কালীঘাটের কাকুর দু’টি বাড়িতে তল্লাশি অভিযান সিবিআইয়ের,কী বাজেয়াপ্ত করল সিবিআই? নিয়োগ দুর্নীতির তদন্তে সুজয়কৃষ্ণ ভদ্র ওরফে কালীঘাটের কাকুর দু’টি বাড়িতে টানা তল্লাশি শেষ হয়েছে সিবিআইয়ের। তল্লাশি শেষ হওয়ার পর সাংবাদিকদের সুজয় জানিয়েছেন, তাঁর বাড়ি থেকে নগদ টাকা, মিউনিসিপ্যাল সার্ভিস কমিশনের একটি অ্যাডমিট কার্ড এবং তাঁর দু’টি মোবাইল ফোন বাজেয়াপ্ত করে নিয়ে গিয়েছে সিবিআই। তবে তাঁকে হাজিরা দেওয়ার কোনও কথা সিবিআই আধিকারিকরা জানাননি বলেও দাবি করেছেন সুজয়।
সুজয়ের দু’টি বাড়িতে বৃহস্পতিবার তল্লাশি চালায় সিবিআই। সে সম্পর্কে সুজয় জানান, অপর বাড়িটি তাঁর পৈত্রিক সূত্রে পাওয়া। সেখানে তাঁর দুই দিদি থাকেন। সেখানে একটি ড্রয়ার সিবিআই আধিকারিকরা খুলতে পারছিলেন না। সে জন্য সুজয়ের স্ত্রী গিয়ে ওই ড্রয়ার খুলে দেন। ‘কালীঘাটের কাকু’র আরও দাবি, তাঁকে সিবিআই আর তলব করেনি।
স্থানীয় সূত্রের খবর, ব্যারাকপুর পুরসভার ৭ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর জয়দীপ দাস এবং বেহালার ব্যবসায়ী সন্তু গঙ্গোপাধ্যায়ের বাড়িতেও তল্লাশি শেষ করে বেরিয়ে গিয়েছেন সিবিআইয়ের তদন্তকারীরা।
বৃহস্পতিবার সকাল ৯টার কিছু পরে বেহালায় সুজয়ের বাড়িতে হানা দেয় সিবিআই। দুপুর ২টো নাগাদ তল্লাশি শেষে বেরিয়ে যান সিবিআই আধিকারিকরা। প্রসঙ্গত, সুজয় ওরফে ‘কালীঘাটের কাকু’র কথা প্রথম শোনা যায় নিয়োগ দুর্নীতিতে গ্রেফতার হওয়া তাপস মণ্ডলের মুখে। কেন্দ্রীয় বাহিনী দিয়ে বাড়ি ঘিরে শুরু হয় তল্লাশি। ম্যারাথন তল্লাশি চালানোর পর বাড়ি ছেড়ে বেরিয়ে যান সিবিআই আধিকারিকরা। তার পরেই সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাব দেন ‘কালীঘাটের কাকু’। তাঁর দাবি, ‘‘পুরো ব্যাপারটা অসম্ভব ভাল পরিবেশে দারুণ ভাবে হয়েছে।’’
তিনি বলেন, ‘‘ওরা আমাকে একটি সার্চ ওয়ারেন্ট দেখালেন। আমি বললাম, করুন তল্লাশি…। একটা অ্যাডমিট কার্ড নিয়েছে, দুটো মোবাইল ফোন নিয়েছে আর কিছু টাকা নিয়েছে।’’
সুজয়ের দাবি, বাড়িতে শ্যালিকার ছেলের মিউনিসিপ্যাল সার্ভিস কমিশনের একটি অ্যাডমিট কার্ড ছিল। সেটা সিবিআই নিয়ে গিয়েছে। এ প্রসঙ্গে সুজয় বলেন, ‘‘আমার শালির ছেলে, এই ফকির পাড়াতেই থাকে। পরীক্ষা দিয়েছে, যে রকম হয়… শালির ছেলে।’’
আরও পড়ুন – সিবিআই নজরে পার্থ-ঘনিষ্ঠ ‘ভজা’, কে এই ভজা? রাজনীতিতেই বা আগমন কী ভাবে?
আর নগদ বাজেয়াপ্ত সম্পর্কে সুজয় বলেন, ‘‘টাকা সিজ়ার করেছে। সঙ্গে ব্যাঙ্কের নথিও দিয়েছি। টাকাগুলি আমি ব্যাঙ্ক থেকে তুলে এনেছি। আমার এক দিদি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি। খুব সিরিয়াস কন্ডিশন। কালকে সেই দিদির জন্যই গিয়েছিলাম টাকা নিয়ে। কত টাকা নিয়েছে, সেটা ওদের জিজ্ঞেস করুন। ওরা সব দেখল, তাই কিছু টাকা মেডিক্যাল পারপাসে আমাকে দিয়ে গিয়েছে। দিয়ে বলল, আপনার ডকুমেন্ট (নথি) সব আছে। আপনি কোর্টে আপিল করে টাকা তুলে নেবেন। আমিই টাকা বার করে ওদের দিয়েছি। বলেছি, এই হল টাকার ডকুমেন্ট, এই কারণে তুলেছি। বলল, সব নিয়ে যাব। কিন্তু আমি বললাম, না সব তো দিতে পারব না। দিদির কিছু হলে আপনি তো আপনি দেখবেন না। আমার টাকা নেই আর। আর কিছু জিজ্ঞেস করেনি।’’