করোনার ভয়ে ছেলেকে নিয়ে ঘরবন্দি মা, তিন বছর পর পুলিশ এসে খুলল দরজা, করোনা হয়ে যেতে পারে এই ভয়ে ১০ বছরের ছেলেকে নিয়ে একটি ঘরে নিজেকে বন্দি করেন মুনমুন। তার পর টানা তিন বছর ধরে সেই ঘরেই সন্তানকে নিয়ে নিজে বন্দি ছিলেন তিনি। করোনার ভয় যে কী জিনিস, তা মুনমুন মাঝির চেয়ে ভাল কে বুঝবেন। তিন বছর একটি ঘরে নিজেকে বন্দি রাখার পর সদ্য বাইরে বেরিয়েছেন তিনি। জানা যাচ্ছে, করোনা হয়ে যেতে পারে, এই ভয়ে ১০ বছরের ছেলেকে নিয়ে বাড়ির দরজা বন্ধ করেন মুনমুন। তার পর থেকে সেখানেই কেটে গিয়েছে তিনটি বছর। শেষ পর্যন্ত পুলিশ এসে মহিলা ও তাঁর ছেলেকে বার করেন।
চক্করপুর থানার সাব ইন্সপেক্টর প্রবীণ কুমার বলেন, ‘‘আমার স্বীকার করতে দ্বিধা নেই, প্রথমে আমি ব্যাপারটিকে খুব একটা পাত্তা দিইনি। কিন্তু যখন বুঝলাম যে, সুজন সত্যিই বিচিত্র সমস্যায় পড়েছে, আমি সমস্ত সহায়তা করি। সুজন আমাকে তাঁর স্ত্রীর সঙ্গে ভিডিয়ো কলে কথা বলিয়ে দেয়। বার বার কথা বলতে বলতে মুনমুনকে বোঝানো সম্ভব হয়। ওদের ছোট সন্তানের সঙ্গেও কথা হয়। সে কত দিন সূর্যের আলো দেখেনি।’’
আরও পড়ুন – ওজন নিয়ে এখন সকলেরই কম-বেশি মাথাব্যথা! রইল সুস্বাদু কয়েকটি খিচুড়ির রেসিপির হদিস
২০২০ সালে করোনার প্রকোপ যখন ভয়ানক, সেই সময় সংক্রমণ এড়াতে ১০ বছরের ছেলেকে নিয়ে বাড়িতে ঢুকে দরজা বন্ধ করেছিলেন মুনমুন। সেই সময় সঙ্গে ছিলেন স্বামী সুজন। বস্তত, সেই সময় এমন কাণ্ড আরও অনেকেই করতে বাধ্য হয়েছিলেন। তার পর ক্রমশ করোনা কেটেছে। স্বাভাবিক হয়েছে জনজীবন। সুজনের অফিস ওয়ার্ক ফ্রম হোম থেকে আবার পুরনো মেজাজে ফিরেছে। কিন্তু মুনমুনের জেদ, তিনি বাইরে থেকে আসা কাউকে ঘরে ঢুকতে দেবেন না। স্বামী প্রথম দিন বেরিয়ে অফিস গেলেও বাড়িতে ফিরতে পারেননি। কাছেই একটি বাড়িভাড়া নিয়ে থাকতে হয় তাঁকে। বার বার বিভিন্ন ভাবে স্ত্রীর কাছে বার্তা পাঠিয়েছেন, করোনা চলে গিয়েছে এ বার স্বাভাবিক জীবনে ফেরা যাক, কিন্তু কাজের কাজ হয়নি কিছুই। সুজন তাঁর শ্বশুর, শাশুড়িকে দিয়ে বলিয়েছেন, তাতেও কাজ হয়নি। শেষ পর্যন্ত সুজন পুলিশের দ্বারস্থ হন। পুলিশ এসে দরজা খুলে মহিলা ও তাঁর সন্তানকে বার করে।