রেটকার্ড চাই না সেফগার্ড? নাম না করে মমতা-লালুকে আক্রমণ প্রধানমন্ত্রীর,বাংলায় অর্থের বিনিময়ে চাকরি কেলেঙ্কারি নিয়ে, নাম না করে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে তীব্র আক্রমণ করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। শুধু মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নয়, একইসঙ্গে তিনি নাম না করে বিদ্ধ করেছেন জমির বদলে চাকরি কেলেঙ্কারিতে অভিযুক্ত প্রাক্তন রেলমন্ত্রী লালুপ্রসাদ যাদবকেও। মঙ্গলবার নয়াদিল্লি থেকে ভার্চুয়ালি রোজগার মেলার উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী মোদী। ৭০,০০০ নিয়োগপত্র বিতরণের পর, এই অনুষ্ঠানে ভাষণ দিতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী মোদী বলেন, পূর্ববর্তী সরকারগুলি কর্মসংস্থান সৃষ্টি বা শিক্ষার দিকে মনোনিবেশ করেনি। তারা শুধুমাত্র দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত ছিল। এরপরই তিনি টেনে আনের ‘রেটকার্ডে’র প্রসঙ্গ। বাংলার নাম না করে তিনি অভিযোগ করেন রাজ্যে কাজ পেতে গেলেই কাটমানি দিতে হয়। পৃথক পৃথক কাজের জন্য আলাদা আলাদা ‘রেট’ অর্থাৎ কত টাকা দিতে হবে, তাও নির্ধারণ করা আছে। তিনি আরও দাবি করেন, এই বংশবাদী দলগুলির রেটকার্ডের বিপরীতে তাঁর সরকার, দেশের যুবদের চাকরি ‘সেফগার্ড’ করার চেষ্টা করছে। তাদের জন্য চাকরি সুরক্ষিত করার চেষ্টা করছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন “কয়েকদিন আগে আরও একটা মামলা সামনে এসেছে। এক প্রাক্তন রেলমন্ত্রী রেলে চাকরি দেওয়ার বিনিময়ে দরিদ্র কৃষকদের জমি কেড়ে নিয়েছেন। জমির বদলে চাকরি দেওয়ার এই মামলাটির তদন্ত করছে সিবিআই।” এরপরই তিনি জানান, এর থেকে দুটি বিষয় পরিষ্কার হয়ে গিয়েছে। একদিকে স্বজনপোষণকারী, বংশবাদী দলগুলি রয়েছে। তারা কর্মসংস্থানের নামে দেশের যুবদের লুন্ঠন করছে। তাদের কাছে কাটমানি, রেটকার্ডই সব। অন্যদিকে রয়েছে তাঁর সরকারের রাস্তা হল সেফগার্ড। যুব সমাজের উজ্জ্বল ভবিষ্যৎকে রক্ষা করার জন্য কাজ করে চলেছে তাঁর সরকার। শুধু নিয়োগ দুর্নীতিই নয়, এদিন প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যে উঠে এসেছে ভাষা বিতর্কের প্রসঙ্গও। তিনি জানান, দেশে কিছু কিছু দল ভাষার ভিত্তিতে দেশকে ভাগ করতে চাইছে। ভাষার ভিত্তিতে মানুষে মানুষে ভেদাভেদ করতে চাইছে, হিংসা ছড়াতে চাইছে। কিন্তু, তাঁর সরকার সবসময় চেষ্টা করে চলেছে, যাতে, দেশের যুব সমাজের স্বপ্ন পূরণের পথে ভাষা কোনও প্রতিবন্ধকতা না হয়ে দাঁড়ায়। এই লক্ষ্যেই প্রবেশিকা পরীক্ষা যে কোনও ভাষায় দেওয়ার ব্যবস্থা করেছে সরকার।
আরও পড়ুন – ‘সিবিআই অভিষেককে আটকে দিলে লোকসভায় প্রার্থীই দিতে পারবে না’, মন্তব্য করে জল্পনা…
রোজগার মেলায় ভার্চুয়াল ভাষণ দিতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “আমরা সংবাদমাধ্যমে দেখেছি, দেশের এক রাজ্যে নগদের বিনিময়ে চাকরি দেওয়ার কেলেঙ্কারি ধরা পড়েছে। তদন্তে গুরুতর কেলেঙ্কারি ধরা পড়েছে। সরকারি চাকরির প্রত্যেক পদের জন্য আলাদা আলাদা রেট ঠিক করা হয়েছে। এই রেটকার্ডের মাধ্যমে দরিদ্রদের লুঠ করা হচ্ছে। যদি সাফআইকর্মীর কাজ চান, তার জন্য আলাদা রেট। গাড়িচালকের কাজের আলাদা রেট। নার্স, কেরানি, শিক্ষক -প্রত্যেক পদের আলাদা আলাদা রেট নির্ধারণ করা হয়েছে।” কোনও বিশেষ রাজ্যের নাম না করলেও, প্রধানমন্ত্রী যে বাংলার নিয়োগ দুর্নীতির দিকেই ইঙ্গিত করেছেন, তা স্পষ্ট। শিক্ষক নিয়োগে দুর্নীতির তদন্ত করতে গিয়ে, সরকারি গ্রুপ সি এবং গ্রুপ ডি পদে নিয়োগের ক্ষেত্রেও বড়সড় দুর্নীতির সন্ধান পেয়েছে এনফোর্সমেন্ট ডাইরেক্টরেট। বর্তমানে সেই মামলার তদন্ত চলছে। বাংলার এই নিয়োগ দুর্নীতির পাশপাশি, লালুপ্রসাদ যাদব এবং তাঁর পরিবারের বিরুদ্ধে জমির বিনিময়ে রেলে চাকরি দেওয়ার অভিযোগ নিয়েও আক্রমণ শানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।