সরস্বতী পুজোর আগে কুল খেলে সত্যিই কি রুষ্ট হন সরস্বতী? কেন কুল খাওয়া যায় না?
আর মাত্রা দু-দিন তারপরেই সরস্বতী পুজো , আগামী ২৬ জানুয়ারি পালিত হবে সরস্বতী পুজো। মাঘ মাসের শুক্লপক্ষের পঞ্চমী তিথিতে পালিত হয় বসন্ত পঞ্চমী বা শ্রীপঞ্চমী। এই একই দিনে করা হয় বাগদেবীর আরাধনা। সরস্বতী পুজোর একটি অন্যতম প্রচলিত প্রথা হল যে পুজোর আগে কুল খেতে নেই। পুজোর আগেই এখন বাজার ছেয়ে গিয়েছে টোপা কুল ও নারকেলি কুলে। কিন্তু জিভে জল এলে খাওয়ার উপায় নেই কারণ সরস্বতী পুজোর আগে কুল খেলে স্বয়ং বিদ্যার দেবী রুষ্ট হ, আর এই কথা আমরা ছোটবেলা থেকেই শুনে আসছি। কিন্তু কেন এই প্রথা প্রচলিত? সেটা কি জানেন?
সামাজিক কারণ হিসেবে আমাদের দেশের কৃষিপ্রধান অর্থনীতি। যে কোনও নতুন ফসলকে প্রথমে ঈশ্বরের উদ্দেশ্য উত্সর্গ করে তারপর আমাদের খাওয়ার প্রথা প্রচলিত। তাই ধান উঠলে নবান্ন উত্সব পালন করা হয়। শীতকালে এই সময় প্রথম কুল ধরে গাছে। তাই প্রথমে দেবী সরস্বতীকে তা নিবেদন করে তবেই তাঁর প্রসাদ খাওয়ার প্রথা প্রচলিত হিন্দু বাঙালিদের মধ্যে।
তবে এর বৈজ্ঞানিক কারণ ও রয়েছে। শীতের অবসান ও বসন্তের শুরু, এই সন্ধিক্ষণেই সরস্বতী পুজো। ঋতু পরিবর্তনের এই সময়ে নানা রকম অসুখ বিসুখ হয়ে থাকে।তাই
সরস্বতী পুজোর সময়ই কুল পাকা শুরু হয়। তার আগে কাঁচা কুল খেলে পেটের গোলমাল হওয়ার আশঙ্কা থাকে। সেই কারণেও সরস্বতী পুজোর আগে কুল খেতে নিষেধ করা হয়।
আরোও পড়ুন – উড়ালপুল থেকে টাকার বৃষ্টি
পুরাণ কাহিনি মতে এর পেছনে শাস্ত্রের একটি গল্পও প্রচলিত আছে। দেবী সরস্বতীকে তুষ্ট করতে একবার মহামতি ব্যাসদেব বদ্রিকাশ্রমে তপস্যা করেছিলেন। এই তপস্যা শুরু করার আগে সেখানে একটি কুল বিজ রেখে আসেন সরস্বতী। তিনি বলেন যে যতদিন না এই বিজ অঙ্কুরিত হয়ে বড় গাছ হবে, সেই গাছে নতুন কুল হবে এবং সেই কুল পেকে ব্যাসদেবের মাথায় পরবে ততদিন তাঁকে তপস্যা করতে হবে। তবেইদেবী তুষ্ট হবেন সেই শর্ত মেনে নিয়ে ব্যাসদেব তপস্যা শুরু করেন। আর যেদিন তাঁর মাথায় নতুন কুল পরে সেদিন তিনি বুঝতে পারেন যে, সরস্বতী তাঁর তপস্যায় প্রসন্ন হয়েছেন। সেই দিনটি ছিল মাঘ মাসের শুক্লপক্ষের পঞ্চমী তিথি।