রাহুলের মতো যাঁদের সাংসদ-বিধায়ক পদ খারিজ হয়েছে, দেখে নিন একনজরে , ফৌজদারী মানহানির মামলায় দোষী সাব্যস্ত হয়ে দু-বছরের কারাদণ্ড হয়েছে রাহুল গান্ধীর (Rahul Gandhi)। তার জেরে চলে গিয়েছে তাঁর সাংসদ পদ। যা নিয়ে গোটা দেশ উত্তাল হয়ে উঠেছে। তবে এভাবে সাংসদ পদ খারিজের ঘটনা এটাই প্রথম নয়। রাহুল গান্ধীর আগেও আদালতে দোষী সাব্যস্ত হওয়ায় সাংসদ (MP), বিধায়ক (MLA) পদ খারিজ হয়েছে অনেকেরই। চলতি বছরই আরও এক সাংসদ ও এক বিধায়কের সাংবিধানিক পদ খারিজ করা হয়েছে। এছাড়া এই তালিকায় রয়েছেন আজম খান থেকে জয়ললিতা, লালু প্রসাদ যাদবও। আর কারা এই তালিকায় রয়েছেন দেখে নেওয়া যাক একনজরে…
উল্লেখ্য, রাহুল গান্ধীর আগে গান্ধী পরিবারের আরও দুই সদস্যেরও সাংসদ পদ খারিজ হয়েছিল। তবে আদালতে দোষী সাব্যস্ত হওয়ার জেরে নয়। ১৯৭৫ সালে ভোটে জয় আদালতে অবৈধ ঘোষণা হওয়ায় ইন্দিরা গান্ধীর (Indira Gandhi) সাংসদ পদ খারিজ হয়। যদিও মামলাটি সুপ্রিম কোর্টে গিয়েছিল এবং একাধিক শর্ত আরোপিত হয়েছিল। অন্যদিকে, ২০০৬ সালে লাভজনক পদে থাকার অভিযোগে সনিয়া গান্ধী (Sonia gANDHI) সাংসদ পদে ইস্তফা দিতে বাধ্য হন। পরে অবশ্য দুজনেই বিপুল ভোটে জয়ী হয়ে লোকসভায় ফেরেন। ১৯৭৭ সালে ভরাডুবির তিন বছরের মাথায় ইন্দিরা গান্ধী পুনরায় প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হন এবং সনিয়া গান্ধী সাংসদ পদে ইস্তফা দেওয়ার পর উপ-নির্বাচনে ফের বিপুল ভোটে জয়ী হন। রাহুলের ক্ষেত্রে অবশ্য এখনও পর্যন্ত ৬ বছরের জন্য নির্বাচনে লড়াইয়ের দরজা বন্ধ।
রাহুল গান্ধীর আগে চলতি বছরের জানুয়ারিতে এনসিপি সাংসদ মহম্মদ ফইজল পি.পি-র সাংসদ পদ খারিজ হয়েছে। একটি খুনের মামলায় ১০ বছরের কারাদণ্ড হওয়ায় তাঁর সাংসদ পদ খারিজ করা হয়েছে। এর আগে ২০১৪ সালে ডিএমকে সাংসদ টি.এম সেলভাগামাপাথিরও ২ বছরের কারাদণ্ড হয়েছিল। তবে তাঁর সাংসদ পদ খারিজ হওয়ার আগেই তিনি নিজে ইস্তফা দেন। ২০১৩ সালে কংগ্রেস সাংসদ রাশিদ মাসুদের সাংবিধানিক পদ খারিজ হয়েছিল। তিনি তামিলনাড়ু থেকে রাজ্যসভায় প্রতিনিধিত্ব করছিলেন। এমবিবিএস আসন দুর্নীতিতে ৪ বছরের কারাদণ্ড হওয়ার জেরেই তাঁর সাংসদ পদ খারিজ হয়। আবার ওই বছরই পশুখাদ্য কেলেঙ্কারিতে ৪ বছরের কারাদণ্ড হওয়ায় সাংসদ পদ খারিজ হয়েছিল আরজেডি সুপ্রিমো লালুপ্রসাদ যাদবের (Lalu Prasad Yadav)। একইসঙ্গে ওই একই মামলার জেরে জেডিইউ সাংসদ জগদীশ শর্মাও সাংসদ পদ খারিজ হয়েছিল।
আরও পড়ুন – ভোগান্তিতে কলোনি এলাকার বাসিন্দারা,জমির নথি নেই
সাংসদের মতো আদালতে দোষী সাব্যস্ত হয়ে দু-বছর বা তার বেশি সময়ের সাজা ঘোষণা হলে বিধানসভার সদস্যদেরও বিধায়ক পদ খারিজ হয়। চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে বিধায়ক পদ খারিজ হয়েছে সমাজবাদী পার্টির সদস্য আবদুল্লাহ আজম খানের। সুয়ার কেন্দ্রের বিধায়ক ছিলেন তিনি। এর আগে গত বছরের অক্টোবরে রামপুরের বিধায়ক আজম খানের বিধায়ক পদ খারিজ করা হয়। খাটুয়ালি কেন্দ্রের বিজেপি বিধায়ক বিক্রম সিং সাইনিরও বিধায়ক পদ খারিজ হয়েছে গত অক্টোবরে। আবার ২০১৭ সালের ফেব্রুয়ারিতে অবৈধভাবে সম্পত্তি বাড়ানোর অভিযোগে ৪ বছরের কারাদণ্ড হয়েছিল এআইএডিএমকে তথা তামিলনাড়ুর প্রয়াত প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী জয়ললিতার বিধায়ক পদ খারিজ করা হয়েছিল। তার আগে ২০১৫ সালে খুনের মামলায় দোষী সাব্যস্ত হওয়ায় বিধায়ক পদ খারিজ হয় ঝাড়খণ্ড বিধানসভার সদস্য কমল কিশোর ভগতের। আবার ২০১৪ সালের মে মাসে বিদ্যুৎ চুরির মামলায় ৩ বছরের কারাদণ্ড হওয়ায় বিধায়ক পদ খারিজ হয় মহারাষ্ট্র বিধানসভার বিজেপি সদস্য সুরেশ হালভানকার। ওই বছরই শিবসেনা বিধায়ক ভাবানরাও ঘোলাপ ও ঝাড়খণ্ড পার্টির বিধায়ক এনোস এক্কার বিধায়ক পদ খারিজ হয়। এনোস যাবজ্জীবন কারাদণ্ডে দণ্ডিত হয়েছিলেন আর ভাবানার ৩ বছরের কারাদণ্ড পেয়েছিলেন। এর আগে ২০১৩ সালে আত্মহযত্যায় প্ররোচনা দেওয়ার মামলায় দোষী সাব্যস্ত হওয়ায় বিধায়ক পদ খারিজ হয় মধ্যপ্রদেশের বিজেপি সদস্য আশা রানির।