয়েছে ভোটে লড়ার জন্য। তাঁরা কবে মনোনয়ন দেবেন? কমিশনের উত্তর, আমাদের কাছে তথ্য আছে তাঁরা ইতিমধ্যেই মনোনয়ন পেশ করে দিয়েছেন। উত্তর দিনাজপুর, চোপড়ার ঘটনা উল্লেখ করা হয়েছে শুনানিতে। বৃহস্পতিবারই গুলিতে ২ জনের মৃত্যু হয়েছে চোপড়ায়।