এগরায় বেআইনি বাজি কারখানায় বিস্ফোরণের পুনরাবৃত্তি ঠেকাতে একগুচ্ছ নির্দেশ নবান্নের , পূর্ব মেদিনীপুরের এগরায় বেআইনি বাজি কারখানায় বিস্ফোরণের ঘটনার পর সতর্ক প্রশাসন। নবান্নের তরফে ছয় দফা নির্দেশ দেওয়া হল পুলিশ সুপার এবং কমিশনারদের। নবান্নের নির্দেশ, রাজ্যের সমস্ত বেআইনি বাজি কারখানার বিরুদ্ধে অবিলম্বে ব্যবস্থা নিতে হবে। পাশাপাশি, বেআইনি বাজি কারখানার কর্মীদের বিকল্প কর্মসংস্থান তৈরির কথাও বলা হয়েছে। নবান্নের নির্দেশ, রাজ্যে চলা সমস্ত বেআইনি বাজি কারখানা অবিলম্বে বন্ধ করতে হবে। প্রয়োজনে সেই কারখানার কর্মীদের বিকল্প কর্মসংস্থান তৈরিও করে দিতে হবে পুলিশ-প্রশাসনকে।
গত মঙ্গলবার পূর্ব মেদিনীপুরের এগরায় একটি বেআইনি বাজি কারখানায় বিস্ফোরণে নিহত হন আট জন। আহত হন বেশ কয়েক জন। বিস্ফোরণের পরেই এলাকা ছেড়ে পালান বেআইনি কারখানাটির মালিক ভানু বাগ। বৃহস্পতিবার ওড়িশা থেকে ভানু এবং তাঁর পুত্র বিশ্বজিৎকে গ্রেফতার করে সিআইডি। সূত্রের খবর, কটকের একটি হাসপাতালে আহত অবস্থায় ভর্তি ভানু। সেখান থেকেই ভানুকে গ্রেফতার করে সিআইডি। বেআইনি বাজি কারখানার মালিকের শরীরের বেশ কিছুটা অংশ পুড়ে গিয়েছে বলেও জানা গিয়েছে। সেই কাণ্ড থেকে শিক্ষা নিয়েই এই সংক্রান্ত একগুচ্ছ নির্দেশ দিল নবান্ন।
নবান্নের নির্দেশিকায় পুলিশ সুপার এবং কমিশনারদের বলা হয়েছে, বেআইনি বাজি তৈরির সঙ্গে যুক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে। নিয়ম বহির্ভূত ভাবে চলা বাজি কারখানাগুলিতে তল্লাশি চালিয়ে বন্ধ করে দিতে হবে তা। নিয়ম মেনে বেআইনি বাজি বাজেয়াপ্ত করতে হবে। বাজেয়াপ্ত করা বাজি কী ভাবে নষ্ট করতে হবে তা-ও জানিয়েছে নবান্ন। তাতে বলা হয়েছে, বাজেয়াপ্ত বাজি আদালতের নির্দেশ মেনে নষ্ট করতে হবে। বিপুল পরিমাণ বাজি উদ্ধার হলে প্রয়োজনে অল্প অল্প করে তা নষ্ট করতে হবে।
বেআইনি বাজি প্রস্তুতকারকেরা যাতে আবার একই কাজ না করেন তা স্থানীয় থানাকে নিশ্চিত করতে হবে বলেও নির্দেশ নবান্নের। এগরার ক্ষেত্রে দেখা গিয়েছিল, মূল অভিযুক্ত ভানু বাগ আগেও বাজি কারখানা চালাতেন। তার পর গ্রেফতার হন। মুক্তি পেয়েই আবার তিনি বাজির কারবার শুরু করে দেন। ভবিষ্যতে তার পুনরাবৃত্তি রুখতে নবান্ন স্পষ্ট জানিয়েছে, বেআইনি বাজি প্রস্তুতকারকেরা যাতে আবার একই কাজ না করে তা দেখতে হবে স্থানীয় থানাকেই।
আরও পড়ুন – পুলিশকে হুঁশিয়ারি দিয়ে বিতর্কে জড়ালেন পদ্ম বিধায়ক নীলাদ্রি
এই ধরনের বাজি কারখানায় শ্রমিকের কাজ করেন স্থানীয় বাসিন্দাদের একটি অংশ। রাতারাতি কারখানা বন্ধ হলে তাঁদের রুজিরোজগারের প্রশ্ন উঠবে। তাই নবান্নের নির্দেশ, প্রয়োজন মনে করলে স্থানীয় প্রশাসনের সাহায্য নিয়ে কর্মীদের অন্যত্র পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করতে হবে। যাতে তারা বেআইনি বাজি কারখানায় কাজ না করেও সুস্থ ভাবে জীবনধারণ করতে পারেন। সর্বোপরি সাধারণ মানুষকে সচেতন করার পরামর্শ পুলিশ প্রশাসনকে দিয়েছে নবান্ন।