বাজারে টাস্ক ফোর্সের অভিযানের পরেও দাম কি কমেছে ? কি বলছেন ক্রেতারা, মূলত খাদ্য সামগ্রীর দাম আচমকা অনেকটা বেড়ে গেলে বিভিন্ন বাজার পরিদর্শনে গিয়ে বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে সেই দাম নিয়ন্ত্রণে আনতে টাস্ক ফোর্স গড়েছিলেন মুখমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তার পরে কেটে গিয়েছে ১০ বছর। কিন্তু দাম নিয়ন্ত্রণে আনতে টাস্ক ফোর্স কতটা কার্যকরী ভূমিকা পালন করছে, প্রশ্ন উঠছে তা নিয়েই। যেমন হয়েছে এ বার, আনাজের লাগামছাড়া দাম বৃদ্ধির ক্ষেত্রে। উল্লেখ্য, সরকারি টাস্ক ফোর্সের চেয়ারপার্সন মুখ্যমন্ত্রী নিজে। কিন্তু তিনি অসুস্থ থাকায় তাঁর নির্দেশে গত পয়লা জুলাই রাজ্যের মুখ্যসচিব নবান্নে ব্যবসায়ী সংগঠনগুলির প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক করেন। উদ্দেশ্য ছিল একটাই, আনাজের দাম নিয়ন্ত্রণ করা।
বৈঠকের পরে গত ৩ জুলাই থেকে টাস্ক ফোর্সের সদস্যেরা শহরের বিভিন্ন বাজার পরিদর্শনে যাচ্ছেন। তাঁদের সঙ্গে থাকছেন কলকাতা পুলিশের এনফোর্সমেন্ট শাখার গোয়েন্দারা। কিন্তু ক্রেতারাই বলছেন, অভিযান চালানোর প্রায় দু’সপ্তাহ পরেও আদা, লঙ্কা থেকে শুরু করে বিভিন্ন আনাজের দাম এখনও কমেনি। মঙ্গলবার টাস্ক ফোর্সের সদস্যেরা গড়িয়াহাট বাজারে গিয়েছিলেন। সেখানে এক ব্যবসায়ী কেজিপ্রতি ৩০০ টাকায় আদা বিক্রি করছেন শুনে তাঁকে কার্যত হুঁশিয়ারি দিয়ে টাস্ক ফোর্সের অন্যতম সদস্য কমল দে জানতে চান, কেন এখনও এত দামে আদা বিক্রি হচ্ছে? ওই বিক্রেতা জানান, তিনি যেখান থেকে আদা কিনেছেন, সেখানেই দাম খুব চড়া। বাধ্য হয়ে তাঁকে এত দামে আদা বেচতে হচ্ছে। সেই উত্তর শুনে আর কিছু বলেননি টাস্ক ফোর্সের সদস্যেরা।
‘ফোরাম অব ট্রেডার্স অর্গানাইজ়েশন’-এর সাধারণ সম্পাদক তথা টাস্ক ফোর্সের আর এক সদস্য রবীন্দ্রনাথ কোলে বলেন, ‘‘মণিপুরে অশান্ত পরিস্থিতির জন্য সেখান থেকে আদা আসছে না। আবার আমাদের রাজ্যে এ বার তেমন ভাবে লঙ্কা চাষ হয়নি। তাই কর্নাটক থেকে লঙ্কা এলেও তার কালোবাজারি চলছে। কালোবাজারি রুখতে আমরা পদক্ষেপ করেছি। আশা করছি, দিন দশেকের মধ্যে দাম কমবে।’’
সরকারি এই টাস্ক ফোর্সের সদস্য রাজ্যের কৃষি বিপণন মন্ত্রী বেচারাম মান্নাও। তাঁর যুক্তি, ‘‘টাস্ক ফোর্স অভিযান চালানোর পরে আনাজের দাম বেশ খানিকটা কমেছে। আরও অভিযান চালানো হলে দাম পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে আসবে।’’ যদিও মন্ত্রীর এই যুক্তির সঙ্গে সহমত হতে পারছেন না ক্রেতারা। দাম কবে পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে আসবে, সেটাই এখন লাখ টাকার প্রশ্ন তাঁদের কাছে।
আরও পড়ুন – নবান্নে জরুরি বৈঠক, কী নিয়ে আলোচনা বিএসএফের আইজির সঙ্গে মুখ্যসচিবের
অন্যদিকে ক্রেতাদের একাংশের প্রশ্ন, ‘‘আনাজের দামই যদি না কমবে, তা হলে এত ঘটা করে বাজারে টাস্ক ফোর্সের হানা দেওয়ার দরকার কি?’’ এই প্রসঙ্গে কমল দে-র সাফাই, ‘‘আমাদের হাতে এমন কোনও আইন নেই, যার ভিত্তিতে বেশি দামে আনাজ বিক্রি করার জন্য আমরা সংশ্লিষ্ট বিক্রেতাকে গ্রেফতার করতে পারব। আমরা শুধু অনুরোধ-আবেদন করতে পারি মাত্র।’’