কমলালেবুর গন্ধযুক্ত নতুন কুলের চাষ নজর কেড়লেন জীতেন । ধান, গম, সর্ষে, ভুট্টা, পাট, আলু বা সবজি চাষ করে কৃষক যখন মুনাফা তুলতে মাথার ঘাম পায়ে ফেলছে, তখন অল্প জমিতে আপেল কুল চাষ করে গতবছরই তাক লাগিয়েছিলেন কালিয়াগঞ্জ ব্লকের বাঘন, টুঙ্গাইল বিলপাড়ার বাসিন্দা জিতেন বর্মন। এবার কমলালেবুর গন্ধযুক্ত নতুন কুলের চাষ নজর কেড়েছেন জীতেন বাবু।
এই মূহুর্তে নিজের হাতে গ্রাফটিং করে তৈরি করেছেন ৯০ টি কুল গাছ। এরপর নিজের ১১ কাঠা জমিতে সেই গাছ লাগিয়েছেন গত ৩৪ মাস আগে। গতবছর ৭০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করে ব্যাপক লাভ হয়েছিল। এবার তিনগুন ফলন বেশী হয়েছে। ফলে লাভের আশায় বুক বেঁধেছেন জিতেন বর্মনের পরিবার। চাষের জমিতে কাজের পর, বাড়তি সময় টুকু এই কুল গাছের যত্ন নেন তিনি। কিন্তু এবছর ফলন অত্যাধিক পরিমাণে হওয়ায় গাছের ডাল ভেঙে পড়ার আশঙ্কা। তাই নিয়মিত পরিচর্যা করতে হচ্ছে। এ ছাড়াও পাখিদের দূরে রাখতে গোটা বাগানকে ঘিরেছেন জাল দিয়ে।
লাল সবুজ মেশানো আপেল কুলের বাগান ঘোরাতে ঘোরাতে জিতেন বর্মন বলেন, এই কুল চাষের গবেষণাগার তাঁর মস্তিষ্ক। বসন্তের অন্যতম ফল কুলের ওপর। তাই, চিরাচরিত কুলের স্বাদ ছেড়ে সরস্বতী পুজার মরসুমে কাশ্মীরি আপেল ও কমলার স্বাদ কুলের মধ্য থেকে পেতে এই পদ্ধতি ব্যবহার করেছি।এই খবরে জেজায় খুশি রায়গঞ্জ, কালিয়াগঞ্জের বাসিন্দারা। এদিন জীতেন বাবুর বাড়ির পেছনে গিয়ে দেখা গেল, কুল গাছে ফলনও এসেছে। পাইকারদের আসা যাওয়াও শুরু হয়ে গিয়েছে। জীতেন বাবুর কথায়, ‘ এক একটি কুল গাছ থেকে এবারে প্রায় ২৫ কেজি করে কুল উৎপাদন করতে পেরেছি। এখন পাইকারি ভাবে বাজার মূল্য প্রায় ৮০ টাকা প্রতি কেজি দাম যাচ্ছে। আশাকরি, আগামীতে দাম কিছুটা কমবে।
আরও পড়ুন – কলকাতায় আরএসএস প্রধান মোহন ভাগবত
‘ একটি মরসুমে প্রায় ৫০ হাজার টাকা লাভের আশা করছেন জীতেন বর্মন। তিনি জানান, রায়গঞ্জের বিভিন্ন নার্সারি থেকেও তাঁর ডাক এসেছে। জীতেন বর্মনও চান তাঁর এই মিশ্র ফলনের পদ্ধতি আগামী দিনে রাজ্যে ছড়িয়ে পরুক।
এই বাগান করতে এখনও পর্যন্ত সরকারি দপ্তর থেকে কোনো সহযোগিতা না পাওয়া গেলেও, এই রকম আপেল ও কমলা কুলের বাগান আর কেউ করতে চাইলে, সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেবেন বলে জানালেন জিতেন বাবু। তার দাবি, এই বাগান থেকে আমি প্রচুর লাভ করছি। যদি কেউ এখানে এসে গাছ তৈরি করে বাগান বসাতে চায়, তাহলে আমি যতটা পারব, সহয়তা করব। যদিও জেলা উদ্যান পালন আধিকারিক সুফল মন্ডল এই আপেল ও কমলা কুল চাষের খবর শুনে, আগামীতে সরকারি সহযোগিতা করবেন বলে জানালেন।