রাহুলের মামলা থেকে নিজেকে সরিয়ে নিলেন গুজরাট হাইকোর্টের বিচারপতি ,রাহুল গান্ধীর আবেদনের শুনানি থেকে নিজেকে সরিয়ে নিলেন গুজরাট হাইকোর্টের বিচারপতি গীতা গোপি। মোদী পদবি নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্যের জেরে তাঁকে যে দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছে এবং ২ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে, নিম্ন আদালতের সেই রায়ের উপর স্থগিতাদেশ চেয়েছিলেন রাহুল গান্ধী। এই মর্মে মঙ্গলবারই গুজরাট হাইকোর্টে একটি মামলা নথিভুক্ত করেছিলেন কংগ্রেস নেতা। এদিন সেই মামলারই শুনানি থেকে নিজেকে সরিয়ে নিলেন বিচারপতি গীতা গোপিনাথ। কিন্তু, ঠিক কেন তিনি এই মামলাটি শুনতে নারাজ, তা জানা যায়নি। ২০১৯ সালের এপ্রিলে কর্নাটকের কারলে এক রাজনৈতিক প্রচার সভা থেকে রাহুল গান্ধী মন্তব্য করেছিলেন, ‘সকল চোরের পদবিই মোদী হয় কেন?’ এই মন্তব্যের জেরে হওয়া ফৌজদারি মানহানি মামলায় ২৩ মার্চ, সুরাটের চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের আদালত তাকে দোষী সাব্যস্ত করে দুই বছরের কারাদণ্ড দিয়েছিল। সেই রায়কে দায়রা আদালতে চ্যালেঞ্জ করেই লাভ হয়নি কংগ্রেস নেতার। তারপর এখন তিনি হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছেন।
এদিকে, গুজরাট এবং গুজরাতিদের ‘ঠগ’ বলার জন্য আহমেদাবাদ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে বিহারের উপমুখ্যমন্ত্রী তেজস্বী যাদবের বিরুদ্ধে। আবেদনে বলা হয়েছে যে তিনি ‘ঠগ’ এবং ‘ধৃত’-র মতো অশ্লীল শব্দ ব্যবহার করে গুজরাটিদের অপমান করেছেন। আবেদন অনুযায়ী, চলতি বছরের ২২ মার্চ সংবাদমাধ্যমের সামনে এই মন্তব্য করেছিলেন তেজস্বী। ভারতীয় দণ্ডবিধির ৪৯৯ এবং ৫০০ ধারার অধীনে ফৌজদারি মানহানির মামলা দায়ের করা হয়েছে। আবেদনকারী বলেছেন, উপ-মুখ্যমন্ত্রী ও একজন দায়িত্বশীল রাজনীতিবিদের এমন মন্তব্য করা ঠিক নয়। বিহারের উপমুখ্যমন্ত্রী তেজস্বী যাদবের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানানো হয়েছে। এই মামলার শুনানি হবে ১ মে।
দুই বছরের কারাদণ্ডের ফলে তাঁকে লোকসভার সাংসদ হিসেবে অযোগ্য বলে ঘোষণা করা হয়েছে। ছেড়ে দিতে হয়েছে সরকারি বাংলোও। তবে ম্যাজিস্ট্রেট কোর্ট তাঁর সাজা স্থগিত রেখে তাঁকে ৩০ দিনের মধ্যে নিম্ন আদালতের রায়কে চ্যালেঞ্জ করার সুযোগ দিয়েছিল। এর জন্য তাঁকে জামিনও দেওয়া হয়েছিল। এরপর, ৩ এপ্রিল সুরাট দায়রা আদালতে তিনি নিম্ন আদালতের রায় ও সাজার উপর স্থগিতাদেশ চেয়ে আবেদন করেছিলেন। ২০ এপ্রিল সেই আবেদন খারিজ করে দেয় দায়রা আদালত। তবে, তাঁর আবেদনের নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত জামিন মঞ্জুর করেছিল আদালত। দায়রা আদালত আরও পর্যবেক্ষণ করেছিল যে, সাংসদ এবং দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম রাজনৈতিক দলের সভাপতি হওয়ার কারণে (২০১৯ সালে মন্তব্যের সময়) রাহুল গান্ধীর মন্তব্য করার বিষয়ে আরও সতর্ক হওয়া উচিত ছিল। কারণ, তাঁর কথার বড় প্রভাব পড়ে জনগণের মনে।
আরও পড়ুন – পুলিশকর্মীদের বেধড়ক মার কালিয়াগঞ্জে! ভাঙল হেলমেট, খাটের তলায় ঢুকে প্রাণভিক্ষা
২০১৯ লোকসভা নির্বাচনের আগে ওই মন্তব্য করেছিলেন রাহুল গান্ধী। ওই মন্তব্যের জেরে রাহুলের বিরুদ্ধে ফৌজদারি মানহানির মামলা দায়ের করেছিলেন বিজেপি বিধায়ক তথা গুজরাটের প্রাক্তন মন্ত্রী পূর্ণেশ মোদী। রাহুল গান্ধী সামগ্রিকভাবে মোদী পদবীধারীদের অপমান করেছেন বলে অভিযোগ দায়ের করেছিলেন। সেই অভিযোগের ভিত্তিতেই রাহুলকে দোষী সাব্যস্ত করেছে সুরাটের ম্যাজিস্ট্রেট কোর্ট। একই মন্তব্যের জেরে রাহুল গান্ধীর বিরুদ্ধে পটনায় পৃথক মামলা করেছিলেন সুশীল মোদী। সেই মামলাতেও রাহুলকে আদালতে হাজিরা দেওয়ার জন্য সমন পাঠানো হয়েছিল। সেই নির্দেশের উপর স্থগিতাদেশ চেয়ে পটনা হাইকোর্টে পালটা মামলা করেছিলেন রাহুল গান্ধী। সোমবার, হাইকোর্ট তাঁর আবেদন মেনে নিয়েছে।