তছনছ হয়ে যাবে হিমাচল, উত্তরাখণ্ড? বিশেষজ্ঞদের মতে শক্তিশালী ভূমিকম্প আঘাত হানতে পারে ভারতে। তুরস্ক-সিরিয়া ভূমিকম্পের ধ্বংসযজ্ঞের ছবি এখনও সকলের মনে টাটকা। এরই মধ্যে ভয়ঙ্কর সতর্কতা এল ভারতের জন্যও। বিশেষজ্ঞদের মতে তুরস্ক-সিরিয়া ভূমিকম্পের মতো একই মাত্রার বা তার থেকেও শক্তিশালী ভূমিকম্প আঘাত হানতে পারে। এখনই যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ না করলে বিপুল সম্পত্তির ক্ষতি হতে পারে। মঙ্গলবার (২১ ফেব্রুয়ারি), ন্যাশনাল জিওফিজিক্যাল রিসার্চ ইনস্টিটিউট বা এনজিআরআই (NGRI) জানিয়েছে, শিগগিরই একটি শক্তিশালী ভূমিকম্পে কেঁপে উঠতে পারে হিমালয় অঞ্চল। হিমাচল প্রদেশ, উত্তরাখণ্ড এবং নেপালে বড় ক্ষতি হতে পারে। তবে তাদের মতে, পরিকাঠামোগত ক্ষতির পাশাপাশি প্রাণহানিও অনেকাংশে রোধ করা যেতে পারে। এর জন্য ওই এলাকায় শক্তিশালী কাঠামো তৈরি করতে হবে। সেই সঙ্গে কর্তৃপক্ষ যথাযথ প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
উল্লেখ্য, তুরস্ক-সিরিয়ার ধারাবাহিক ভূমিকম্পের মধ্যে সবথেকে জোরালোটি ছিল রিখটার স্কেলে র মাত্র ছিল ৭.৮। কাজেই এনজিআরআই-এর বিজ্ঞানীদের দাবি মতো রিখটার স্কেলে ৮ মাত্রার মতো শক্তিশালী ভূমিকম্প হলে কী পরিমাণ ক্ষতি হতে পারে তা সহজেই অনুমান করা যায়। তবে, ড. এন পূর্ণচন্দ্র রাও-এর মতে তুরস্ক-সিরিয়ার ভূমিকম্পে এত বেশি মাত্রার ক্ষতি হওয়ার মূল কারণ ভূমিকম্পের তীব্রতা নয়, বরং সেখানকার ভবনগুলির খারাপ মান। এই কারণেই ওই অঞ্চলে ক্ষয়ক্ষতি অনেক বেশি হয়েছে বলে জানিয়েছেন তিনি। রাও বলেছেন, “আমরা ভূমিকম্প হওয়া আটকাতে পারি না, কিন্তু আমরা ক্ষতি রোধ করতে পারি। ভূমিকম্পপ্রবণ এলাকায় ভবন নির্মাণের জন্য ভারত সরকার নির্দিষ্ট নির্দেশিকা জারি করেছে। জনসাধারণের সেই নির্দেশিকা অনুসরণ করা উচিত।”
তুরস্ক এবং সিরিয়া পরপর বেশ কয়েকটি শক্তিশালী ভূমিকম্পের জেরে বিপুল ক্ষতি হয়েছে। মৃতের সংখ্যা ৫০,০০০-এরও বেশি। তবে বহু মানুষ এখনও ধ্বংসস্তূপের নীচে আটকে আছে বলে অনুমান করা হচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে তুরস্ক এবং সিরিয়ার পাশে দাঁড়িয়েছে ভারত। ‘অপারেশন দোস্ত’-এর মাধ্যমে সাহায্য পাঠিয়েছে। বাইরে থেকে যেসব উদ্ধারকারী দল সেখানে গিয়েছিল, এনডিআরএফ ছিল অন্যতম প্রথম দল। ভূমিকম্পের ঘরবাড়িহীন ও সহায়হীনদের সাহায্য়ার্থে বিপুল খাদ্যশস্যও পাঠিয়েছে ভারত সরকার।
আরও পড়ুন – দাদাসাহেব ফালকে পুরস্কারের তালিকা সামনে আসা মাত্রই মুখ খুললেন কঙ্গনা রানাওয়াত।
এনজিআরআই-এর প্রধান বিজ্ঞানী ড. এন পূর্ণচন্দ্র রাও বলেছেন, পৃথিবীর পৃষ্ঠে বিভিন্ন প্লেট রয়েছে যা ক্রমাগত গতিশীল। ভারতীয় প্লেটটি প্রতি বছর প্রায় ৫ সেন্টিমিটার করে সরছে। এর ফলে হিমালয় অঞ্চলে প্রচুর চাপ সৃষ্টি হচ্ছে। এই অঞ্চলে চাপের এই বৃদ্ধি একটি বড় ভূমিকম্পের সম্ভাবনার জন্ম দিচ্ছে। এটি সম্ভবত হিমাচল প্রদেশ এবং উত্তরাখণ্ডের মতো এলাকায় আঘাত হানতে পারে। এর মাত্রা রিখটার স্কেলে ৮ বা তার বেশি হতে পারে। উত্তরাখণ্ডে আমাদের ১৮টি সিসমোগ্রাফ স্টেশনের শক্তিশালী নেটওয়ার্ক রয়েছে। হিমাচল এবং উত্তরাখন্ড-সহ নেপালের পশ্চিম অংশের মধ্যে অঞ্চলটিতে যে কোনও সময় শক্তিশালী ভূমিকম্প হওয়ার ঝুঁকি রয়েছে।”