সোমবার নিজাম প্যালেসে হাজিরা দিতে গেলেন না ‘কালীঘাটের কাকু’ ,আইনজীবীর মাধ্যমে ব্যাঙ্কের নথিপত্র পাঠালেন ,নিয়োগ দুর্নীতিকাণ্ডে অন্যতম অভিযুক্ত কুন্তল ঘোষের সূত্রেই ‘কালীঘাটের কাকু’র কথা উঠে এসেছিল। তদন্তকারীদের সূত্রে জানা গিয়েছিল, ‘কালীঘাটের কাকু’র আসল নাম সুজয়কৃষ্ণ ভদ্র।জানালেন, তাঁর কাছে নথিই চাওয়া হয়েছে। নিয়োগ দুর্নীতিকাণ্ডে অন্যতম অভিযুক্ত কুন্তল ঘোষের সূত্রেই ‘কালীঘাটের কাকু’র কথা উঠে এসেছিল। তদন্তকারীদের সূত্রে জানা গিয়েছিল, ‘কালীঘাটের কাকু’র আসল নাম সুজয়কৃষ্ণ ভদ্র। সেই সুজয়কেই দ্বিতীয় বার তলব করেছিল সিবিআই। প্রথম বার হাজিরা দিলেও সোমবার তিনি নিজে হাজিরা দেননি। বদলে আইনজীবীকে দিয়ে নথিপত্র পাঠিয়ে দিয়েছেন। সুজয় জানিয়েছেন, তাঁর কাছে কিছু নথি চাওয়া হয়েছিল। সেগুলি আইনজীবীকে দিয়ে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে।
নিয়োগ দুর্নীতিতে অভিযুক্ত তাপস মণ্ডল সিবিআইয়ের কাছে দাবি করেছিলেন, অযোগ্য প্রার্থীদের চাকরি পাইয়ে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেওয়ার সময় কুন্তল নাকি আশ্বাস দিয়ে বলতেন, ‘‘কালীঘাটে কাকুর সঙ্গে কথা হয়ে গিয়েছে। চিন্তার কোনও কারণ নেই।’’ ইডি সূত্রে খবর, পরে গোপাল দলপতি ও তাপসকে জিজ্ঞাসাবাদ করে জানা যায়, কুন্তলের ওই কালীঘাটের ‘কাকু’ রাজ্যের এক প্রভাবশালী শীর্ষ নেতার সংস্থার চিফ এগ্জ়িকিউটিভ অফিসার (সিইও)। তাঁর বিরুদ্ধে কিছু দুর্নীতির মামলার তদন্ত করছে সিবিআই ও ইডি। তার পর থেকে আতশকাচের তলায় রয়েছেন সুজয়।
সুজয়ের ঘনিষ্ঠ মহল সূত্রে জানা গিয়েছে, তাঁর স্ত্রী ও মেয়ের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের নথি আইনজীবীর মাধ্যমে পাঠিয়ে দিয়েছেন ‘কালীঘাটের কাকু’। তাঁর আইনজীবী নাজমুল আলম সরকার জানিয়েছেন, সশরীরে হাজির হওয়ার নোটিস আসেনি তাঁর মক্কেলের কাছে। যে নথি চাওয়া হয়েছিল, দেওয়া হয়েছে। তাঁর কথায়, ‘‘যা নথি চেয়েছিল সিবিআই, দিয়ে দিয়েছি। ব্যাঙ্কের নথি চেয়েছিল, আমরা দিয়েছি। সশরীরে হাজিরার জন্য কোনও নোটিস তাঁর কাছে যায়নি। শুধুই নথি চাওয়া হয়েছিল। যখন ডাকবে সিবিআই, নোটিস পাঠালে সেই অনুযায়ী হাজিরা দেবেন।’’
সুজয় আরও দাবি করেন, তাঁর ‘সাহেব’, তৃণমূল সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। ২০০৯ থেকে তিনি অভিষেকের অফিসে চাকরি করছেন। সুজয় আরও বলেছিলেন, ‘‘পৃথিবীর কারও ক্ষমতা নেই আমার সাহেবকে ছোঁবে। কারণ তাঁর নাম কেউ করতে পারবেন না। তাঁর সঙ্গে কেউ দেখা করতে পারবে না, তাঁর সঙ্গে কেউ ফোনে কথা বলতে পারবেন না। আমার কাছ অবধি এসে থেমে যেতে হচ্ছে।’’
আরও পড়ুন – নিয়োগ দুর্নীতীর টাকা কোথা থেকে এসেছে, কোথায় গিয়েছে, তার সন্ধানে নতুন এফআইআর…
নিয়োগ দুর্নীতিকাণ্ডে তাঁর কাছে কোনও টাকা জমা পড়েনি বলেও জানিয়েছিলেন সুজয়। পাশাপাশি কাউকে চাকরি করিয়ে দেননি বলে দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, ‘‘আমার ভাইঝির ৪১ বছর বয়স। এমএ, বিএড। টেট দিয়েছে। তাঁর চাকরি হয়নি। আমার একটি মাত্র মেয়ে ‘গ্রুপ সি’র কর্মী-পদে চাকরির জন্য এসএসসি-র পরীক্ষা দিয়েছিল, তাঁর চাকরি হয়নি।’’ তাপস মণ্ডল এবং গোপাল দলপতিকে তিনি চেনেন না বলেও জানিয়েছেন সুজয়। তিনি ইডি এবং সিবিআই তদন্তের দাবি তুলেছিলেন। এর আগে কয়লা কাণ্ডে সিবিআই তাঁকে সাক্ষী হিসেবে ডেকেছিল বলে জানিয়েছেন সুজয়। তিনি জানান, ইডি-ও তাঁকে ডেকেছিল। কিন্তু সেই সময় তাঁর স্ত্রী অসুস্থ থাকায় তিনি যেতে পারেননি।