ধর্নার শেষ দিন কেন্দ্রের বঞ্চনার বিষয়ে আক্ষেপ করলেন মুখ্যমন্ত্রী ,দু’দিনের ধর্নার শেষে খানিকটা ‘হতাশ’ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কেন্দ্রের আর্থিক বঞ্চনার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়ে যে ধর্না তিনি শুরু করেছিলেন, তাতে তেমন ফল হল না বলেই আক্ষেপ করেছেন তিনি। পাশাপাশি বৃহত্তর আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দিয়ে ‘দিল্লি চলো’র ডাকও শোনা গিয়েছে তাঁর গলায়।
পরাধীন ভারতে অত্যাচারী ব্রিটিশ সরকারের বিরুদ্ধে ‘দিল্লি চলো’ বলে ডাক দিয়েছিলেন নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু। সেই প্রসঙ্গ টেনে ধর্না মঞ্চ থেকে মমতার ডাক, ‘‘বিরোধী দল, ধর্মীয় নেতা এবং সমাজের সমস্ত স্তরকে বলছি, সবাই জোট বাঁধুন। মানুষকে অধিকার না দিলে আর একটা ‘দিল্লি চলো’ হবে। স্বাধীনতার ৭৫ বছরে আমরাও স্বাধীনতা সংগ্রামীদের ছবি হাতে নিয়ে দিল্লি যেতে পারি।’’
মমতা জানিয়েছেন, গত দু’বছর ধরে বার বার প্রাপ্য টাকার জন্য কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে হাত পেতেছে বাংলা। কিন্তু কোনও কথাই কানে তোলেনি কেন্দ্র। যে কারণে এ রাজ্যে ৬৩টি সরকারি প্রকল্প বন্ধ হয়ে গিয়েছে। এ বার সৌজন্যের পালা শেষ করার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর কথায়, ‘‘বাংলার সব টাকা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। দু’বছর ধরে বার বার বলেছি। তিন বার প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করে এসেছি। যাতে বিজেপি বলতে না পারে, আমি ঝগড়ুটে। আমি সৌজন্যের শেষ খেলা দেখিয়েছি। আমাদের দলের সাংসদেরাও বার বার পাওনার জন্য বলেছেন। দিনের পর দিন আন্দোলন করেছেন। কিন্তু দু’বছর কেটে যাওয়ার পর দেখছি, যা পেতাম, তা-ও বাদ!’’
বৃহস্পতিবার ছিল রেড রোডে মমতার ধর্নার দ্বিতীয় তথা শেষ দিন। সেই ধর্নামঞ্চ থেকেই তিনি আক্ষেপের সুরে বলেন, ‘‘আমি আজ পর্যন্ত অপেক্ষা করেছিলাম। ভেবেছিলাম কেন্দ্র ফোন করে বলবে, তোমাদের প্রাপ্য টাকা দেব। কিন্তু কিছুই নেই। সব ভোঁ-ভাঁ।’’ ধর্না শেষের অব্যবহিত আগে মমতা আরও এক বার বলেন, ‘‘ভেবেছিলাম, কোনও একজন কুচো নেতাও ফোন করে বলবেন, তাঁরা বিষয়টি দেখছেন। কিন্তু কেউ একটা ফোনও করলেন না!’’
এর পরেই সরাসরি রাজধানীতে গিয়ে প্রতিবাদের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন মমতা। রান্নার গ্যাসের মূল্যবৃদ্ধির বিরুদ্ধে কেন্দ্রকে একহাত নিয়ে তাঁর উক্তি, ‘‘গ্যাস সিলিন্ডারের দাম যে হারে বেড়েছে, এ বার তো উনুনে রান্না করতে হবে! এখানেও (ধর্নামঞ্চে) আমি উনুন আনব ভেবেছিলাম। দরকারে দিল্লিতে গিয়েও উনুন বানাতে পারি। আমার সেই ক্ষমতা আছে।’’ বৃহস্পতিবার ধর্নামঞ্চ থেকে মমতাও বার্তা দিয়ে রাখলেন, প্রাপ্য আদায়ের জন্য তিনি দিল্লিতে গিয়ে প্রতিবাদ ও বৃহত্তর আন্দোলনের পথে হাঁটতে চলেছেন। সন্ধ্যা ৭টা নাগাদ মমতার ধর্না শেষ হয়েছে।