সোশ্যাল মিডিয়া থেকে আয়ের ক্ষেত্রে বেনিয়ম? আয়কর দফতরের স্ক্যানারে এবার সোশ্যাল মিডিয়া ইনফ্লুয়েন্সাররা। একাধিক ইউটিউবার এবং কনটেন্ট ক্রিয়েটরের বিরুদ্ধে তদন্তে আয়কর দফতর। বেশ কিছু সোশ্য়াল মিডিয়া ইনফ্লুয়েন্সার এবং কনটেন্ট ক্রিয়েটরের বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করল আয়কর দফতর। জানা গিয়েছে, ইউটিউব এবং ইনস্টাগ্রামে আয় এবং লাভ নিয়ে একাধিক ভুয়ো তথ্য় দিয়েছেন এই অভিযুক্তরা। সেই মর্মেই এই কড়া পদক্ষেপ বলে মনে করা হচ্ছে।
সূত্রের খবর, সম্প্রতি আয়কর দফতরের পক্ষ থেকে একটি তথ্য বিশ্লেষণ সংক্রান্ত তদন্ত করা হয়। এই তদন্তের উদ্দেশ্য ছিল, অভিযুক্ত সোশ্যাল মিডিয়া ইনফ্লুয়েন্সারের সঠিক আয় সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য নেওয়া। একাধিক এমন ইউটিউবারের বিরুদ্ধে আয় বহির্ভূত অর্থের অভিযোগ ওঠে। সোশ্যাল মিডিয়ায় কনটেন্ট থেকে পাওয়া আয়ের সঙ্গে মোট সম্পত্তির সামঞ্জস্য না থাকায় তাঁদের উপর সন্দেহ দৃঢ় হয়। এমনকী, তাঁদের মধ্যে অধিকাংশই আয়কর জমা করেননি বলেও অভিযোগ উঠেছে। কেবলমাত্র আয়কর নিয়ে সঠিক ধারণা না থাকার কারণেই কি এই তথ্য বিকৃত করা হয়েছে? এই নিয়ে উঠছে প্রশ্ন।
সোশ্যাল মিডিয়া ইনফ্লুয়েন্সাররা বর্তমানে সমাজে ওপিনিয়ন লিডার হিসেবেই চিহ্নিত হন। সাধারণত কোনও প্রোডাক্ট ক্রয় করা, পরিষেবা কিংবা ব্র্যান্ড অথবা অভিজ্ঞতার ক্ষেত্রে এই ইনফ্লুয়েন্সাররা সমাজের বিরাট অংশের মানুষকে অনুপ্রাণিত করে থাকেন। এ ক্ষেত্রে ইউটিউব সহ অন্য সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মগুলিতে তাঁদের পোস্ট করা কনটেন্টের জোরেই নেটিজেনদের সঙ্গে একটা দৃঢ় সম্পর্ক তৈরি হয় তাঁদের।
জানা গিয়েছে, সমীক্ষা চালানোর সময় প্রথমটায় কেরালার বাসিন্দা এই সোশ্যাল মিডিয়া ইনফ্লুয়েন্সারদের একপ্রস্থ জিজ্ঞাসাবাদও করা হয়। তাঁরাও তদন্তে সহযোগিতা করেছেন বলেই খবর। যদিও পরবর্তীতে তাঁদের আয়কর জমা করার সঠিক তথ্য জানান দেওয়ার নির্দেশ দিয়ে একটি নোটিশও পাঠানো হয়েছে সংশ্লিষ্ট দফতরের তরফে।
কেবলমাত্র কেরালাই নয়, দেশের অন্য একাধিক রাজ্যেও এ হেন সোশ্যাল মিডিয়া ইনফ্লুয়েন্সারদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে আয়কর দফতর। একাধিক বড় এবং জনপ্রিয় তারকার বিরুদ্ধেও কড়া পদক্ষেপ গ্রহণ করা হতে পারে বলেও সূত্র মারফত খবর। তাঁদের সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাক্টিভিটির উপরও কড়া নজর রাখা হচ্ছে।
ইতিমধ্যেই স্ক্যানারে থাকা সোশ্যাল মিডিয়া ইনফ্লুয়েন্সারদের বিরুদ্ধে একাধিক সন্দেহজনক তথ্য এসেছে আয়কর দফতরের হাতে। যে সমস্ত বিজ্ঞাপনী ব্র্যান্ডে তাঁরা মুখ দেখিয়েছেন, কী কী ভাবে সেই সংস্থাগুলির সঙ্গে আর্থিক লেনদেন হয়েছে, ডেবিট এবং ক্রেডিট কার্ড কোথায় কী ভাবে ব্যবহৃত হয়েছে এবং তাঁদের সংস্থাগুলির সঙ্গে করা চুক্তি খতিয়ে দেখেছে আয়কর দফতর। ইউটিউব এবং ইনস্টাগ্রামে কনটেন্ট তৈরি করার জন্য যে চুক্তি স্বাক্ষর করেছেন এই ইনফ্লুয়েন্সাররা, তাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে আধিকারিকদের তরফে।
নোটিশ জারি করার আগে সোশ্যাল মিডিয়া ইনফ্লুয়েন্সারদের TDS তথ্য খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলেও আয়কর দফতর সূত্রে খবর। সোশ্যাল মিডিয়ায় কনটেন্ট ক্রিয়েটররা সঠিকভাবে আয়কর জমা করেছেন কি না, আয়ের সঙ্গে সম্পত্তির সামঞ্জস্য রয়েছে কি না, কতটা স্বচ্ছতা বজায় রাখছেন এই ইউটিউবাররা, সেটাই তদন্তে খতিয়ে দেখা হবে বলে জানা গিয়েছে আয়কর দফতর সূত্রে।
আরও পড়ুন – মদের বোতল নিয়েই করা যাবে মেট্রো যাত্রা!
উল্লেখ্য, দিন দশেক আগে কেরালায় ১০ ইউটিউবার এবং সোশ্যাল মিডিয়া ইনফ্লুয়েন্সারের বিরুদ্ধে ভুয়ো তথ্য় দেওয়ার অভিযোগে তল্লাশি শুরু করেছিল আয়কর দফতর। সেই তালিকায় বেশিরভাগই ছিলেন তরুণ ইউটিউবার এবং জনপ্রিয় তারকা। তবে কি এবার সোশ্যাল মিডিয়া থেকে আয়ের ক্ষেত্রে বেনিয়ম চলছে? আয়কর দফতরের স্ক্যানারে ইউটিউবাররা আসতেই দেশজুড়ে নানা চর্চা শুরু হয়েছে।