
আফগানিস্তানের দখল নিয়ে রীতিমতো তাণ্ডব শুরু করে দিয়েছে তালিবানরা। তালিবানরা মুখে শান্তির কথা বললেও তারা যে ২০ বছর পরও নিজেদের হিংস্র মোড়ককে ঝেড়ে ফেলতে পারেনি, তা স্পষ্ট। গত রবিবার কাবুল দখলের পর থেকেই একাধিক ক্ষেত্রে হু হু করে আফগানিস্তানে মানুষকে মারতে শুরু করেছে তারা। এমনকী ভারতের দূতাবাসে ঢুকে তাণ্ডব চালায় তালিবানরা। এরপরই মুখ খুললেন প্রধানমন্ত্রী মোদী (Modi) ।
এদিন নিজের টুইটে সন্ত্রাস থেকে শুধু করে হিংসার বার্তা নিয়ে একাধিক মন্তব্য করছেন মোদী (Modi) । তবে নাম নেননি তালিবানদের। নাম না নিয়েই এদিন প্রধানমন্ত্রী নিজের অবস্থান স্পষ্ট করে দিয়েছেন সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে মুখ খুলে। টুইটে মোদী (Modi) সাফ জানিয়েছেন, হিংস্রতা দিয়ে কখনও স্থাপিত শাসন বেশিদিন টেকেনা। সন্ত্রাস আর আতঙ্ক দিয়ে যে জিনিসের শুরু হয়, তার স্থায়িত্ব অনেক কম।
মুলত এদিন প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যেই দিল্লি নিজের জায়গা স্পষ্ট করে দিয়েছে। এর আগে আফগানিস্তানে ভারতের দূতাবাসে হামলা চালায় তালিবানরা। বন্ধ দূতাবাসের তালা ভেঙে সেখানের নথি চুরি করে তারা। শুধু তাই নয়, ভারতের দূতাবাসের ভিতর থেকে তালিবানরা গাড়িগুলি নিয়ে পালিয়ে যায়।
আর ও পড়ুন ‘বেল বটম’ দিয়ে বড় পর্দায় ফিরেছেন সুপারস্টার অক্ষয় কুমার (Akshay Kumar)
এরপরই টুইটে কার্যত জোরালো বার্তা দিয়ে মোদী লিখেছেন, ‘সন্ত্রাসের রাস্তা ধরে যে সাম্রাজ্য তৈরি হয়, তা কয়েকদিন হয়তো চলতে হতে পারে, তবে তা স্থায়ী হতে পারে না। বেশিদিন এরা মানবতাকে বন্ধ করে রাখতে পারে না। ‘ তিনি নিজের পোস্টে তালিবানের নাম না করেই কার্যত সন্ত্রাসী শক্তি হিসাবে তাদের উল্লেখ করেছেন।
এদিকে আফগানিস্তানের দখল নেওয়ার পরেই ঘরে ঘরে ঢুকে তালিবান সদস্যরা খোঁজ করছে কোন কোন বাড়িতে আফগান সেনার সদস্যরা রয়েছে। কোন বাড়িগুলিতে ন্যাটো বাহিনি কিম্বা রাষ্ট্রসংঘের দূতরা লুকিয়ে রয়েছেন তার খোঁজ চালাচ্ছে তারা।
এদিকে, জানা যাচ্ছে তালিবানের অন্যতম সুপ্রিম নেতা হাবিবাতুল্লাহ আখুন্দজাদাকে বহুদিন ধরেই বিভিন্ন দেশের গোয়েন্দারা খুঁজছে। জানা গিয়েছে, তালিবানের এই সবচেয়ে ভয়ঙ্কর নেতাকে আশ্রয় দিয়ে নিরাপদে লালন করেছে পাকিস্তান। বহুদিন ধরেই এন সন্ত্রাসী নেতা পাকিস্তানে গা ঢাকা দিয়ে রয়েছে বলে খবর রয়েছে ভারতীয় গোয়েন্দাদের কাছে। তালিবানের তৈরি বহু কঠিন ফরমানের নির্মাতা এই হাবিবাতুল্লাহ।
এদিকে চিনের সঙ্গে হাত মেলানোর বার্তা দিয়ে দিয়েছে তালিবানরা। তারা জানিয়েছে , আফগানিস্তানের উন্নতিতে চিনকে তারা আহ্বান করতে চায়। কারণ চিনের অর্থনীতি খুবই ভালো ও বৃহৎ। তাতে আফগানিস্তানের উন্নতি হবে। এর আগে চিনের বিদেশমন্ত্রীর সঙ্গে উত্তর চিনের এক জায়গায় তালিবানি নেতাদের বৈঠক হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। সেখানে চিন তালিবানকে সাফ জানিয়েছে , আফগানিস্তানে যদি মধ্যপন্থার ইসলামের শাসন থাকে, তাহলে তারা আফগান নিয়ে এগিয়ে যেতে রাজি। এর আগে অবশ্য চিন জানিয়ে দিয়েছে যে তারা তালিবানের সঙ্গে বন্ধুত্ব পূর্ণ আচরণে বিশ্বাসী।
সেই জায়গা থেকে এদিন ভারত নিজের অবস্থান মোদীর বক্তব্য দিয়েই স্পষ্ট করে দিল। আফাগানিস্তানে বহু হিন্দু ও শিখ সম্প্রদায়ে মানুষ বসবাস করছেন। দিল্লি আগেই জানিয়ে দিয়েছে , ভারত এই মুহূর্তে আফগানিস্তান থেকে ভারতীয়দের রক্ষা করে আনাকেই বেশি গুরুত্ব দিচ্ছে। এছাড়াও দিল্লি জানিয়েছে, সেদেশে আটকে পড়া হিন্দু ও শিখদের সঙ্গেও ক্রমাগত আলোচনা করছে কেন্দ্র। এর সঙ্গেই কেন্দ্র জানিয়েছে, ই ইমার্জেন্সি ভিসা দিয়ে আফগানদেরও ভারতে আশ্রয় দিতে রাজি মোদী সরকার। এই পরিস্থিতিতে তালিবান কোন স্টান্স নেয় সেদিকে তাকিয়ে দিল্লি।