Deprecated: version_compare(): Passing null to parameter #2 ($version2) of type string is deprecated in /home/u517603494/domains/shinetv.in/public_html/wp-content/plugins/elementor/core/experiments/manager.php on line 170
ধাপার ভাগাড়ে যাওয়া নিষিদ্ধ, তা হলে কী করে গেলেন ওঁরা?

বাজ পড়ে দু’জনের প্রাণ যেতেই উঠেছে প্রশ্ন, ধাপার ভাগাড়ে যাওয়া নিষিদ্ধ, তা হলে কী করে গেলেন ওঁরা?

বাজ পড়ে দু’জনের প্রাণ যেতেই উঠেছে প্রশ্ন, ধাপার ভাগাড়ে যাওয়া নিষিদ্ধ, তা হলে কী করে গেলেন ওঁরা?

Facebook
Twitter
LinkedIn
Email
WhatsApp
Print
Telegram

বাজ পড়ে দু’জনের প্রাণ যেতেই উঠেছে প্রশ্ন, ধাপার ভাগাড়ে যাওয়া নিষিদ্ধ, তা হলে কী করে গেলেন ওঁরা? কাদাগোলা জল নেমে আসছে। দুর্গন্ধে টেকা দায়। অনেক নীচ দিয়ে উড়ছে চিল-শকুনের দল! এর মধ্যেই কাদায় এঁটে যাওয়া চাকা ঠেলে আবর্জনার পাহাড়ে উঠছে ময়লা-বোঝাই সব লরি। সেগুলিরই কোনওটিতে প্লাস্টিক মাথায় দিয়ে বসে জনা দশেক মহিলা-পুরুষ, কোনওটিতে ঝুলে ঝুলে যাচ্ছেন তরুণ-তরুণী। সকলেরই গন্তব্য, ধাপার আবর্জনার পাহাড়!

 

 

 

 

 

এক পরিবেশ বিজ্ঞানীর কথায়, ‘‘ভাগাড়ের বিপুল আবর্জনার মধ্যে মিথেন-সহ বিভিন্ন গ্রিন হাউস গ্যাস উৎপন্ন হয়। যার উপস্থিতিতে আগুনও ধরে যায় সেখানে। এমন পরিবেশে বজ্রপাত হলে তার ভয়াবহতা ও ক্ষতির আশঙ্কা অন্য জায়গা থেকে স্বাভাবিক ভাবেই বেশি হবে।’’ অভিযোগ উঠেছে, তবুও সচেতন হননি কলকাতা পুরসভা কর্তৃপক্ষ। যে কারণে ওই রকম ঝুঁকিপ্রবণ স্থানে অনায়াসে নিত্যদিন যাতায়াত করেন পালানিরা।

 

 

অথচ, খাতায়-কলমে কলকাতা পুরসভার ধাপার ভাগাড়ে বিনা অনুমতিতে কারও প্রবেশাধিকার নেই! সেখানে পালানি, কাজলা, সন্ন্যাসীরা গেলেন কী ভাবে? প্রসঙ্গত, এই ধাপাই করোনা রোগীদের মৃতদেহ সৎকার ঘিরে খবরের শিরোনামে উঠে এসেছিল। খোঁজ করে জানা গেল, মাঠপুকুর মোড় থেকে ধাপার ভাগাড় পর্যন্ত নিরাপত্তার বালাই নেই। পুলিশ তো দূর, পুরসভার কর্মীদেরও দেখা নেই! এমনকি, স্থানীয় মানুষ পুরসভার আবর্জনার গাড়িতে চড়েই পৌঁছে যান পাহাড়ে। দীর্ঘ বছর ধরে ওই চত্বরে খোলাখুলি চলে আবর্জনা থেকে প্লাস্টিক বাছাইয়ের ব্যবসা। প্লাস্টিক এবং কেব্‌ল এখানে বিনা বাধায় পোড়ানো হয়। কুড়িয়ে আনা সামগ্রী ওই চত্বরেই বিক্রি হয় ১০-১৮ টাকা কেজি দরে। দৈনিক ২০০-২৫০ টাকা আয় করতেই জীবন বাজি রাখেন ওঁরা।

