বিএসএফের গুলিতে মৃতের বাড়িতে মুখ্যমন্ত্রীর দেওয়া দুই লক্ষ টাকার চেক প্রদান প্রশাসনের। গিতালদহ সীমান্তের ভারবান্দা এলাকায় বিএসএফের গুলিতে মৃত প্রেম বর্মণের বাড়িতে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর পাঠানো দুই লক্ষ টাকার চেক তুলে দিল প্রশাসনের আধিকারিকরা। মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী উদয়ন গুহ, বিধায়ক জগদীশ চন্দ্র বর্মা বসুনিয়া, মহকুমা শাসক রেহেনা বশির, মহকুমা পুলিশ আধিকার ত্রিদিব সরকার, দিনহাটা থানার আইসি সুরোজ থাপা প্রমূখরা ওই বাড়িতে গিয়ে পরিবারের হাতে মুখ্যমন্ত্রীর দেওয়া দুই লক্ষ টাকার চেক তুলে দেন।
মন্ত্রী ও প্রশাসনের আধিকারিকরা এদিন মৃত যুবকের বাড়িতে গেলে সেখানে উপস্থিত ছিলেন কোচবিহার জেলা পরিষদের কর্মাধ্যক্ষ নুর আলম হোসেন, তৃণমূল নেতা আনারুল হক বাবু, অভিজিৎ রায়, মাফুজুর রহমান সহ অনেকেই। এদিন মহকুমা শাসক সহ মন্ত্রী ও বিধায়কের সামনেই কান্নায় ভেঙে পড়লেন মা সহ পরিবারের লোকেরা। এরপর প্রশাসনের পক্ষ থেকে দুই লক্ষ টাকার চেক মৃত প্রেমের বাবা শিবেন বর্মণের হাতে তুলে দেওয়া হয়। মহকুমা শাসক মৃত যুবকের মাকে সান্তনা দেওয়ার সময় নিজেই গ্লাসে করে জল খাইয়ে দেন।
ঘটনার পর থেকে যুবকের মা সুকমণি বর্মণ তিন দিন ধরে কোনরকম কিছু মুখে তোলেন নি। তাকে সুস্থ রাখতেই চেষ্টা করেন। এদিন মন্ত্রী ছাড়া প্রশাসনের আধিকারিকরা ভারবান্দা গ্রামে মৃত যুবকের বাড়িতে গেলে পরিবারের পাশাপাশি গ্রামের বাসিন্দারা বিএসএফের অমানবিক অত্যাচারের কথা তুলে ধরেন। সীমান্ত ছেড়ে গ্রামে এসে বিএসএফ কিভাবে নানাভাবে মানুষকে অত্যাচারিত করে, যার জন্যই এই ঘটনা ঘটলো বলেও তারা উল্লেখ করেন। অবিলম্বে দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতেও সরব হয় গ্রামের বাসিন্দারা।
এ নিয়ে জেলা প্রশাসনের সাথে কথা বলে আলোচনা করা হবে বলে ও গ্রামের বাসিন্দাদের আশ্বস্ত করেন প্রশাসনের আধিকারিকরা। পাশাপাশি তৃণমূলের পক্ষ থেকেও যে যে জায়গায় জানানো প্রয়োজন সেসব করা হবে বলেও মন্ত্রী ও বিধায়ক উল্লেখ করেন।
বিধায়ক জগদীশচন্দ্র বর্মা বসুনিয়া বলেন, গত কয়েক মাসে সিতাই থেকে দিনহাটা বিভিন্ন সীমান্তে পাঁচজনকে এভাবে প্রাণ দিতে হলো বিএসএফের হাতে। বিএসএফ নানাভাবে সীমান্তের মানুষকে হয়রানি করে চলছে। বিধানসভার অধিবেশনে বিএসএফের প্রসঙ্গ তুলে ধরবো।
আরও পড়ুন – মিঠুনের সেটে খাবার দিতেন বাবা, এখন আমি তাঁর সিনেমার প্রযোজক : দেব
উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রী উদয়ন গুহ জানান, রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী এতটাই মানবিক ঘটনার কথা জানতে পেরেই এই পরিবারের পাশে দাঁড়ানোর জন্য আর্থিকভাবে দুই লক্ষ টাকা দেওয়ার ব্যবস্থা করেন। আমরা সেই টাকাই পরিবারের হাতে তুলে দিলাম। টাকা দিয়ে হয়তো এই ক্ষতিপূরণ করা যাবে না। এই পরিবারটা যাতে অনাহারে না থাকে ধ্বংস হয়ে না যায় তার জন্য মাননীয় মুখ্যমন্ত্রীর যে চিন্তা এটা আমাদের কাছে একটা গর্বের ব্যাপার। এই চেকটা মৃত যুবকের পরিবারের হাতে তুলে দিতে পেরে আমরাও গর্বিত। মহকুমা শাসক এসেছেন তিনিও শুনলেন বিএসএফের অত্যাচারের কথা। এটা আমাদের সকলেরই জানা।
আর আমরা বিএসএফের বিরুদ্ধে সোচ্চার যার জন্য আমাদের নানাভাবে কটুক্তির মুখে পড়তে হয়। কিন্তু এতে আমাদের মুখ বন্ধ করা যাবে না। প্রেম একজন সাধারণ যুবক। তার বিরুদ্ধে গরু পাচারের কোন অভিযোগ নেই।এ ধরনের ঘটনা যদি আবারও ঘটে তাহলে মানবিক মুখ্যমন্ত্রীর পাশাপাশি আমরা তাদের পাশে দাঁড়াবো।