সস্তা হবে গম? বড় পদক্ষেপের ভাবনা মোদী সরকারে। বছরের শেষে বেশ কয়েকটি রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচন। আর পরের বছর লোকসভা নির্বাচন। তার আগে বিরোধীদের অন্যতম অস্ত্র হয়ে উঠেছে মূল্যবৃদ্ধি। বিরোধীদের এই আক্রমণকে ভোঁতা করতে খাদ্যপণ্যের সরবরাহ বৃদ্ধি এবং খাদ্যপণ্যে মূল্যবৃদ্ধি নিয়ন্ত্রণের জন্য বেশ কিছু পদক্ষেপ নিতে চলেছে সরকার। তারই অংশ হিসেবে রাশিয়া থেকে ভর্তুকি মূল্যে গম আমদানির কথা ভাবছে মোদী সরকার। সরকারের এক সূত্রকে উদ্ধৃত করে সংবাদ সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, শুধু রাশিয়া নয়, বিভিন্ন দেশের সরকারি ও বেসরকারি সংস্থা থেকে চুক্তির মাধ্যমে খাদ্যপণ্য আমদানির সম্ভাবনা খতিয়ে দেখছে সরকার। এই বিষয়ে এখনও চূড়ান্ত কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি। তবে আলোচনা চলছে। সূত্রের দাবি, কয়েক সপ্তাহ পর এই বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হতে পারে। গত মাসেই, কেন্দ্রীয় খাদ্য মন্ত্রকের এক কর্তা জানিয়েছিলেন, রাশিয়া থেকে গম আমদানির কোনও প্রস্তাব পায়নি ভারত।
গত বছরও, গমের ফলন কম হয়েছিল। মূল্যবৃদ্ধি নিয়ন্ত্রণে গম রপ্তানি নিষিদ্ধ করেছিল ভারত সরকার। চলতি বছরেরও দমের ফলন সরকারি অনুমানের তুলনায় কমপক্ষে ১০ শতাংশ কম হয়েছে। গত কয়েক বছরে ভারতকে কূটনৈতিক চুক্তির মাধ্যমে গম আমদানি করতে দেখা যায়নি। ২০১৭ সালে শেষবার ভারত বিভিন্ন বেসরকারি আন্তর্জাতিক সংস্থা থেকে ৫ কোটি ৩০ লক্ষ মেট্রিক টন গম আমদানি করেছিল। তবে, রাশিয়া থেকে গম আমদানি নিয়ে ফের আপত্তি তুলতে পারে পশ্চিমী দুনিয়া। গত বছর, ইউক্রেন যুদ্ধ শুরুর পর থেকে রাশিয়ার সঙ্গে ভারতের বাণিজ্যিক সম্পর্ক বহুগুণে বেড়েছে। মূলত, রাশিয়া থেকে সস্তায় জ্বালানি কেনার কারণে, বর্তমানে ভারতের দ্বিতীয় বৃহত্তম পণ্য বিক্রেতায় পরিণত হয়েছে মস্কো। ইউরোপ-আমেরিকার বাণিজ্য নিষেধাজ্ঞার প্রেক্ষিতে, রাশিয়াও প্রচলিত বাজার মূল্যে ভর্তুকি দিয়ে ভারতকে পণ্য বিক্রয় করতে আগ্রহ দেখিয়েছে। নয়া দিল্লিও স্পষ্ট জানিয়েছে, রাশিয়া থেকে খাদ্য পণ্য রফতানির উপর কোনও বিধিনিষেধ নেই। বর্তমানে, রাশিয়া থেকে সূর্যমুখী তেলও আমদানি করছে ভারত।
আরও পড়ুন – পার্থর নাকতলার বাড়িতে চাকরি বিক্রির অফিস! বিস্ফোরক দাবি সিবিআইয়ের
সীমিত সরবরাহের কারণে পাইকারি বাজারে দুই মাসে গমের দাম প্রায় ১০ শতাংশ বেড়েছে। গত সাত মাসের মধ্যে বর্তমানে গমের দাম সবথেকে বেশি যাচ্ছে। এই মূল্যবৃদ্ধির মূল কারণ, চাহিদা অনুযায়ী জোগানের অভাব। ১ অগস্টের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ওই সময় সরকারি গুদামে গমের মজুদ ছিল ২৮ কোটি ৩০ লক্ষ টন। গত ১০ বছরের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, সরকারি গুদামে গড়ে যত গম মজুত থাকে, তার তুলনায় ২০ শতাংশ কম ছিল গমের মজুত। সরকারি সূত্রে আরও জানা গিয়েছে, ৩০ থেকে ৪০ লক্ষ মেট্রিক টন গম আমদানি করলেই ভারতের চাহিদার ঘাটতি পূরণ করা সম্ভব। তবে গমের দাম উল্লেখযোগ্য পরিমাণে কমাতে, রাশিয়া থেকে ৮০-৯০ লক্ষ মেট্রিক টন গম আমদানির কথা ভাবছে নয়া দিল্লি। রাশিয়া থেকে গম কেনার ক্ষেত্রে টন প্রতি ২৫ থেকে ৪০ মার্কিন ডলার পর্যন্ত ছাড় পেতে পারে ভারত, এমনই আশা করা হচ্ছে।