 

 

 

পালানির সঙ্গেই শুক্রবার কাজে যাওয়া বিকাশ মণ্ডল নামে এক যুবক নিয়ে গেলেন সেখানে। দেখা গেল, ভাগাড়ের মুখে লরি ওজন করার লম্বা লাইন। বিকাশ জানান, এই জায়গা পেরোতে পারলেই উপরে ওঠার তেমন বাধা থাকে না। ভাগাড়ের গেট থেকে বেরিয়ে বাঁ দিকে কোভিডে মৃতদের দেহ সৎকারের পুরসভার চুল্লি পার করে উঠে যেতে হয় ধাপার পাহাড়ে। শুক্রবার বৃষ্টির পরে কাদায় মাখা সেই রাস্তা আরও ভয়ঙ্কর। চাকা পিছলে যাচ্ছে বার বার। কোনও মতে উপরে উঠতেই লরি থেকে নেমে পড়েন পালানি, সন্ন্যাসীরা। শুরু হয় প্রতিযোগিতা!

 

 

 

প্লাস্টিক কুড়িয়ে যে যত বেশি ওজন নামাতে পারবেন, তাঁর আয় তত। সেখানে না আছে বসার জায়গা, না আছে আশ্রয়স্থল! খুকি মণ্ডল নামে এক মহিলা বললেন, ‘‘এই গামছাই আমাদের বড় ভরসা। জল খেতেও তিন কিলোমিটার নামতে হয়।’’ কাদায় দাঁড়িয়েই রেহানা বিবি বললেন, ‘‘কাল যখন বাজ পড়ে, ওরা বেঁচে ছিল। ডাম্পার গাড়িতে তুলে নিয়ে যেতে যেতেই সব শেষ। এই পাঁক পেরিয়ে তাড়াতাড়ি নিয়ে যাওয়া যায়নি।’’

 

 

 

কলকাতা পুরসভার মেয়র পারিষদ (জঞ্জাল অপসারণ) দেবব্রত মজুমদার দাবি করলেন, ‘‘যথেষ্ট নজরদারি চলে। তার পরেও যদি এই ভাবে ওখানে উঠে গিয়ে কারও মৃত্যু হয়, সেই দায় কে নেবে? পুরসভায় বলব বিষয়টা, যাতে আরও কড়াকড়ি হয়।’’ প্রশ্নটা থেকেই যাচ্ছে, আবর্জনা ঘিরে ব্যবসার যে বিশাল সাম্রাজ্য, তাতে পাঁকে-চক্রে দু’জনের মৃত্যুতে কি কিছু বদলাবে?

 

 

আরও পড়ুন – আসন্ন লোকসভা ভোটেও লড়বেন প্রাক্তন কুস্তিকর্তা ব্রিজভূষণ, বললেন বিজেপি জিতবে

 

 

 

শুক্রবার সন্ধ্যায় সেখানেই কাজ করতে গিয়ে বজ্রাঘাতে মৃত্যু হয়েছে পালানি মণ্ডল (২৪) এবং কাজলা নস্কর (৫৮) নামে দুই মহিলার। সন্ন্যাসী মণ্ডল নামে বছর ষাটেকের আর এক জন শনিবারও ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। সন্ন্যাসীর ছেলে প্রদীপ মণ্ডল এ দিন বলেন, ‘‘বজ্রাঘাতের পর থেকে বাবা কানে ভাল শুনতে পাচ্ছেন না। বার বার ওখানে যেতে বারণ করি। বাবা যে বেঁচে গিয়েছেন, এটাই বড় কথা! ওখানে মাথা গোঁজারও তো জায়গা নেই!’’

RECOMMENDED FOR YOU.....

Scroll to Top