ভাল নেই রাজ্যের অর্থ ব্যবস্থা, কাঁধে পাহাড় প্রমাণ ঋণের বোঝা, বামেদের টেনে এনে উত্তর দিলেন মমতা, বাম আমলের থেকে অনেকটাই ঋণ বাড়িয়ে ফেলেছে বর্তমান রাজ্য সরকার। প্রায়শই এই অভিযোগ শোনা যায় বিরোধীদের মুখে। যদিও মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দাবি, সবই অপ্রচার। ভুল তথ্য প্রচার করা হচ্ছে। সবই ভিত্তিহীন। কিন্তু, আদপে রাজ্যের কাঁধে রয়েছে কত ঋণের বোঝা? মুখ্যসচিবকে পাশে বসিয়ে নবান্নে সাংবাদিক বৈঠকে সে উত্তর দিয়ে দিলেন খোদ মমতাই। এদিন সাংবাদিক বৈঠকের শুরুতে বিরোধীদের দিকে নিশানা করে মমতাকে বলতে শোনা যায়, “অনেকে বলেন রাজ্য সরকারের ৭ লক্ষ কোটি টাকা ঋণ হয়ে গিয়েছে। এগুলো সবই বাজে কথা। মুখ্যসচিব নিজে অর্থ সচিব হিসাবে কাজ করেছেন। উনি আরও বিশদে বলতে পারবেন।” কিন্তু কী বলছেন মুখ্যসচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদী?
ব্যাখ্যা দেন মমতা নিজেও। ফের একবার নিশানা করেন বামেদের। বামেদের বোঝা বইতে বইতেই রাজ্য আজ এই জায়গায় এসে দাঁড়িয়েছে বলে মত তাঁর। বলেন, “আপনি যদি কারও কাছ থেকে লোন নেন সেই লোন আপনি যতক্ষণ না শোধ করছেন ততক্ষণ তা লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ে। কিন্তু, যারা নতুন রাজ্য যেমন অন্ধ্রপ্রদেশ, তাদের এই সমস্যা নেই। তেলঙ্গানার নেই। তাদের এই ঋণের বোঝা বইতে হয় না। কিন্তু, আমাদের লিগাসি বহন করতে হয়েছে। সিপিএমের আমলে ওরা স্মল সেভিংস থেকেও লোন নিয়েছিল। তখন কী অবস্থা ছিল আর এখন কী অবস্থা হয়েছে সেটা মুখ্য সচিব ভাল জানেন। কারণ উনি অর্থ সচিব ছিলেন।”
আরও পড়ুন – ‘ঋণ নিয়েছিলাম, সুদ সহ ফেরত দিয়েছি’ নুসরতের ‘সাফাই’-এর পর চেক নম্বর প্রকাশ…
এদিনের সাংবাদিক বৈঠকে রাজ্যের ঋণ খতিয়ান দিতে শুরুতেই বাম আমলের প্রসঙ্গ তুলতে দেখা যায় মুখ্যসচিবকে। একইসঙ্গে দেন বর্তমান ঋণের খতিয়ানও। বলেন, “২০১১ সালে বাংলার কাঁধে ২ লক্ষ কোটি টাকা ঋণের বোঝা ছিল। এখন সেই ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৫.৮৬ লক্ষ কোটি।” কিসের ভিত্তিতে চলে এই হিসাবনিকেশ, এদিন সেই তথ্যও তুলে ধরতে দেখা যায় তাঁকে। বলেন, “এই ঋণ হিসাবের অনেকটা নির্ভর করে ডেট টু জিডিপি রেটিওতে। আগে এটা ছিল ৪০ শতাংশ। আমরা এখন এটা নামিয়ে এনেছি ৩৩ শতাংশে। গত দু বছরে কোভিডের কারণে এই ডেট টু জিডিপি অনেকটা বেড়েছে। কিন্তু, একসময় এটা আমরা ৩২ শতাংশেও নামিয়ে এনেছিলাম। এখন ৩৩ শতাংশের আশেপাশে রয়েছে তা।” যদিও তাঁর দাবি, অন্য অনেক রাজ্যের থেকে বাংলা অনেক ভাল অবস্থায় রয়েছে। এ প্রসঙ্গে একগুচ্ছ তথ্য তুলে ধরে তিনি বলেন, “এই ক্ষেত্রে বাংলা খুবই ভাল কাজ করছে। অনেক রাজ্য আছে যেখানে এই ডেট টু জিডিপি রেটিও অনেকটা বেড়ে গিয়েছে। আমরা সেটা কমাতে পেরেছি।”