নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু এর সংগ্রামে যাত্রা। তখন ১৯১৯ খ্রিষ্টাব্দ দমনমূলক রাওলাট আইন ভারতীয় জাতীয়তাবাদীদের বিক্ষুব্ধ করে তুলেছিল। তারপর নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু ভারতে ফিরে “স্বরাজ” নামক ততকালীন একটি সংবাদপত্রে লেখালেখি শুরু করেন বঙ্গে কংগ্রেসের প্রচাররের দায়িত্বে নিযুক্ত হয়। অনেকটা ধরে নেওয়া যায় তার রাজনৈতিক জীবনের শুরু এখান থেকেই। ১৯২৪ সালে যখন চিত্তরঞ্জন দাশ কলকাতার পৌরসংস্থার মেয়র হিসেবে নির্বাচিত হন তখন সুভাষ তার অধীনে কর্তরত ছিলেন। সুভাষের রাজনৈতিক গুরু চিনে চিত্তরঞ্জন দাস।
১৯২৫ সালে জাতীয়তাবাদের কারণে সুভাষসহ আরও বেশ কয়েকজন জাতীয়তাবাদীদের বন্দি করে মান্দালয়ে নির্বাসিত করা হয়। সেখানে থাকা অবস্থায় সুভাষ যক্ষ্মায় আক্রান্ত হন। প্রায় বিশ বছরের মধ্যে সুভাষ মোট ১১ বার ইংরেজের হাতে গ্রেফতার হয়েছিলেন। তখন পর্যন্ত সুভাষ জাতীয়তাবাদের জন্য লড়াই করে গেছেন। যদি বর্তমান সময়ের প্রেক্ষাপটে আমরা দেখি তাহলে এমন কিছু নেতা পাওয়া খানিক কষ্টসাধ্য। এমনি এক জাতীয়তাদী মানুষ ছিলেন ক্ষুদিরাম। আমরা আমাদের অন্য একটি ব্লগে ক্ষুদিরাম সম্পর্কে বিস্তারিত বর্ননা করে গেছি।
আপনি চাইলে এখান থেকে ক্ষুদিরামের জীবনের উল্লেখযুগ্য ঘটনা সম্পর্কে জেনে আসতে পারেন। ১৯৩৮ সালে নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু ভারতীয় কংগ্রেসের প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন। ১৯৩৯ সালে আবার নেতাজি দ্বিতীয়বারের মতো ত্রিপূরা সেশনে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়। যদিও নেতাজি এই নির্বাচনে জয়লাভ করেছেন, তারপরও গান্ধীজীর সাথে মতবিরোধ থাকার কারণে দলের অন্যান্য নেতাকর্মী তাকে পদত্যাগের জন্য চাপ প্রয়োগ করা হয়।
অন্যথায় তাদের বড় একটা অংশ পদত্যাগ করবে বলে দাবি জানায়। অবশেষে নেতাজি নিজে থেকেই সরাসরি গান্ধীর নিকট পদত্যাগের ঘোষণা করেন। এর পর থেকেই বাধনহীন সুভাষ রাজনৈতিক সকল বাধন থেকে মুক্ত হয়ে ফরওয়ার্ড ব্লক নামে একটি সংগঠন প্রতিষ্ঠা করেন। কিন্তু সে সময় দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ শুরু হয়ে যায় এবং ভারতীয় সকল সেনাবাহিনী ব্রিটিশের পক্ষে যুদ্ধে অংশগ্রহন করে। এই ঘটনার পরে নেতাজির ক্ষতের সৃষ্টি হয়। তখন পর্যন্ত নেতাজি গৃহবন্দি ছিলেন এবং মনে মনে দেশ ত্যাগ করার পরিকল্পনা করেন।
আরও পড়ুন – মানুষের হয়ে কথা বলতে গিয়ে বিক্ষোভের মুখে শতাব্দী
খুব সতর্কতার সাথে ব্রিটিশদের চোখ এড়িয়ে নেতাজি আফগানিস্থান ও সোভিয়েত ইউনিয়ন হয়ে জার্মানির পথে পাড়ি দেন। তখনকার জার্মানির নেতা হিটলারের সাথে সাক্ষাত করেন নেতাজি। তবে ভারতের স্বাধীনতায় হিটলার কোনোরূপ সহায়তা না করায় নেতাজি জাপানে চলে যান। যখন জাপানে রাসবিহারী বসু গড়ে তুলেছিলেন ভারতীয় জাতীয় সেনাবাহিনী।
১৯৪৩ সালে নেতাজি সুভাষচন্দ বসুর হাতে তিনি ভারতীয় জাতীয় সেনাবাহিনীর দায়িত্ব তুলে দেন। নারী-পুরুশ মিলিয়ে এই সেনাবাহিনীতে মোট সৈন্য সংখ্যা ছিলো প্রায় ৮৫ হাজার জন। তারপরে এই বাহিনীর নাম পরিবর্তন করে আজাদ হিন্দ ফোর্জ রাখা হয়। নেতাজি আশা করেছিলেন ব্রিটিশদের উপর তার বাহিনীর এরূপ আক্রমন দেশে হয়তো ভারতীয়রা তার বাহিনীতে যোগ দিলে। কিন্তু এই ঘুমন্ত জাতি তখনও নিরব ছিলো। অপরদিকে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে জাপান, জার্মানি এবং ইতালির পরাজয়ের পর নেতাজির সেনাবাহিনীও পরাজয় মেনে নিতে বাধ্য হয়। সংগ্রামে