ভয় পেলে নিরাপত্তা দেব! বিচারপতি নির্দেশ দিয়েছেন সুবীরেশ ভট্টাচার্যকে জানাতে হবে, কার নির্দেশে দুর্নীতি হয়েছে , বৃহস্পতিবারই আদালতে এসএসসি-র চেয়ারম্যান জানিয়েছিলেন, গ্রুপ ডি নিয়োগের ক্ষেত্রে ২,৮১৯ জনের উত্তরপত্র গরমিল হয়েছে। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলেও জানানো হয়। তখন বিচারপতি বলেন, “আপনারা যখন জানেনই কারচুপি হয়েছে, তাহলে উপযুক্ত পদক্ষেপ করছেন না কেন?” বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় নির্দেশ দেন, “বেনিয়মে যাঁরা চাকরি পেয়েছেন, তাঁদের নাম প্রকাশ করুন, কমিশনের সাইটে আপলোড করুন ও চাকরি বাতিল করুন।” কিন্তু আদালতের পর্যবেক্ষণ, দুর্নীতির শিকড়টা কোথায়? সুবীরেশ প্রথমেই দাবি করেছিলেন, তিনি দুর্নীতির সঙ্গে যুক্ত নন। কিন্তু এখন আদালতের নির্দেশে তিনি তাঁর স্নাতকোত্তর ডিগ্রি, পিএইচডি ডিগ্রি ব্যবহার করতে পারবেন না। যতক্ষণ না পর্যন্ত তিনি নিজেকে নির্দোষ বলে প্রমাণ করতে পারছেন।
গ্রুপ ডি নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় তৎকালীন এসএসসি চেয়ারম্যান সুবীরেশ ভট্টাচার্যকে যুক্ত করা হল। শুক্রবার কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় নির্দেশ দিয়েছেন সুবীরেশ ভট্টাচার্যকে জানাতে হবে, কার নির্দেশে দুর্নীতি হয়েছে। নাম জানাতে ভয় পেলে উপযুক্ত নিরাপত্তার ব্যবস্থাও করা হবে বলে বিচারপতি এদিন স্পষ্ট করেছেন। আদালতের আরও বড় নির্দেশ, যতক্ষণ না সুবীরেশ ভট্টাচার্য নিজেকে নির্দোষ প্রমাণ করছেন, তিনি তাঁর পিএইচডি, স্নাতকোত্তর ডিগ্রি ব্যবহার করতে পারবেন না। বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় আরও বলেছেন, “নাম না বললে ধরে নেব, সুবীরেশ ভট্টাচার্যই দুর্নীতির মাথায়।” প্রসঙ্গত, তৎকালীন সময়ে এসএসসি-র প্রাক্তন উপদেষ্টা শান্তিপ্রসাদ সিনহার নেতৃত্বে একটি কমিটি গঠন করা হয়েছিল। সেই কমিটির সুপারিশেই চাকরি হয়েছিল। গ্রুপ ডি নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় সুবীরেশ ভট্টাচার্যকে পার্টি করে আদালত। শুক্রবার কলকাতা হাইকোর্ট ১৯১১ জনের চাকরি বাতিলের নির্দেশ দেয়। আদালতের আরও নির্দেশ, এই ১৯১১ জনকে তাঁদের এতদিনের বেতন ফিরত দিতে হবে। পাশাপাশি তাঁরা আর কোনওদিনও সরকারি চাকরিতে বসতে পারবেন না। বিচারপতি এদিন বলেন, “আমার দৃঢ় বিশ্বাস, এই সব প্রার্থীদের সুপারিশ দেওয়া হয়েছিল।” কিন্তু এই সুপারিশ কে দিয়েছিলেন, সেই নামটাও এবার প্রকাশ্যে আনার নির্দেশ দিলেন বিচারপতি। আর সেই নির্দেশ বর্তেছে সুবীরেশের ওপরেই। প্রয়োজনে তাঁকে কেন্দ্রীয় নিরাপত্তা দেওয়া হবে বলেও জানিয়ে দিয়েছেন বিচারপতি।
আরও পড়ুন –কলকাতা পুলিশের স্পেশ্যাল ব্রাঞ্চের কর্মীদের দিনের কাজ শেষ হলে অস্ত্র জমা রাখা..
এদিনের শুনানিতে স্কুল সার্ভিস কমিশনের আইনজীবী আদালতে স্বীকার করেন, ১৯১১ জনের চাকরি বেনিয়মে হয়েছে। তখন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় জানতে চান, তাহলে সে সময়ে এসএসসি-র চেয়ারম্যান কে ছিলেন? বিচারপতি জানান সুবীরেশ ভট্টাচার্য। তখনই তাঁকে এই মামলায় পার্টি করেন বিচারপতি।