গঙ্গার ঘাট নিয়ে কলকাতা পুরসভার কাছে কৈফিয়ত তলব, তথ্য চেয়েছিলেন ‘ন্যাশনাল মিশন ফর ক্লিন গঙ্গা’ কর্তৃপক্ষ। আদালতের নির্দেশেই এনএমসিজি কর্তৃপক্ষ গঙ্গার ঘাটের পরিস্থিতি সম্পর্কে জানতে চেয়েছিলেন। কিন্তু কলকাতা পুরসভা বা রাজ্য সরকারের তরফে কোনও উত্তর পাওয়া যায়নি বলে আদালতে জানান তাঁরা। এমনিতে এই মামলার অন্য বিষয়গুলি নিয়ে আদালতে নিজেদের বক্তব্য জানিয়েছে পুরসভা। কিন্তু আদালত মন্তব্য করেছে, তাদের দেওয়া জবাবে এনএমসিজি-র প্রশ্নের উত্তর নেই।
অথচ অনেকেই মনে করছেন, এ ব্যাপারে সব পক্ষের কাছ থেকে ঠিক তথ্য পাওয়া প্রয়োজন। মামলার আবেদনকারীর পক্ষের আইনজীবী পৌষালি বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘মামলাটি শুধু গঙ্গার ঘাট সংলগ্ন এলাকার পরিচ্ছন্নতার পরিধিতে সীমাবদ্ধ নেই। গঙ্গা তীরবর্তী অঞ্চলের পরিচ্ছন্নতার বিষয়টিও জড়িত।’’ মামলার পরবর্তী শুনানি ১৬ মার্চ।
আরও পড়ুন – পুরনো গাড়ি বাতিল এবং নতুন গাড়ি নথিভুক্তরণ আরও কঠোর করল পরিবহণ দফতর।
প্রসঙ্গত, গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে কলকাতার গঙ্গার ঘাটগুলির দুরবস্থা নিয়ে মামলা হয়েছিল পরিবেশ আদালতে। আবেদনে জানানো হয়েছিল, আহিরীটোলা, নিমতলা, সুতানুটি, কুমোরটুলি, কাশীপুর ও মায়ের ঘাট— এই ছ’টি ঘাটে যত্রতত্র আবর্জনা পড়ে থাকে। শুধু তা-ই নয়, বিপুল পরিমাণ অশোধিত তরল বর্জ্য যে প্রতিদিন গঙ্গায় মিশছে, সে কথাও বলা হয়েছিল। কেন্দ্রীয় দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের তথ্য অনুযায়ী, কলকাতা-সহ সমগ্র পশ্চিমবঙ্গে দৈনিক ৫৪৫.৭০ কোটি লিটার তরল বর্জ্য উৎপন্ন হয়। সেখানে বর্তমান নিকাশি প্লান্টের শোধন ক্ষমতা দৈনিক ৮৯.৭০ কোটি লিটার। প্রস্তাবিত নিকাশি প্লান্টের দৈনিক শোধন ক্ষমতা ৩০.৫ কোটি লিটার। অর্থাৎ, দু’টি নিকাশি প্লান্টের সম্মিলিত শোধন ক্ষমতা দৈনিক ১২০.২ কোটি লিটার। কিন্তু পর্ষদের তথ্য জানাচ্ছে, এর মধ্যে বাস্তবে দৈনিক শোধন হয় মাত্র ২১.৩ কোটি লিটার বর্জ্য। বাকিটা অশোধিত অবস্থাতেই গঙ্গায় মেশে। এই তথ্যের পরিপ্রেক্ষিতে আদালত উষ্মা প্রকাশ করে জানায়, এই অশোধিত তরল বর্জ্যের কারণে কলকাতার কয়েক লক্ষ বাসিন্দার স্বাস্থ্য বিপন্ন হতে বসেছে। এর পরেই কলকাতা পুরসভা, এনএমসিজি, শ্যামাপ্রসাদ মুখার্জি বন্দর, হাওড়া পুরসভা, রাজ্য পুর ও নগরোন্নয়ন দফতর-সহ মামলার সঙ্গে যুক্ত সব পক্ষকে বক্তব্য জানাতে বলে পরিবেশ আদালত।