শিবের গলায় সাপ কেন জড়িয়ে থাকে? জানেন কি কারণ ?

শিবের গলায় সাপ কেন জড়িয়ে থাকে? জানেন কি কারণ ? হিন্দু শাস্ত্র অনুসারে, শিবের মূর্তি খুব পরিষ্কার ও সাধারণ। মাথায় রয়েছে জটা ও চন্দ্র, গলায় রুদ্রাক্ষের মালা, সর্প, হাতে ডমরু আর ত্রিশূল আর পরে থাকে একটুকরো বাঘছাল। মহাদেবের পরম ভক্ত সর্পের অলঙ্কার হিসেবে অন্যতম ভূমিকা ও অবদান রাখে। সর্বত্র তাঁর গলায় বাসুকি সাপ জড়িয়ে রাখেন। কিন্তু মহাদেবের গলায় হঠাত্‍ করে সাপ জড়িয়ে থাকে কেন, তা জানার কৌতূহল রয়েছে অনেকের।

 

 

 

সাপও ভগবান শিবের গণের অন্তর্ভুক্ত। মহাদেব তার গলায় নাগদেবতাকে স্থান দিয়েছেন। ভগবান শিব তার গলায় বাসুকি সাপ পরিয়ে দেন। শুধু তাই নয়, শিবলিঙ্গ কখনও একা প্রতিষ্ঠিত হয় না। শিবলিঙ্গের সঙ্গেও সর্প দেবতা অবশ্যই অবস্থান করে।

 

 

 

 

নাগদেবতা ও নন্দীর আরাধনা করলেই ভগবান শিবের আরাধনা সম্পূর্ণ বলে বিবেচিত হয়। নাগপঞ্চমীর দিনে সর্প দেবতা ও ভগবান শিবের পূজা করলে সুখ ও সৌভাগ্য বৃদ্ধি পায়। এই বছর নাগ পঞ্চমী পালিত হবে ২১ অগস্ট,সোমবার। এদিন কালসর্প দোষ থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্যও বিশেষ। পাশাপাশি রাহু-কেতুর দোষ দূর করতে নাগপঞ্চমীর দিনে প্রতিকার মেনে চললে সমস্ত ঝামেলা দূর হয়। হিন্দু ধর্মে আটটি সাপের উল্লেখ রয়েছে। অর্থাৎ ৮টি সাপকে দেবতা হিসেবে গণ্য করা হয়েছে। নাগরাজ বাসুকি হল ভগবান শিবের গলায় জড়িয়ে থাকা সাপ। শিবের গলা বাসুকি নাগকে গলায় ধরে রাখার পেছনে রয়েছে একটি পৌরাণিক কাহিনি।

 

 

 

 

 

সমুদ্র মন্থনের সময় বাসুকি সাপকে দড়ির আকারে মেরু পর্বতের চারপাশে জড়িয়ে দিয়ে মন্থন করা হয়েছিল। এর ফলে বাসুকি নাগের সারা শরীর রক্তে ভেসে যায়। এই সময় সমুদ্র মন্থন থেকে হলাহল বের হলে শিব তা গ্রহণ করেন। এই সময় বাসুকি নাগও ভগবান শিবকে সাহায্য করার জন্য কিছু বিষ গ্রহণ করে থাকেন। তবে এই বিষ পান করার ফলে বিষাক্ত সাপের কোনো প্রভাব পড়েনি। কিন্তু বাসুকির ভক্তি দেখে শিব তুষ্ট হন ও গলায় জড়িয়ে নেন সেই সময়।

 

 

 

আরও পড়ুন –  স্ত্রী ও মেয়েকে খুন করে ট্রেনের সামনে ঝাঁপ, আত্মঘাতী হলেন প্রাক্তন সেনাকর্মী

 

 

 

 

এছাড়াও কথিত আছে, নাগবংশীরা হিমালয় পর্বতে বাস করতেন। সেখানে শিবেরও বাস। সর্পদের প্রতি অত্যন্ত স্নেহ ও মমতা ছিল মহাদেবের। তাই নাগেশ্বর জ্যোতির্লিঙ্গ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। শাস্ত্র অনুসারে, মহাদেব হলেন সাপের দেবতা। শিবের সঙ্গে সাপের সম্পর্ক হল অতিপ্রাচীন ও অটুট। শেষনাগ, বাসুকি, তক্ষক, পিংলা ও কর্কোটক নামে সাপের পাঁচটি গোষ্ঠী ছিল। তারমধ্যে শেষনাগকে সাপরাজের প্রথম গোষ্ঠী বলে মনে করা হয়। অন্যদিকে বাসুকি মহাদেরে পরম ভক্ত ছিলেন। নিয়মিত শিবের পুজো করতেন। ভোলানাথ বাসুকির অগাধ ভক্তি দেখে খুশি হয়ে তিনি বাসুকিকে কন্ঠে ধারণ করার বর দেন।