তৃণমূলে থাকার সময়ে তাঁর কারণেই দল লোকসভা নির্বাচনে কাঁথি ও তমলুক আসনে জিতেছিল দাবি শুভেন্দুর , শুভেন্দু অধিকারীর দাবি, এ বার পঞ্চায়েত নির্বাচনে তৃণমূল ভোট লুট করায় লোকসভা নির্বাচনে তার প্রভাব পড়বে। এই প্রসঙ্গেই তিনি টেনে এনেছেন তাঁর তৃণমূলে থাকার সময়ের কথা। তাঁর দাবি, ২০১৮ সালের পঞ্চায়েত নির্বাচনে তাঁর এলাকায় তৃণমূল ভোট লুট করে জেতেনি বলেই ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে কাঁথি এবং তমলুক কেন্দ্রে জয় পেয়েছিল। পঞ্চায়েত নির্বাচনে ভোট ‘লুট’ নিয়ে রাজ্যের শাসকদল তৃণমূল এবং মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে আক্রমণ করে বৃহস্পতিবার এই দাবি করেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু।
বৃহস্পতিবার শুভেন্দু দাবি করেন, প্রায় এক কোটি মানুষকে এ বার পঞ্চায়েত নির্বাচনে ভোট দিতে দেওয়া হয়নি। বিজেপির বহু বিজেপি প্রার্থীর শংসাপত্র ছিনিয়ে নেওয়া হয়েছে বলেও তাঁর দাবি। পঞ্চায়েত ভোটের প্রতিক্রিয়া লোকসভা নির্বাচনে পড়বে দাবি করে শুভেন্দু বলেন, “এ বার লুটের পরিমাণ বেশি, তাই এ বার সাংসদ সংখ্যাটা ৩৬ হবে।” রাজ্যে বিজেপির সংগঠন শক্তিশালী নয় বলে দাবি করে তৃণমূল। এই প্রসঙ্গে শুভেন্দুর প্রশ্ন, ‘‘রাজ্যে বিজেপির সংগঠন না থাকলে তৃণমূলকে ভোট ‘লুট’ করতে হল কেন?’’ বিধানসভার আলোচনাতেও শুভেন্দু তাঁর বক্তব্যে তৃণমূলকে আক্রমণ করে বলেন, ‘‘এ বার ভোটে যা করেছেন, আগামী বছর সুদে আসলে হিসাব দিতে হবে।’’
রাজ্যের পঞ্চায়েত নির্বাচনে হিংসার অভিযোগ তুলে বিধানসভায় আলোচনার আর্জি জানিয়েছিল বিজেপি। স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় তাতে সম্মতি জানানোয় আলোচনা হয় বৃহস্পতিবার। সেই আলোচনার মধ্যেই মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘নন্দীগ্রামে দু’ঘণ্টা লাইট বন্ধ করে দিয়ে কী হয়েছিল ভুলে গেলেন?’’ এই বক্তব্যের প্রতিবাদ জানিয়ে অধিবেশন কক্ষ ত্যাগ করেন বিজেপি বিধায়কেরা। পরে সংবাদমাধ্যমের সামনে মুখ্যমন্ত্রী এবং শাসকদলের সমালোচনায় সরব হন শুভেন্দু। সেখানেই তিনি মমতাকে উদ্দেশ্য করে বলেন, “২০১৮ সালে কাঁথি, তমলুকে ভোট লুট করতে দিইনি বলেই, ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে কাঁথি, তমলুকে আপনাকে জিতিয়ে দিয়েছিলাম।” শুভেন্দুর দাবি, ২০১৮ সালে রাজ্যের অন্যত্র ভোট লুট হওয়ার কারণেই ১৮টি আসনে বিজেপি জিতেছিল।
আরও পড়ুন – ভাঙড়ের বাড়তি দায়িত্বে নাজেহাল লালবাজার,ভাঙড়ের বিধায়ক কি বললেন ?
এর জবাব দিয়েছে তৃণমূলও। দলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক তথা মুখপাত্র কুণাল ঘোষ বলেন, ‘‘২০১৮ সালে শুভেন্দুর একটি বক্তৃতার জন্য আমরা ওঁর কাছে ঋণী। তিনি বলেছিলেন, পূর্ব মেদিনীপুরের মানুষ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দ্বারা উপকৃত। আজ সেই বক্তৃতা ভাইরাল।’’ একই সঙ্গে কুণালের দাবি, ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে ওই দুই কেন্দ্রেই বিপুল ভোটে জিতবে তৃণমূল। প্রসঙ্গত, কাঁথি লোকসভা কেন্দ্রের সাংসদ শুভেন্দুর পিতা শিশির অধিকারী এবং তমলুক লোকসভা কেন্দ্রের সাংসদ শুভেন্দুর ভাই দিব্যেন্দু অধিকারী। দু’জনই এখন বিজেপি ঘনিষ্ঠ বলে দাবি করে তৃণমূল। যদিও খাতায়কলমে তাঁরা তৃণমূলেরই সাংসদ।