গত মঙ্গলবার স্পেন সফরের জন্য কলকাতা ছেড়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। আপাতত স্পেন সফর সেড়ে রয়েছেন দুবাইতে। আর এবার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিদেশ সফর বাবদ রাজ্যে সরকারের কত খরচ হল তা জানতে চাইলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। এই সংক্রান্ত তথ্য জানার অধিকার আইনে রাজ্যর পাবলিক ইনফরমেশন অফিসারের কাছে এ বিষয়ে তথ্য চেয়ে চিঠি পাঠিয়েছেন তিনি। শুভেন্দু চিঠি দিয়েছেন শিল্প, বাণিজ্য ও উদ্যোগ বিভাগকেও।
আরও পড়ুনঃ রোজকার খাবার তালিকায় রাখুন এই খাবার গুলি, সুস্থ থাকবেন আপনি
কেন এমন চিঠি?
বৃহস্পতিবার সকালে নিজের টুইটার হ্যান্ডেলে তার ব্যাখ্যাও দিয়েছেন বিরোধী দলনেতা। শুভেন্দু লিখেছেন, “গত ১২ সেপ্টেম্বর থেকে বিদেশ সফরে রয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। সপার্ষদ মুখ্যমন্ত্রীর ১১ দিনের এই ‘অফিসিয়াল’ ট্রিপের খরচ এবং তাঁর সফরসঙ্গীদের জন্য যে পরিমাণ খরচ হয়েছে তা নিয়ে মানুষের মনে নানা প্রশ্ন রয়েছে। বিরোধী দলের একজন দায়িত্বশীল নেতা হিসেবে আমি রাজ্যের কাছে এবিষয়ে বিস্তারিত তথ্য চেয়ে জানতে চেয়েছি, এই বিপুল পরিমাণ অর্থ খরচ করে রাজ্যের কি লাভ হল?”
মুখ্যমন্ত্রীদের বিদেশ সফর নয়। অতীতে জ্যোতি বসু, বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য বিদেশ সফরে গিয়েছেন। অন্য রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীরাও লগ্নির সন্ধানে বিদেশ সফরে যান। গুজরাতের মুখ্যমন্ত্রী থাকাকালীন নরেন্দ্র মোদীও বহুবার বিদেশ সফর করেছেন।
প্রাক্তন আমলাদের অনেকের মতে, বিদেশ সফরের ফলে কত লগ্নি এল তা মানুষের জানার আগ্রহ থাকতেই পারে। খরচ নিয়েও কৌতূহল থাকতে পারে। কিন্তু একটা কথা তাঁদেরও বুঝতে হবে, মুখ্যমন্ত্রী, মন্ত্রী এবং আমলাদেরও এক্সপোজার দরকার। তাঁরা যদি অন্য রাজ্যে বা বিদেশে গিয়ে পরিকাঠামো বা পরিষেবার ধরণ তথা বেস্ট প্র্যাকটিসেস না দেখেন, তা হলে তাঁদের সম্যক ধারণা তৈরি হয় না। কুঁয়োর ব্যাঙ হয়ে থাকলে অগ্রগতি সম্ভব নয়। বরং উন্নয়ন দেখেই উন্নয়নের আগ্রহ তৈরি হয়। ঠিক যেমন বিদেশে সফরের পর অনেকের মনে হয়, পশ্চিমবঙ্গ যদি এমন হতো!
তবে শুভেন্দুরা সেই প্রশ্ন তোলেননি। তাঁদের মৌলিক আগ্রহ সফরের খরচ নিয়ে। গত কয়েকদিন ধরে নিয়ম করে প্রতিটি জায়গায় শুভেন্দু দাবি করেছেন, মুখ্যমন্ত্রীর স্পেন সফরে অফিসিয়ালি ২০ কোটিরও বেশি টাকা খরচ হয়েছে। এমনকি স্পেনে দাঁড়িয়ে শালবনিতে জিন্দলদের ফেলে রাখা জমিতে আড়াই হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের ইস্পাত প্রকল্পের ঘোষণাকেও ‘ঢপের চপট বলে কটাক্ষ করেছেন তিনি।
রাজ্য শিল্প দফতরের দাবি, স্পেনের একাধিক শিল্প সংস্থা ইতিমধ্যেই বাংলায় শিল্পস্থাপনে বিনিয়োগের বিষয়ে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। আজ বৃহস্পতিবার দুবাইয়ে রয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। সেখানেও বিনিয়োগকারীদের সঙ্গে তাঁর সবিস্তার কথা হবে। বিশেষ করে লুলু গ্রুপের সঙ্গে বৈঠক নিয়ে আগ্রহ রয়েছে নবান্নের। বিরোধী দলনেতা এদিন বলেন, “আমি নিয়মমাফিক তথ্যের অধিকার আইনে তথ্য চেয়েছি সরকারের থেকে। এ ব্যাপারে নবান্ন সহযোগিতা না করলে আদালতে জনস্বার্থ মামলা দায়ের করব।”