‘রাত অবধি খোঁজ নিয়েছেন অভিষেক’, বিদ্যুৎগতিতে বৈঠকে অরূপ! ছুটি বাতিল দফতরের, বুধবার রাতে প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের জেরে বিদ্যুৎবিভ্রাটে বিপর্যস্ত হয়েছে উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন জেলা। সমস্যা সমাধানে ‘এক ডাকে অভিষেক’ হেল্পলাইন নম্বরে ফোন করে তাঁদের অসহায় পরিস্থিতির কথা জানিয়েছিলেন সেখানকার বাসিন্দারা। খবর পেয়ে উদ্যোগী হয়ে তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক তথা সাংসদ অভিষেক ফোন করে দ্রুত পদক্ষেপ করার কথা বলেছিলেন বিদ্যুৎমন্ত্রী অরূপ বিশ্বাসকে। অতঃপর বিদ্যুৎমন্ত্রী দফতরের আধিকারিকদের নির্দেশ দিয়েছিলেন পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে।
দফতর সূত্রের খবর, মন্ত্রী নির্দেশ দিয়েছেন উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার চলাকালীন সমগ্র রাজ্য জুড়ে ঝড়বৃষ্টির যে পূর্বাভাস রয়েছে, সে বিষয়ে প্রস্তুত থেকে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ পরিষেবা বজায় রাখতে হবে। দফতরের সমস্ত কর্মী যেন সতর্ক থাকেন। সেই কারণেই আগামী ২৮ মার্চ পর্যন্ত বিদ্যুৎ দফতরের সমস্ত আধিকারিক এবং কর্মীর ছুটিও বাতিল করা হয়েছে। বৈঠকের পরে অরূপ বলেন, ‘‘দার্জিলিং, কালিম্পং, জলপাইগুড়ি, আলিপুরদুয়ার ও কোচবিহার জেলায় ১৫ মার্চ সন্ধ্যায় ঝড় ও শিলাবৃষ্টির কারণে বিদ্যুৎ সরবরাহ ব্যবস্থার ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। এখনও পর্যন্ত যা খবর পাওয়া গিয়েছে, তাতে দেখা যাচ্ছে প্রায় ১০০টি বিদ্যুতের খুঁটি ভেঙেছে, প্রায় ২৫০টি জায়গায় লাইনে গাছ পড়ে তার ছিঁড়ে গেছে, বজ্রপাতে ‘ইনসুলেটার’ নষ্ট হয়েছে বহু জায়গায়। যুদ্ধকালীন তৎপরতায় ৩০০-র বেশি বিদ্যুৎকর্মী ও অফিসার কাজে নেমে বিদ্যুৎ সরবরাহ ব্যবস্থা স্বাভাবিক করতে কাজ করছেন।’’ বিদ্যুৎ দফতরের কন্ট্রোল রুমের ফোন নম্বরও জানিয়ে দিয়েছেন মন্ত্রী অরূপ। সেখানে ফোন করলেই সহযোগিতা করবে বিদ্যুৎ দফতর।
উল্লেখ্য, বুধবার বিকেলে জলপাইগুড়ি শহর-সহ গোটা ডুয়ার্সে আছড়ে পড়ে কালবৈশাখী ঝড়। আবহাওয়া দফতরের পূর্বভাস অনুযায়ীই ডুয়ার্স জুড়ে শুরু হয় কালবৈশাখীর দাপট। ঝোড়ো হাওয়ার সঙ্গে বজ্র-বিদ্যুৎ, সেই সঙ্গে বিক্ষিপ্ত ভাবে শিলাবৃষ্টি হয় ডুয়ার্সের বিভিন্ন জায়গায়। বিভিন্ন জায়গায় গাছ ভেঙে পড়ে। ফসলেরও ব্যাপক ক্ষতি হয়। বহু এলাকা বিদ্যুৎহীন হয়ে পড়ে।
এর পরেই স্থানীয় মানুষজন সাহায্যের আর্জি জানান ‘এক ডাকে অভিষেক’-এ। ফলও মেলে হাতেনাতে। রাতেই উদ্যোগী হয়ে কাজ শুরু করে বিদ্যুৎ দফতর। বুধবার রাতেই টুইটারে অভিষেক লেখেন, ‘ঝড়বৃষ্টির ফলে বিদ্যুৎবিভ্রাট নিয়ে সাহায্যের আর্জি জানিয়ে জরুরি ভিত্তিতে এক ডাকে অভিষেক-এ ফোন করেছিলেন আলিপুরদুয়ার, কোচবিহার এবং জলপাইগুড়ির বাসিন্দারা। উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার্থীদের কথা মাথায় রেখে আমি বিদ্যুৎমন্ত্রী অরূপ বিশ্বাসের সঙ্গে কথা বলি। ২৫০ জনেরও বেশি কর্মী কাজে লেগে পড়েছেন। আগামী ৬ থেকে ৮ ঘণ্টার মধ্যে বিষয়টির সুরাহা হয়ে যাবে। আমি এটা দেখে আনন্দিত যে, জনগণের সঙ্গে সংযোগস্থাপনের এই উদ্যোগ মুহূর্তেই তাঁদের সমস্যা সমাধানের সুযোগ করে দিচ্ছে আমাদের।’
আরও পড়ুন – CBI কি তদন্ত করতে জানে না? এজলাসে বিচারকের তীব্র ভর্ৎসনার মুখে অফিসার
বুধবার রাতের পরে বৃহস্পতিবার আবার সেই সংক্রান্ত বিষয়ে বিদ্যুৎভবনে জরুরি বৈঠক করেন মন্ত্রী। বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন বিদ্যুৎ দফতরের অতিরিক্ত মুখ্যসচিব সুরেশ কুমার, পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য বিদ্যুৎ বন্টন সংস্থার চেয়ারম্যান শান্তনু বসু ও বিদ্যুৎ দফতরের অন্যান্য উচ্চপদস্থ কর্তারা। দূরবর্তী বিভিন্ন জেলার বিদ্যুৎ দফতরের আধিকারিকদের সঙ্গে ভিডিয়ো কনফারেন্স মারফত কথা বলেন মন্ত্রী অরূপ। বৈঠকে উত্তরবঙ্গের বিদ্যুৎ পরিস্থিতি দ্রুত স্বাভাবিক করার পাশাপাশি আসন্ন ঝড়বৃষ্টির মরসুমে প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি রাখারও নির্দেশ দিয়েছেন মন্ত্রী।