প্রধান বিচারপতির শপথ অনুষ্ঠানে শুভেন্দু উঠে দাঁড়ালেন, কিন্তু থামলেন না মুখ্যমন্ত্রী মমতা, প্রায় সাড়ে ৫ মাস পরে বিধানসভার কক্ষের বাইরে মুখোমুখি দেখা হল মমতা-শুভেন্দুর। একটা সময়ে তাঁরা ছিলেন একই দলের সহকর্মী। একজন সর্বময় নেত্রী। অন্যজন তাঁর অনুগত যুবনেতা। কিন্তু ২০২০ সালের মাঝামাঝি সময় থেকে সে সম্পর্ক অন্য দিকে বাঁক নিয়েছে। ২০২১ সালের মে মাস থেকে যা এক দূরপনেয় দূরত্বে পৌঁছেছে। যখন প্রাক্তন নেত্রী পরাজিত হয়েছেন প্রাক্তন অনুগতের কাছে। তখন থেকেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নাম মুখে আনেন না শুভেন্দু অধিকারীর। অধুনা বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অবশ্য মুখ্যমন্ত্রীর নাম নেন। কিন্তু তা খুব শ্রদ্ধাভক্তির সঙ্গে নয়। পারতপক্ষে দু’জনে একই পরিসরে থাকেনও না। তবে বৃহস্পতিবার সে ঘটনা ঘটল। দেখা গেল, মুখ্যমন্ত্রী মমতাকে দেখে আসন ছেড়ে উঠে দাঁড়ালেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রী এক বার থমকে দাঁড়ালেনও না।
বৃহস্পতিবার ছিল কলকাতা হাই কোর্টের প্রধান বিচারপতির শপথগ্রহণ অনুষ্ঠান। হাই কোর্টের ১ নম্বর কোর্টে, প্রধান বিচারপতির এজলাসেই শপথ নেন তিনি। সেখানে প্রায় সাড়ে ৫ মাস পরে বিধানসভার কক্ষের বাইরে মুখোমুখি দেখা হল মমতা-শুভেন্দুর। কিন্তু কোনও কথা হল না। মুখ্যমন্ত্রীকে দেখে সৌজন্য দেখিয়ে আসন ছেড়ে উঠে দাঁড়িয়েছিলেন বিরোধী দলনেতা। মমতা দাঁড়াননি। বরং শুভেন্দুকে এক রকম এড়িয়ে গিয়ে তিনি এগিয়ে যান। কথা বলতে শুরু করেন অনুষ্ঠানে উপস্থিত অন্য অভ্যাগতদের সঙ্গে।
আরও পড়ুন – পুলিশি তদন্তে বিস্তর গলদ! কালিয়াগঞ্জকাণ্ডে উপেন-দময়ন্তী-পঙ্কজ দত্তকে নিয়ে সিট গঠনের নির্দেশ আদালতের
হাই কোর্টের এই সাক্ষাৎপর্বটি অকস্মাৎই ঘটেছে। এমন হওয়ার কথা ছিল না। মুখ্যমন্ত্রী এবং বিরোধী দলনেতার আসন পরস্পরের কাছাকাছি ছিল না। শুভেন্দুর জন্য নির্দিষ্ট ছিল কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিমের পাশের আসনটি। অনুষ্ঠানের কিছু আগে হাই কোর্টে পৌঁছে সেই নির্দিষ্ট আসনেই বসেছিলেন শুভেন্দু। মুখ্যমন্ত্রী মমতা হাই কোর্টে এসে পৌঁছনোর কিছু ক্ষণ আগে ফিরহাদের সঙ্গে দু’এক বার কথা বলতেও দেখা গিয়েছে শুভেন্দুকে। তার পর অবশ্য তিনি নিজের আসন বদলে নেন। ফিরহাদ-সহ তৃণমূলের অন্য মন্ত্রী-পার্ষদদের থেকে বেশ কিছুটা দূরে এক নম্বর এজলাসের প্রবেশপথের সামনে গিয়ে বসেন। তার পরেই মমতা পৌঁছন অনুষ্ঠানস্থলে। প্রবেশপথের সামনে থাকায় কক্ষে ঢুকে ঘটনাচক্রে প্রথমেই শুভেন্দুকে দেখতে পান তিনি। কিন্তু ‘না দেখে’ এগিয়ে যান। কথা বলতে থাকেন উপস্থিত অন্য অতিথিদের সঙ্গে। শুভেন্দুও নিজের আসনে বসে পড়েন। যা থেকে স্পষ্ট, পারস্পরিক ‘সৌজন্য’ আটকে রয়েছে বিধানসভা কক্ষের অন্দরেই।