রাজ্য – তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক ও ডায়মন্ড হারবারের সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় মঙ্গলবার বিজেপি ও নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে তীব্র আক্রমণ শানালেন। পশ্চিমবঙ্গে ভোটার তালিকার Special Intensive Revision (SIR) ঘোষণাকে তিনি ব্যঙ্গাত্মকভাবে ‘Silent Invisible Rigging’ বলে অভিহিত করেন। অভিষেকের অভিযোগ, এই প্রক্রিয়ার মূল উদ্দেশ্য গণতন্ত্রকে বিকৃত করা ও প্রকৃত ভোটারদের তালিকা থেকে বাদ দেওয়া।
অভিষেক বলেন, “এই প্রক্রিয়া অন্তর্ভুক্তির নয়, বর্জনের। বিজেপির নির্দেশেই এই ঘোষণা করা হয়েছে। আগে মানুষ সরকার বেছে নিত, এখন বিজেপি ঠিক করছে কে ভোট দেবে, কে দেবে না।” তিনি প্রশ্ন তোলেন, মাত্র ১৮ মাস আগে লোকসভা নির্বাচন শেষ হয়েছে, তার পরেই ভোটার তালিকায় এত গরমিলের অভিযোগ কেন উঠছে? তাঁর বক্তব্য, “যদি ভোটার তালিকায় সমস্যা থাকে, তাহলে লোকসভা ভেঙে দিয়ে ফের নির্বাচন করা হোক।”
বিজেপির দাবি যে বাংলাদেশ থেকে অনুপ্রবেশ ও রোহিঙ্গা ইস্যুর কারণে এই SIR প্রয়োজন, তা নস্যাৎ করে অভিষেক প্রশ্ন তোলেন, “বাংলাদেশ ও মায়ানমারের সীমান্ত তো পাঁচটি উত্তর-পূর্ব রাজ্যের সঙ্গেও যুক্ত। তাহলে শুধু পশ্চিমবঙ্গেই কেন SIR চালু করা হচ্ছে?” তিনি আরও মন্তব্য করেন, “২০০২ সালে পশ্চিমবঙ্গে SIR প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ করতে দুই বছর সময় লেগেছিল। এবার এক-দু’মাসে এত বড় কাজ শেষ করা সম্ভব কীভাবে?”
অভিষেকের অভিযোগ, “নির্বাচন কমিশন আসলে রাজ্যের প্রশাসনিক নিয়ন্ত্রণ নিজের হাতে নিতে চাইছে, যাতে ২০২৬ সালের বিধানসভা ভোটের আগে রাজ্য সরকার ঠিকভাবে কাজ করতে না পারে।”
এদিন তিনি উত্তর ২৪ পরগনার পানিহাটির বাসিন্দা প্রদীপ করের মৃত্যুর ঘটনাকেও রাজনৈতিকভাবে উল্লেখ করেন। অভিষেক দাবি করেন, প্রদীপ কর NRC ও SIR নিয়ে গভীর উদ্বেগে আত্মহত্যা করেছেন। এই ঘটনার জন্য তিনি কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ ও প্রধান নির্বাচন কমিশনার জয়নেশ কুমারকে দায়ী করে বলেন, “ওনার মৃত্যুর জন্য অমিত শাহ ও জয়নেশ কুমার দায়ী। তাঁদের বিরুদ্ধে এফআইআর হওয়া উচিত।”
অভিষেক হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, “একজন প্রকৃত ভোটারের নাম যদি তালিকা থেকে বাদ দেওয়া হয়, তাহলে এক লক্ষ মানুষ দিল্লিতে নির্বাচন কমিশনের দফতরের সামনে ধর্নায় বসবে।” তবে শেষ পর্যন্ত আত্মবিশ্বাসী ভঙ্গিতে তিনি জানান, “এই SIR দিয়েও বিজেপি আমাদের হারাতে পারবে না। তৃণমূল এবারও আসনে বৃদ্ধি ঘটাবে — এটাই আমার চ্যালেঞ্জ।”



















