অভিষেকের সংস্থার দু’টি কম্পিউটার ফরেন্সিকে পাঠাতে পারে লালবাজার, হিসাবরক্ষককে জিজ্ঞাসাবাদ চলছে, লালবাজারে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সংস্থা লিপ্স অ্যান্ড বাউন্ডসের কর্মী চন্দন বন্দ্যোপাধ্যায়কে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। বুধবার দুপুরে লালবাজারে হাজিরা দেন তিনি। লালবাজার সূত্রে খবর, ওই সংস্থার যে দু’টি কম্পিউটার পুলিশ বাজেয়াপ্ত করেছে, সেগুলি ফরেন্সিক পরীক্ষার জন্য পাঠানো হতে পারে।
পুলিশ সূত্রে খবর, লিপ্স অ্যান্ড বাউন্ডসের মোট পাঁচটি কম্পিউটারের মধ্যে তিনটিতে ইডি তল্লাশি চালিয়েছিল। একটি হার্ড ডিস্কও তারা নিয়ে যায়। ইডির বিরুদ্ধে অভিযোগের পর প্রাথমিক ভাবে অনুসন্ধান শুরু করে লালবাজার। কলকাতা পুলিশের সদর দফতরে এক ইডি আধিকারিককে ডেকেও পাঠানো হয়েছিল। কিন্তু ইডি পাল্টা জানিয়ে দেয়, তাদের নতুন করে কিছু বলার নেই। যা বলার, ইমেল মারফত প্রথমেই জানানো হয়ে গিয়েছে।
গত ২১ অগস্ট লিপ্স অ্যান্ড বাউন্ডস সংস্থার দফতরে প্রায় ১৮ ঘণ্টা তল্লাশি চালায় এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)। ইডি সূত্রে খবর, এই সংস্থারই উচ্চ পদে কাজ করতেন নিয়োগ দুর্নীতিকাণ্ডে অভিযুক্ত ‘কালীঘাটের কাকু’ তথা সুজয়কৃষ্ণ ভদ্র। তল্লাশির পর লিখিত বিবৃতিতে ইডি দাবি করে, লিপ্স অ্যান্ড বাউন্ডসের চিফ এগ্জ়িকিউটিভ অফিসার (সিইও) স্বয়ং অভিষেক। সোমবার অবশ্য মেয়ো রোডে তৃণমূল ছাত্র পরিষদের প্রতিষ্ঠা দিবসের সভায় অভিষেক নিজেই লিপ্স অ্যান্ড বাউন্ডসকে তাঁর সংস্থা বলে উল্লেখ করেন। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কথাতেও সেই ইঙ্গিত মেলে।
চন্দন দাবি করেন, তল্লাশির সময় কম্পিউটারের নিয়ন্ত্রণ ছিল ইডির আধিকারিকদের হাতেই। ওই সময়েই কিছু ফাইল ডাউনলোড করে নেন ইডির আধিকারিকেরা। এ প্রসঙ্গে ইডির ব্যাখ্যা, তাদের এক আধিকারিক লিপ্স অ্যান্ড বাউন্ডসের কম্পিউটার থেকে তাঁর কন্যার হস্টেলের খোঁজখবর নিচ্ছিলেন। তখনই কোনও ভাবে ফাইলগুলি ডাউনলোড হয়ে গিয়ে থাকবে।
এর মাঝে সোমবার ইডি ডেকে পাঠিয়েছিল তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগকারী চন্দনকে। তিনি সিজিও কমপ্লেক্সে হাজিরা দিয়ে এসেছেন। তার পর বুধবার চন্দন পুলিশের মুখোমুখি।
লিপ্স অ্যান্ড বাউন্ডসে সহকারী হিসাবরক্ষক হিসাবে কর্মরত চন্দন। তিনি অভিযোগ করেছিলেন, ইডি তাঁদের দফতরে তল্লাশি চালাতে এসে কম্পিউটারে ১৬টি ফাইল ডাউনলোড করে দিয়ে গিয়েছে। এই অভিযোগ লিখিত আকারে লালবাজারে জানান চন্দন। এর পরেই ইডি লালবাজার এবং অভিষেকের সংস্থাকে চিঠি দিয়ে ফাইল ডাউনলোডের ব্যাখ্যা দিয়েছিল। লালবাজার থেকে পুলিশ গিয়ে লিপ্স অ্যান্ড বাউন্ডসের দু’টি কম্পিউটার বাজেয়াপ্ত করে নিয়ে আসে। ওই কম্পিউটারে কী কী করা হয়েছিল, তা খতিয়ে দেখতে ফরেন্সিকে পাঠানোর পরিকল্পনা রয়েছে পুলিশের।
আরও পড়ুন – I.N.D.I.A-র প্রধানমন্ত্রীর মুখ কি কেজরী? প্রশ্ন শুনেই মমতা কি বললেন?
অভিযোগকারী চন্দন ছাড়াও লিপ্স অ্যান্ড বাউন্ডসের আরও এক কর্মীকে পুলিশ লালবাজারে ডেকে পাঠিয়েছিল। কিন্তু তিনি অসুস্থ থাকার কারণে হাজিরা দিতে পারেননি। তিনি এবং চন্দন দু’জনেই ঘটনার দিন দফতরে উপস্থিত ছিলেন। ইডির তল্লাশি তাঁদের চোখের সামনেই হয়েছিল। তাই আপাতত সেই সম্পর্কে চন্দনের বয়ান রেকর্ড করা হচ্ছে।