
যে পুলিশের বিরুদ্ধে এক এক সময়ে সাধারন মানুষের ক্ষোভ সেই পুলিশের মানবিকতার (Humanitarian police) ছবি ধরা পড়ল শহরে। বুধবার বিকেল সাড়ে চারটে। সুদূর মুম্বই থেকে লালবাজার কন্ট্রোল রুমে ফোন করেন মুম্বাই প্রবাসী সোনালী কোচার। জানান, কলকাতার অ্যালবার্ট রোডের ইসকন মন্দিরের ভোজনালয়ের কাছে তাঁর এক পরিচিত ব্যক্তি অসুস্থ হয়ে পড়েছেন, কলকাতা পুলিশ কি কোনোরকম সহযোগিতা করতে পারে?
অসুস্থ ব্যক্তির নাম অমিত মালিক, স্নায়ুরোগে ভুগছেন তিনি। বছর পঁয়তাল্লিশের অমিতের সঙ্গী তাঁর মা সরোজ মালিকের বয়স পঁচাত্তর, দুজনেই মুম্বই নিবাসী। অমিত ও তাঁর মায়ের ছবি এবং সরোজ মালিকের ফোন নম্বর সোনালী কোচারের কাছ থেকে নেন কর্তব্যরত পুলিশকর্মীরা (Humanitarian police) ।
খবর দেওযা হয় শেক্সপিয়ার সরণী থানার ওসি, জয়সূর্য মুখার্জির কাছে। পাঠানো হয় দুজনের ছবি এবং সরোজের ফোন নম্বর। ওসির নির্দেশে শেক্সপিয়ার সরণী থানার সার্জেন্ট সন্দীপ রায় দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছান। অমিতবাবুর অবস্থা আশঙ্কাজনক বুঝে কলকাতা পুলিশের ‘কর্মা’ অ্যাম্বুলেন্সে করে কাছেই সরকারি হাসপাতালে নিয়ে যান সন্দীপ। বাঙুর ইনস্টিটিউট অফ নিউরোসায়েন্সেস-এর সাইক্রিয়াটিস্টকেও দেখানো হয়।
আর ও পড়ুন ভবানীপুরে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Mamata Banerjee) আসনে উপনির্বাচন কবে?
ইতিমধ্যে সরোজ মালিক যোগাযোগ করেন তাঁর পরিচিত এক ডাক্তারের সঙ্গে, যিনি কৈখালির এক নার্সিং হোমের সঙ্গে যুক্ত, এবং অমিতের অসুখের চিকিৎসাও করেছেন এর আগে। সরোজ দেবীর ইচ্ছা অনুযায়ী মা, পুত্র ও শেক্সপিয়ার সরণী থানার অ্যাসিস্টেন্ট সাব ইনসপেক্টর (Humanitarian police) বরুণ মুখার্জিকে নিয়ে ‘কর্মা’ রওনা দেয় সেই নার্সিং হোমের উদ্দেশ্যে।
রাখিপূর্ণিমা উপলক্ষ্যে বর্ধমানে দাদার বাড়িতে গিয়েছিলেন সপুত্র সরোজ দেবী। ২৪ অগাস্ট রাতে কলকাতার মারকুইস স্ট্রিটের এক হোটেলে ওঠেন। ২৫ তারিখে মুম্বই ফিরে যাওয়ার কথা ছিল, কিন্তু বাদ সাধে ছেলের অসুস্থতা। ফলে মিস হয় সকালের ট্রেন। সাহায্যের আশায় প্রথমে গুরুদ্বার, পরে ইসকন মন্দিরে যান তাঁরা। আর সেখানেই ঘটে বিপত্তি।
নার্সিং হোমের ডাক্তার অমিতবাবুর অবস্থা স্থিতিশীল জানালে সরোজ দেবী এবং অমিতকে পৌঁছে দেওয়া হয় লেকটাউনে তাঁদের এক আত্মীয়ের বাড়ি। আমাদের শহরের অতিথিদের জন্য রইল শুভেচ্ছা।