ঠাকুরবাড়ির অশান্তি-তদন্তে সিট গঠনের নির্দেশ বিচারপতি মান্থার, ঠাকুরবাড়ির অশান্তি নিয়ে তৃণমূলের সর্ব ভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Abhishek Banerjee) বিরুদ্ধে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন বিজেপি সাংসদ শান্তনু ঠাকুর। সেই মামলায় রাজ্য পুলিশের ডিজি-কে সিট গঠনের নির্দেশ দিলেন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি রাজাশেখর মান্থা। মঙ্গলবার হাইকোর্ট নির্দেশ দেয়, মামলকারীর অভিযোগ এফআইআর হিসাবে গ্রহণ করতে হবে। এডিজি পদমর্যাদার কোনও অফিসারকে এই তদন্তের দায়িত্ব দিতে হবে। যে সব ভক্তদের গ্রেফতার দেখানো হয়েছে, তাঁদের জামিন দিতে হবে। তাঁরা তদন্তকারী অফিসারের সঙ্গে সপ্তাহে দু’দিন দু ঘণ্টার জন্য দেখা করবেন। তাঁদের জেলা না ছাড়ার নির্দেশও দেওয়া হয় আদালতের তরফে।
মামলাকারী শান্তনুর বক্তব্য ছিল, ১১ জুন পাঁচ হাজার পুলিশ মতুয়া মন্দিরে যায়। সে বিষয়ে আগাম কিছুই জানানো হয়নি। সেখানে তখন রথের জন্য মিটিং চলছিল। বহু ভক্তের সমাগম ছিল মন্দির চত্বরে। সেই সময় পুলিশ মারধর করে বলে অভিযোগ।
মামলাকারীর বক্তব্য, এই ঘটনায় আবার পুলিশই পাঁচটি এফআইআর করে। একটি মামলায় শ্লীলতাহানির অভিযোগ-সহ বাধা দানের অভিযোগও আনা হয়। মামলাকারীর আইনজীবীর বক্তব্য, প্রায় সব মামলার বয়ান একই। শুধু বিভিন্ন নামে অভিযোগ দায়ের করা হয়। প্রায় একই সময়ে, একইদিনে। পাঁচ নম্বর এফআইআরটি করেন স্থানীয় বিএমওএইচ।
গোটা ঘটনায় আট জন ভক্তকে গ্রেফতার করা হয়। দু’দিন পরে তারা জামিন পান। সেই মামলায় জামিন পেতেই নতুন মামলায় পুলিশ তাঁদের শোন অ্যারেস্ট করে। এখন তারা পুলিশ হেফাজতে। থানা অভিযোগ না নেওয়ায় ১৩ জুন ডিজি-র অফিসে অভিযোগ জানানো হয়। কিন্তু সেই অভিযোগে কোনও এফআইআর হয়নি।
রাজ্যের তরফে এজি সৌমেন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায় এ দিন সওয়াল করেন, দুটি ঘটনা দুই জায়গায়। ঠাকুর বাড়ি ও হাসপাতালে। তিন জন মহিলার শ্লীলতাহানি হয়েছে। তাই তিন জন অভিযোগ করেছেন। আর হাসপাতালে অশান্তির জন্য হাসপাতাল অভিযোগ করেছে। সব পক্ষের সওয়াল জবাব শোনার পর বিচারপতি মান্থা এই মামলার তদন্তে সিট গঠনের নির্দেশ দেন।
উল্লেখ্য, গত রবিবার কয়েকশো পুলিশ কর্মী ঠাকুরবাড়িতে যান অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি মতুয়া ধামে মিছিল করতে চেয়েছিলেন। কিন্তু তাতে সম্মতি ছিল না মতুয়া সম্প্রদায়ের। এই নিয়ে শুরু হয়েছিল জলঘোলা। পরে পরিস্থিতি রণক্ষেত্রের চেহারা নেয়। সেদিনের ঘটনার পর মন্দির ও চাঁদ পাড়া হাসপাতালের সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করার নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্ট। ১৮ জুলাই তদন্তে অগ্রগতির রিপোর্ট আদালতে জমা দিতে হবে তদন্তকারী অফিসারকে।