দেশদ্রোহ আইন অর্থাৎ, ভারতীয় দণ্ডবিধির ১২৪-এর ক ধারা, কে চ্যালেঞ্জ করে করা মামলা বৃহত্তর বেঞ্চে পাঠাল সুপ্রিম কোর্ট। মঙ্গলবার অর্থাৎ ১২ সেপ্টেম্বর, মামলাটি ভারতের সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়, বিচারপতি জেবি পর্দিওয়ালা এবং বিচারপতি মনোজ মিশ্রের বেঞ্চে উঠছিল। তাঁরা এই মামলার শুনানি অন্তত ৫ বিচারপতির বেঞ্চে হওয়া উচিত বলেই জানিয়েছেন বলে সূত্রে খবর। এদিনের শুনানিতে শীর্ষ আদালতের তিন বিচারকের বেঞ্চ বলেন, ১৯৬২ সালে এই বিষয়ে আরও একটি মামলা দায়ের হয়েছিল। সেই সময় সেই মামলার ক্ষেত্রে ৫ বিচারপতির বেঞ্চ এই বিধানটি বহাল রাখার রায় দিয়েছিলেন। তাই এখন এই মামলার শুনানির জন্য একটি বৃহত্তর বেঞ্চ প্রয়োজন হবে।
সুপ্রিম কোর্টের ওই তিন বিচারপতির বেঞ্চ এদিন আরও বলেছেন, ১৯৬২ সালে এই আইনকে চ্যালেঞ্জ করে যে মামলা আদালতে দায়ের করা হয়েছিল, তার রায় ঘোষণা করা হয়েছিল সংবিধানে বর্ণিত মৌলিক অধিকারের ভিত্তিতে। তবে, সেই সময় এই মৌলিক অধিকারের পরিসর ছিল অত্যন্ত সংকীর্ণ ছিল। আবেদনকারীও, শুধুমাত্র সংবিধানের ১৯ নম্বর অনুচ্ছেদের ভিত্তিতে এই আইনটিকে চ্যালেঞ্জ করেছিলেন। কিন্তু পরবর্তী ক্ষেত্রে মৌলিক অধিকারের পরিসর বেড়েছে। তাই পরবর্তীকালের বিভিন্ন রায়ে, সংবিধানের অনুচ্ছেদ ১৪, ১৯ এবং ২১-কে সামঞ্জস্যপূর্ণ হিসেবে স্বীকার করা হয়েছে।
এদিন, এই মামলার বিষয়ে আরও এক গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। সংসদের বাদল অধিবেশনের শেষদিন ভারতীয় দণ্ডবিধি প্রতিস্থাপনের জন্য সংসদে ‘ভারতীয় ন্যায়সংহিতা’ নামে একটি নতুন বিল আনা হয়েছে। এই বিলটি নিয়ে সংসদ সিদ্ধান্ত না নেওয়া পর্যন্ত দেশদ্রোহ আইনকে চ্যালেঞ্জ করা মামলাটির শুনানি পিছিয়ে দেওয়ার জন্য অনুরোধ করেছিল কেন্দ্রীয় সরকার। তবে, সুপ্রিম কোর্ট সেই আবেদন প্রত্যাখ্যান করেছে। তিন বিচারপতির বেঞ্চ বলেছে, নতুন বিলটি আইনে পরিণত হলেও, ভারতীয় দণ্ডবিধির ১২৪-এর ক ধারার অধীনে, অতীতে যে মামলাগুলি হয়েছে, সেগুলির উপর কোনও প্রভাব পড়বে না। নতুন দণ্ডবিধি আনা হলেও, এই বিধানের বৈধতার সাংবিধানিক বিচারের প্রয়োজন থাকবে। এই পরিস্থিতিতে, রেজিস্ট্রি বিভাগকে এই মামলার যাবতীয় নথি প্রধান বিচারপতির সামনে রাখার নির্দেশ দিয়েছে বেঞ্চ। তিনিই ৫ বিচারপতির বেঞ্চ গঠন করবেন।