রাজ্য – রাজ্য নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে SIR ইস্যু নিয়ে সংঘাত আরও তীব্র হচ্ছে। এবার এই বিতর্কে সরাসরি রাস্তায় নামতে চলেছে তৃণমূল কংগ্রেস। সূত্রের খবর, নভেম্বরের প্রথম সপ্তাহেই শহিদ মিনার চত্বরে বড় সভার পরিকল্পনা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। দাবি, SIR-এর নামে বাঙালিদের হেনস্থার প্রতিবাদেই এই সভার আয়োজন।
বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী ও কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী শান্তনু ঠাকুরের অভিযোগ, SIR চালু হলে রাজ্যের এক কোটিরও বেশি ভোটারের নাম বাদ যেতে পারে। তৃণমূলের পাল্টা প্রশ্ন, ভোটার তালিকা সংশোধনের নামে বিজেপি কেন সংখ্যা নিয়ে প্রচার চালাচ্ছে? দলীয় মহলে স্পষ্ট বার্তা, এটি প্রশাসনিক নয়, রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত উদ্যোগ।
প্রথম থেকেই SIR বিরোধিতায় সরব হয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সম্প্রতি যখন জাতীয় নির্বাচন কমিশনের প্রতিনিধিরা রাজ্যে এসেছিলেন এবং কালীপুজোর পরই SIR শুরু হতে পারে বলে জল্পনা তুঙ্গে, তখনই মমতা একের পর এক বিস্ফোরক মন্তব্য করেন। তিনি সতর্ক করে দেন, “বাংলা থেকে এক জনের নামও বাদ গেলে বুঝে নেব।” নবান্নে সাংবাদিক বৈঠক করে সরাসরি কমিশনের বিরুদ্ধে তোপ দাগেন মুখ্যমন্ত্রী।
বিজেপির তরফে এই বক্তব্যকে ‘থ্রেট’ বলে আখ্যা দেওয়া হয়। মমতা পাল্টা বলেন, “আগুন নিয়ে খেলবেন না। একটা প্রবাদ আছে—বাঁশের চেয়ে কঞ্চি বড়। যিনি রাজ্য থেকে গিয়েছেন, তাঁর বিরুদ্ধে অনেক অভিযোগ আছে। সময় হলে সব বলব।” এই মন্তব্যে নতুন করে বিতর্কের সৃষ্টি হয়।
বিজেপি রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার বলেন, “মুখ্যমন্ত্রী বুঝতে পেরেছেন, বিধানসভা নির্বাচনে হার নিশ্চিত। তাই SIR আটকাতে মরিয়া।” তিনি যোগ করেন, “আমরা অনুপ্রবেশকারী মুক্ত, প্রকৃত ভারতীয় ভোটারদের তালিকা চাই।” তৃণমূলের রাজ্য সহ সভাপতি জয়প্রকাশ মজুমদার পাল্টা প্রশ্ন তোলেন, “বিজেপির বক্তব্যে নিজস্ব বিরোধিতা স্পষ্ট। ২০১৪ পর্যন্ত যাঁরা ভারতে এসেছেন তাঁদের অনুপ্রবেশকারী বলা যাবে না—এই মর্মে নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন তো তারাই এনেছিল। তাহলে ২০১৪-র পর এক কোটি অনুপ্রবেশকারী ঢুকল কীভাবে? বর্ডার সিকিউরিটি ফোর্স তখন কী করছিল?”
অন্যদিকে, শুভেন্দু অধিকারী হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, “তৃণমূল যদি শহিদ মিনারে বসে, নির্বাচন কমিশন তার জবাব বুঝে নেবে।” ফলে SIR-কে ঘিরে রাজ্য রাজনীতি এখন চরম উত্তপ্ত, আর সেই উত্তাপ নভেম্বরেই শহিদ মিনার মঞ্চে দেখা যাবে বলে রাজনৈতিক মহলের অভিমত।
