রাজ্য রাজ্যপাল সংঘাত জারি। এবার ধূপগুড়ির নবনির্বাচিত বিধায়কের শপথগ্রহণকে কেন্দ্র করে ফের দড়ি টানাটানি শুরু হল রাজভবন ও নবান্নের মধ্যে। রাজ্যপাল সি ভি আনন্দ বোস ‘প্রথা ভেঙে’ এই জটিলতা তৈরি করছেন বলে অভিযোগ করেছেন পরিষদীয় মন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়। আর রাজ্যপালের ভূমিকাকে ‘সুস্থ গণতন্ত্রের পরিপন্থী’ বলে উল্লেখ করেছেন বিধানসভার স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়।
আরও পড়ুনঃ শিশির-দিব্যেন্দু বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নয় কেন, প্রশ্ন তৃণমূলেই
বিধায়ক হিসেবে ২০২১ সালে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের শপথগ্রহণ নিয়ে দীর্ঘ টানাপড়েন চলেছিল রাজভবন ও নবান্নের। সংঘাত বেধেছিল বিধায়ক বাবুল সুপ্রিয়ের শপথ ঘিরেও। এ বার একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি সামনে আসতে শুরু করেছে ধূপগুড়ির উপনির্বাচনে বিজয়ী তৃণমূল প্রার্থী নির্মলচন্দ্র রায়কে ঘিরে। পরিষদীয় দফতর সূত্রে খবর, ফল প্রকাশের পরেই নির্মলের শপথের জন্য প্রথামাফিক রাজ্যপালের কাছে চিঠি পাঠান মন্ত্রী শোভনদেব। কিন্তু রাজ্যপালের তরফে তার কোনও জবাব দেওয়া হয়নি। তৃণমূল সূত্রের দাবি, পরিষদীয় দফতরকে কিছু না জানিয়েই শুক্রবার রাজভবন থেকে সরাসরি বিজয়ী বিধায়কের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হয়। পরে বিধানসভায় জানিয়ে দেওয়া হয় যে, রাজ্যপালই বিধায়ককে শপথগ্রহণ করাবেন।
পঞ্চায়েত ভোটে আইনশৃঙ্খলা নিয়ে রাজভবন ও নবান্নের মধ্যে যে সংঘাতের পরিবেশ তৈরি হয়েছিল, গত কয়েক মাসে শিক্ষা দফতরকে কেন্দ্র করে তা চরমে পৌঁছেছে। এই আবহে নতুন মাত্রা যোগ করেছে ধূপগুড়ির বিজয়ী তৃণমূল বিধায়কের শপথগ্রহণ। স্পিকার বিমান এ দিন বলেন, ”রাজ্যপাল যা করছেন, তা সঠিক নয়। সংবিধান অনুযায়ী, তিনি নিজে শপথগ্রহণ করাতেই পারেন বা বিধানসভাকে সেই দায়িত্ব দিতে পারেন। কিন্তু সাধারণত এ কাজ বিধানসভাই করে। রাজ্যপাল যা করছেন, তা সুস্থ গণতন্ত্রের লক্ষণ নয়।” তাঁর আরও বক্তব্য, ”লোকসভায় নির্বাচিত সদস্যের শপথের ক্ষেত্রেও রাষ্ট্রপতির দেওয়া সেই দায়িত্ব পালন করেন স্পিকার। রাজ্যপালকে মনে করিয়ে দিই, তাঁর মতো স্পিকারের পদটিও সাংবিধানিক।”
রাজভবনের এই ভূমিকায় অসন্তুষ্ট নবান্নও। পরিষদীয় মন্ত্রী শোভনদেব বলেন, ”রাজ্যপাল কী চাইছেন, কোনও ক্ষেত্রেই তা স্পষ্ট নয়। পরিষদীয় দফতর এবং বিধানসভাকে এড়িয়ে যাওয়ার এই প্রবণতায় অন্য কোনও লক্ষ্য থাকতে পারে। তিনি গোটা ব্যবস্থার সঙ্গে অসহযোগিতা করছেন। যা করছেন, তা সংবিধান বা পরিষদীয় রীতিনীতির বিরোধী।” রাজ্য বিজেপির প্রধান মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্যের বক্তব্য, ”এটা রাজভবনের পদ্ধতিগত বিষয়। এই নিয়ে যা বলার রাজভবন ও রাজ্য বলবে। এই নিয়ে আমাদের কিছু বলার নেই।”