পূর্ব পুরুষদের পেশা ধরে রাখতে সরা বিক্রি। বাঙালির বারো মাসে তেরো পার্বণ যেন লেগেই রয়েছে। তাই পৌষ সংক্রান্তি বাঙ্গালির কাছে দিনটি যেন পিঠা পুলির উৎসব। আর এই উৎসবে নানা রকম পিঠা বানানোর জন্য চালের গুঁড়া থেকে শুরু করে প্রয়োজন নানা সরঞ্জাম। পাশাপাশি অন্যতম মূল উপাদান হল মাটির সরা। আগে মাটির তৈরি এই সরা যথেষ্ট বিক্রি হলেও বর্তমানে সেভাবে বিক্রি নেই বলে জানাল বাজারে আসা বিক্রেতারা ।
তা সত্বেও পূর্ব পুরুষদের পেশা ধরে রাখতে তারা সরা বানিয়ে বিক্রিও করে থাকেন। দিনহাটার চওড়াহাট বাজার, প্রত্যুষা বাজার সহ বিভিন্ন বাজারে পৌষ সংক্রান্তির আগে মাটির এই সরা বিক্রি হচ্ছে ২০ থেকে ২৫ টাকা করে। বিক্রেতারা অনেকেই ভ্যানে করে পাড়ায় পাড়ায় ঘুরে বেড়াচ্ছেন বিক্রির আশায়।
দিনহাটার চওড়াহাট বাজারে আসা নয়ারহাটের সুদাম বর্মণ বলেন, “ আগে মাটির সরা পৌষ সংক্রান্তির সময় বিক্রি করে অনেকটাই সচ্ছলভাবে দিন কাটত। বর্তমানে আধুনিকতার যুগে করা মাটির তৈরি এই সরা সেভাবে আর বিক্রি হয় না।তা স্বত্বেও পূর্ব পুরুষদের এই পেশা থেকে সরতে পারছি না। বছরে অন্যান্য সময় কোন রকম কৃষিকাজ করে চলে। পৌষ সংক্রান্তি আসলেই পূর্বপুরুষদের সেই পেশা তাদের টানে।“
আরও পড়ুন – পৌরসভার উদ্যোগে স্বামী বিবেকানন্দের পূর্ণাঙ্গ মূর্তি স্থাপন
দিনহাটার ভাগ্নি এলাকার সন্তোষ পাল পৌষ সংক্রান্তির আগের দিন বুধবার দিনহাটার প্রত্যুষা বাজারে মাটির তৈরি সরা নিয়ে আসেন। তিনি বলেন,“ পৌষ সংক্রান্তির আগে ঘুরে ঘুরে বাবা ঠাকুরদারাও ঘুরে ঘুরে মাটির তৈরি সরা বিক্রি করতেন । নানা ধরনের বাসন আসার পাশাপাশি রেডিমেড পিঠাও বাজারে পাওয়ায় মাটির সরার চাহিদা কমে গিয়েছে। চাহিদা কমলেও পূর্বপুরুষদের পেশা অনেক কষ্ট করে ধরে রেখেছি ।“
দিনহাটার বিভিন্ন এলাকার গৃহবধূদের অনেকেই জানান,“ আগে মাটির তৈরি সরাতেই পিঠা বানাতেন। কিন্তু মাটির সরা যখন তখন ভেঙ্গে পড়লে সমস্যা হয়। কিন্তু ননস্টিকের বাসনে পিঠা তৈরি করার ক্ষেত্রে ভেঙে যাওয়ার যেমন কোন ভয় নেই তেমনি সুবিধা অনেক।”