শনিবার অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের জনসভায় হাজির ছিলেন। কিন্তু রাত পোহাতেই বিজেপিতে যোগ দিলেন তৃণমূলের প্রাক্তন বিধায়ক মিতালি রায়। ধূপগুড়ি বিধানসভা উপ নির্বাচনের দু’দিন আগে তাঁর এই দলবদল বড় চমক বলছে বিভিন্ন মহল। বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারের উপস্থিতিতে এদিন গেরুয়া শিবিরে যোগ দেন মিতালি। তাঁকে দলে নেওয়া নিয়ে অবশ্য বিজেপির অন্দরে অসন্তোষ দেখা দিয়েছে। ব্লকের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতাদের না জানিয়ে কেন তাঁকে এভাবে দলে নেওয়া হল, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন বিজেপির নেতা-কর্মীরা। অনেকেই বলছেন, ভোটের ৪৮ ঘণ্টা আগে এভাবে মিতালিকে দলে নিয়ে আখেরে বিজেপির অন্দরে নতুন করে কোন্দল তৈরি হল। দলের প্রাক্তন বিধায়কের বিজেপিতে যোগদান নিয়ে কটাক্ষ করতে ছাড়েনি তৃণমূলও। এদিকে প্রশ্ন উঠেছে, শুক্রবার রাজ্যের মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাসের সঙ্গে ভোটপ্রচার করলেন। শনিবার অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের জনসভায় হাজির থাকলেন। তারপর এমন কী হল যে, তাঁকে বিজেপিতে যোগ দিতে হল? এ প্রসঙ্গে রাজ্যের পুরমন্ত্রী তথা কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিম বলেন, ওঁর বিরুদ্ধে বেশকিছু অভিযোগ ছিল। তাই এবার দল টিকিট দেয়নি। সেজন্যই তিনি চলে গিয়েছেন। রবিবার সকালে ধূপগুড়ি শহরের নেতাজিপাড়ার নির্বাচনী কার্যালয়ে রাজ্য সভাপতির হাত থেকে বিজেপির পতাকা তুলে নেন ধূপগুড়ির প্রাক্তন তৃণমূল বিধায়ক মিতালি। তারপরই বিজেপির জেলা কমিটির এক সহ সভাপতি, পশ্চিম মণ্ডলের সভাপতি, বিজেপির টাউন মণ্ডল সভাপতি সহ বেশ কয়েকজন নির্বাচনী কার্যালয়ের মধ্যেই নিজেদের অসন্তোষ জানান। রীতিমতো হইচই শুরু হয়ে যায়। তখন ওই নির্বাচনী কার্যালয়েই দলীয় কর্মসূচিতে ব্যস্ত ছিলেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি। তাঁর সামনেই ওই ক্ষোভ বিক্ষোভ চলতে থাকে। তবে কোনও মন্তব্য করতে চাননি সুকান্ত মজুমদার। যদিও মিতালি রায়ের যোগদান প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ওঁর অভিজ্ঞতা এবং কাজ করার মানসিকতা দলের উপকারে লাগবে। তাঁকে গোটা উত্তরবঙ্গজুড়ে কাজে লাগানো হবে।
জেলা তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক রাজেশকুমার সিংহ বলেন, দলের শীর্ষ নেতৃত্ব যাঁকে সভামঞ্চে ‘দিদি’ বলে সম্বোধন করলেন, সেই তিনিই পর দিন দল ছাড়লে মানুষ স্পষ্ট বুঝে যায় আসলে তিনি কেমন। বিজেপিও বুঝবে তিনি সম্পদ নাকি, সমস্যার বোঝা।
আরও পড়ুন :-দেব খুবই অসুস্থ। সবই যে রটনা, তা জানালেন দেবের সহ-অভিনেতা অম্বরীশ ভট্টাচার্য।
বিজেপির জলপাইগুড়ি জেলা কমিটির সহ সভাপতি মাধব রায় বলেন, আচমকা অন্য দলের একজনকে দলে নেওয়া হল, কিন্তু আমাদের কিছুই জানানো হল না। আমরা এখানে দল করি, আমাদের জানানো উচিত ছিল। তাই আমার মতো অনেকেই অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন। দলত্যাগ নিয়ে কী বলছেন মিতালি? তাঁর কথায়, তিনবছর থেকে আমাকে বসিয়ে রাখা হয়েছে। প্রাক্তন বিধায়ক ছাড়া আমার আর কোনও অস্তিত্ব ওই দলে ছিল না। কাজ করতে দেওয়া হচ্ছিল না। বানারহাটের হাতিনালায় কাজ হচ্ছে না। রাজবংশীদের অপমানিত হতে হচ্ছে তৃণমূলের কাছে। এ কারণে মানুষের কাজ করতে বিজেপিতে যোগদান করলাম।