মশার উৎপাতে নাজেহাল অবস্থা নিউ টাউনের বাসিন্দাদের, অফিসে কাজ করছিলেন এনকেডিএর এক শীর্ষকর্তা। হঠাৎই এক আমলার ফোন। ‘এ ভাবে নিউ টাউনে বাস করা যায়? এখানে থাকব, নাকি আগের বাসায় ফিরে যাব? এত মশা কলকাতা শহরে আর কোথাও নেই।’ কোনও রকমে এনকেডিএর ওই কর্তা উত্তর দেন, ‘স্যর, দেখছি কী করা যায়, দু’দিন সময় দিন।’ কয়েক ঘণ্টা পর অবসরপ্রাপ্ত এক বিচারপতির ফোন। ‘আপনারা তেল-টেল তো কিছুই ছড়াচ্ছেন না। ফগিং কি হচ্ছে। এত মশা আসছে কোথা থেকে?’
মশার উৎপাতে নাজেহাল নিউ টাউনের বাসিন্দারা। আমলা, বিচারপতিই শুধু নন, সাধারণ মানুষের মশা নিয়ে অভিযোগ মেটাতে কালঘাম ছুটছে এনকেডিএর কর্তাদের। নিউ টাউনে তিনজন ইতিমধ্যেই ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়েছেন। তারপরই বোর্ড মিটিং করে মশা রুখতে বেশ কিছু ব্যবস্থা নিয়েছে এনকেডিএ। মশা সংক্রান্ত অভিযোগ জানাতে চালু হয়েছে হেল্পলাইনও।
মশা মারতে প্রতিটি ব্লকে সপ্তাহে একদিন স্প্রে, ফগিং। নির্মিয়মাণ বিল্ডিং, জমা জল, জমা আবর্জনা ও খালের উপর বিশেষ নজর। ভেক্টর কন্ট্রোল টিমের তদারকির জন্য তৈরি হয়েছে কোর কমিটি। যে এলাকায় সমস্যা বেশি, সেখানকার প্রতিদিন রিপোর্ট নেওয়া। ডেঙ্গি পজ়িটিভদের জন্য তৈরি হয়েছে র্যাপিড রেসপন্স টিম। মশা সংক্রান্ত অভিযোগের হেল্পলাইন: ৮১০০২০১৮০৮
মশা নিয়ে সচেতনতা বাড়াতে মাইকে প্রচার, দেওয়াল লিখন, ব্যানার, পোস্টার, লিফলেটে প্রচার। প্রতিটি ফ্ল্যাট ধরে ধরে চলছে সার্ভে। বাজার ও আবাসনে সচেতনতামূলক ক্যাম্প। ‘সন্ধ্যে হলেই মশার উৎপাতে দরজা, জানলা খোলার উপায় উপায় থাকছে না। মশার কামড়ে পরিত্রাহি অবস্থা’
আরও এক নিউটাউনের এডি ব্লকের বাসিন্দা জানান , ‘মশার উৎপাতে প্রাণ ওষ্ঠাগত। দিনে দুপুরে যখন তখন হুল ফোটাচ্ছে মশা। সন্ধ্যের পরে দোকান-বাজার পর্যন্ত করা যাচ্ছে না।’ শ্যামল গঙ্গোপাধ্যায়, সুখবৃষ্টি আবাসনের বাসিন্দা জানান, ‘মাস তিনেক আগে তিনজন ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়েছিলেন। তবে এই মুহূর্তে ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা শূন্য। মশার উৎপাত রুখতে যা যা করণীয়, করা হচ্ছে।’
আরও পড়ুন – ‘‘কলেজ স্ট্রিট বইপাড়া সংলগ্ন একাধিক রাস্তার ফুটপাত ব্যবসায়ীদের দখলে, সরব শাসক দলের…
এক নজরে নিউ টাউন ব্লক আবাসনের সংখ্যা জেনে নেওয়া যাক, মোট ব্লক: ২৭টি, আবাসন: ৬০-এর বেশি, জনসংখ্যা: দেড় লক্ষের কাছাকাছি