পার হয়ে গেল চার ঘণ্টারও বেশি সময়। এখনও ইডি দফতরে রয়েছেন তৃণমূল তারকা সাংসদ নুসরত জাহান। ফ্ল্যাট প্রতারণাকাণ্ডে নুসরতকে জিজ্ঞাসাবাদ ইডির। মঙ্গলবার সকাল ১০টা ৭ মিনিট নাগাদ সাদা রঙের নীলবাতি লাগানো গাড়িতে করে বাড়ি থেকে বেরোন নুসরত। সকাল ১০টা ৪৩ মিনিটে সল্টলেকের সিজিও কমপ্লেক্সে পৌঁছন নুসরত।
হাতে নথি নিয়ে ইডি দফতরে ঢোকেন তারকা সাংসদ। ফ্ল্যাট দেওয়ার নামে প্রতারণাকাণ্ডে মঙ্গলবার সকাল ১১টায় নুসরতকে তলব করেছিল ইডি। নির্ধারিত সময়ের আগেই ইডি দফতরে পৌঁছে গেলেন নুসরত। এই প্রতারণাকাণ্ডে সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করেছেন বসিরহাটের তৃণমূল সাংসদ। তদন্তে সহযোগিতা করবেন বলে জানিয়েছেন অভিনেত্রী।
আরও পড়ুনঃ নিউটাউনের যানজট কাটাতে শহরে নয়া উড়ালপুল, বরাদ্দ ৭০০ কোটি
নুসরত একটি সংস্থায় থাকাকালীন একাধিক প্রবীণ ব্যক্তির সঙ্গে ফ্ল্যাট বিক্রির নামে আর্থিক প্রতারণা করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এই নিয়ে বিজেপি নেতা শঙ্কুদেব পণ্ডা বেশ কয়েক জন অভিযোগকারীকে নিয়ে ইডির দফতরে গিয়ে অভিযোগ দায়ের করেন। আদালতের দ্বারস্থ হন অভিযোগকারীরা। ওই অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত শুরু করেন কলকাতা পুলিশ এবং ইডির গোয়েন্দারা। বস্তুত, এর আগেও তৃণমূল সাংসদকে ডেকে পাঠিয়েছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। তবে ওই ঘটনার পর পরই কলকাতা প্রেস ক্লাবে একটি সাংবাদিক বৈঠক ডেকে নুসরত জানান, অভিযোগ যখন করা হয়েছে, তার অনেক আগেই তিনি সংশ্লিষ্ট সংস্থা ছেড়ে দিয়েছিলেন। এ ছাড়াও তিনি জানান যে, কয়েক কোটি টাকা তিনি সংশ্লিষ্ট কোম্পানি থেকে ঋণ নিয়েছিলেন। সেই ঋণের টাকা তিনি কড়ায়-গণ্ডায় শোধ করে দিয়েছেন। যদিও ওই সংস্থার ডিরেক্টর রাকেশ সিংহ আনন্দবাজার অনলাইনকে জানিয়েছিলেন, তিনি নুসরতের দাবির কথা শুনে ‘শক্ড’ (স্তম্ভিত)! তিনি বলেছিলেন, ”আমি তো ওঁর ওই কথা শুনে শক্ড! আমরা কোথায় ঋণ দিলাম? আমরা তো প্রপার্টিতে পেমেন্ট করেছি। উনি তো অন্য একটি সংস্থা থেকে ঋণ নিয়েছিলেন।”
নুসরতকে প্রশ্ন করা হয়েছিল যে, তিনি ব্যাঙ্কের মাধ্যমে ঋণ না নিয়ে কেন একটি কোম্পানির তরফ থেকে ঋণ নিলেন? এ কথা শুনেই তৃণমূল সাংসদ নুসরত জাহান সাংবাদিক বৈঠক ছেড়ে বেরিয়ে গিয়েছিলেন। অন্য দিকে, ইডি সূত্রে খবর, এই অভিযোগের তদন্ত নেমে বিভিন্ন তথ্যপ্রমাণ নিয়ে এবং অভিযোগকারীদের সঙ্গে কথা বলে তাঁদের বয়ান রেকর্ড করার পর তৃণমূল সাংসদ নুসরতকে ডেকে পাঠানো হয়েছে।
সোমবার নুসরতের বিরুদ্ধে দায়ের হওয়া ফ্ল্যাট প্রতারণা সংক্রান্ত এই মামলার শুনানি ছিল নিম্ন আদালতে। সেই শুনানিতে আদালতের নির্দেশ নুসরতের পক্ষে গিয়েছে বলে দাবি করেছেন অভিনেত্রীর আইনজীবী। এই মামলার পরবর্তী শুনানি আগামী ৪ ডিসেম্বর।
ফ্ল্যাট বিক্রি নিয়ে প্রতারণার এই মামলায় প্রথম থেকেই আত্মবিশ্বাসী ছিলেন নুসরত। একটি পার্টিতে অভিনেতা যশ দাশগুপ্তের পাশে দাঁড়িয়ে জোর দিয়েই তিনি দাবি করেছিলেন, ইডি তাঁকে ডাকবে না। পরে গত মঙ্গলবার ইডির তলব প্রসঙ্গে নুসরত জানিয়েছিলেন, কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা তাঁকে ডাকলে তিনি অবশ্যই যাবেন এবং তদন্তে সহযোগিতা করবেন।