প্রতি বিন্দু রক্তপাতের জন্য দায়ী নির্বাচন কমিশন, মন্তব্য রাজ্যপালের , প্রত্যেক বিন্দু রক্তের জন্য দায়ী রাজ্য নির্বাচন কমিশন, কড়া মন্তব্য রাজ্য়পালের। রাজ্য নির্বাচন কমিশনার রাজীব সিনহার নিয়োগ সংক্রান্ত যে রিপোর্ট তা ফেরত পাঠানোর পর এবার কড়া মন্তব্য রাজ্যপালের। বুধবারই রাজভবন থেকে রাজ্য নির্বাচন কমিশনার রাজীব সিনহার জয়েনিং রিপোর্ট সই না করেই ফিরিয়ে দিয়েছেন রাজ্যপাল, এমনই খবর সামনে আসে। বৃহস্পতিবার সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে রাজ্যপাল বোস বলেন, “আমি রাজ্য নির্বাচন কমিশনারকে নিয়োগ করেছিলাম। বিশ্বাস রেখেছিলাম, তিনি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের আয়োজন করবেন। কিন্তু দেখলাম মানুষ হতাশ।” রাজ্যের সাংবিধানিক প্রধানের এ হেন মন্তব্যে স্পষ্ট, তাঁর কাছে অন্তত রাজ্য নির্বাচন কমিশনের ভূমিকা অত্যন্ত নেতিবাচক। রাজ্য নির্বাচন কমিশন তার দায়িত্ব কর্তব্য পালন করেনি। রাজ্যপাল বলেন, ‘দেয়ার ইজ ব্লাড শেড’। অর্থাৎ রক্তের স্রোত বইছে এবং প্রতি রক্তবিন্দুর জন্য রাজ্য নির্বাচন কমিশন দায়ী। নাম না করে কার্যত কমিশনের যিনি প্রধান, সেই রাজ্য নির্বাচন কমিশনার রাজীব সিনহার দিতেই আঙুল রাজ্যপাল বোসের।
নির্বাচনের দিন ঘোষণার পর মনোনয়নপর্ব শুরু হতেই রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় হিংসার অভিযোগ আসে। সিংহভাগ ক্ষেত্রেই বিরোধীরা অভিযোগ করে, তাদের সদস্যদের মনোনয়নদানে বাধা দিচ্ছে শাসকদল। এ নিয়ে মারামারি, গুলি-বোমা তো চলেই, প্রাণও গিয়েছে। দক্ষিণ ২৪ পরগনার ভাঙড়ের ছবি ছিল ভয়াবহ। ক্যানিং, বর্ধমান, মুর্শিদাবাদেও হিংসার অভিযোগ ওঠে।
মনোনয়ন দাখিলের দিন শেষ হওয়ার পর মনোনয়ন প্রত্যাহার পর্বেও হিংসা, হুমকি, হানাহানির অভিযোগে বিদ্ধ শাসকদল। মনোনয়ন তুলতে চাপ দিয়ে কোথাও বিরোধী প্রার্থীকে অপহরণের অভিযোগ ওঠে, কোথাও আবার বিরোধী প্রার্থীর বাড়িতে সাদা শাড়ি, ফুলের মালা পাঠানোরও অভিযোগ তোলা হয়। এসবের মধ্যেই কেন্দ্রীয়বাহিনী দিয়ে রাজ্যে পঞ্চায়েত ভোটের নির্দেশ দিয়েছে আদালত।
তবে এরপরও রাজ্য নির্বাচন কমিশনের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন যেন থামছেই না। এবার প্রকাশ্যে রাজ্যপালও কমিশনারের প্রতি নিজের অনাস্থার কথা বুঝিয়ে দিলেন। একইসঙ্গে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে, এবার কি তবে পদ থেকে সরে দাঁড়াবেন রাজ্য নির্বাচন কমিশনার রাজীব সিনহা? এ নিয়ে যদিও বৃহস্পতিবার সকালেই কমিশনার নিজের অবস্থান স্পষ্ট করেছেন। বলেছেন, তিনি সরছেন না। অর্থাৎ কমিশন ও রাজভবনের দড়ি টানাটানি আপাতত বহাল।
আরও পড়ুন – কেন্দ্রের কাছে ৮০০ কোম্পানি বাহিনী চেয়ে চিঠি রাজীবের
মাঝে আর ২ সপ্তাহ বাকি।৮ জুলাই ত্রিস্তরীয় পঞ্চায়েত নির্বাচন। তার আগে কমিশন-রাজ্যপাল সংঘাত চরমে। ইতিমধ্য়েই আদালতে নির্বাচন কমিশনারের ভূমিকা প্রশ্নের মুখে পড়েছে। বিরোধীরা বলছে, কমিশনের উপর আস্থা হারাচ্ছেন মানুষ।এত রক্তপাত,হিংসা দেখে হাইকোর্টও ইতিমধ্যেই বলেছে,এভাবে চললে নির্বাচন বন্ধ করা উচিত।এবার রাজ্যপালের বক্তব্যেও কমিশনের বিরুদ্ধে ক্ষোভের সুর।