পুলিশের ‘রুটমার্চ’ চলছে বীরভূমের গ্রামে গ্রামে, এই প্রক্রিয়াকে রুটমার্চ বলতে নারাজ পুলিশ প্রশাসন। বীরভূমে গ্রামে গ্রামে পুলিশের ‘রুটমার্চ’? আমজনতার আস্থা ফেরানোর চেষ্টা? বরং অভিযুক্তদের ধরতে পুলিশের ‘বিশেষ অভিযান’ হিসেবেই ব্যাখ্যা করা হচ্ছে। রুটমার্চ সাধারণত দেখা যায় ভোটের আগে। কিন্তু ভোট-হীন কোনও গ্রামে রুটমার্চ সচরাচর শোনা যায় না। তবে এবার এমনই দৃশ্য ধরা পড়ল বীরভূমে (Birbhum)। গ্রামে গ্রামে ঘুরছে বিশাল পুলিশ বাহিনী। নজরদারি চালাচ্ছে বীরভূম জেলা পুলিশ। কেন হঠাৎ করে এই টহলদারি পুলিশের? সূত্র মারফত জানা যাচ্ছে, এলাকায় অপরাধ ঠেকাতেই এই টহলদারি। গ্রামে গ্রামে কড়া নজরদারি চালাচ্ছে জেলা প্রশাসন। চলছে ধরপাকড়ও। ইতিমধ্যেই ৩০ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে জানা যাচ্ছে। পুলিশের এমন তৎপরতায় স্বাভাবিকভাবেই খুশি গ্রামবাসীরা। বিশেষ করে পঞ্চায়েত ভোটের আগে পুলিশের এমন সক্রিয়তায় স্বস্তি ফিরছে গ্রামবাসীদের মনে। যদিও এই প্রক্রিয়াকে রুটমার্চ বলতে নারাজ পুলিশ প্রশাসন। বরং অভিযুক্তদের ধরতে পুলিশের ‘বিশেষ অভিযান’ হিসেবেই ব্যাখ্যা করা হচ্ছে।
প্রসঙ্গত, সাম্প্রতিক অতীতে বীরভূমের একাধিক ঘটনায় বেশ অস্বস্তিতে পড়তে হয়েছিল রাজ্যের শাসক দলকে। বিশেষ করে অনুব্রত মণ্ডল গ্রেফতারি পরবর্তী সময়ে জেলায় একাধিক গোষ্ঠী কোন্দলের অভিযোগ উঠে এসেছে। সম্প্রতি মাড়গ্রামে বিস্ফোরণের ঘটনা শাসকের অস্বস্তি আরও বাড়িয়েছিল। বিস্ফোরণে মৃত্যু হয়েছিল স্থানীয় পঞ্চায়েত প্রধানের ভাই লাল্টু শেখ সহ দুই জনের। সেই ঘটনা শোরগোল পড়ে গিয়েছিল রাজ্য রাজনীতিতে। প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছিল পুলিশ প্রশাসনের ভূমিকা নিয়েও। এরই মধ্যে কাকতালীয়ভাবে বদলি হয়ে যায় প্রাক্তন পুলিশ সুপার নগেন্দ্রনাথ ত্রিপাঠি। বীরভূম জেলা পুলিশ সুপার হিসেবে দায়িত্ব দেওয়া হয় ভাস্কর মুখোপাধ্যায়কে। এমন অবস্থায় সাধারণ মানুষের মনে আস্থা ফেরানোর চেষ্টা? সেই প্রশ্নও ঘুরপাক খেতে শুরু করেছে ইতিমধ্যে।
আরও পড়ুন – নিরাপত্তা আরও জোরদার কালীঘাটে মুখ্যমন্ত্রী মমতার বাড়িতে,৫৬ লক্ষ টাকা খরচ করে জরদারি…
সম্প্রতি বীরভূমের পুলিশ সুপার বদলি হয়েছে। বীরভূম জেলার নতুন পুলিশ সুপার হয়েছেন ভাস্কর মুখোপাধ্যায়। নতুন পুলিশ সুপার দায়িত্বে আসার পর পুলিশের এই সক্রিয়তায় মনে ভরসা পাচ্ছেন জেলার সাধারণ মানুষজনও। প্রসঙ্গত, বীরভূমের দোর্দণ্ডপ্রতাপ তৃণমূল নেতা অনুব্রত মণ্ডল বর্তমানে জেলবন্দি। এখনও জামিন মেলেনি তাঁর। এমন অবস্থায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়ে দিয়েছেন, তিনি নিজে এই জেলার উপর নজর রাখবেন। আর এখানেই প্রশ্ন উঠছে, তাহলে কি মুখ্যমন্ত্রী বার্তার প্রভাব পড়ছে জেলায়? সেই কারণেই কি পুলিশের এত কড়া টহলদারি?