জয়ের ধারা অব্যাহত রেখে ঠিক যেভাবে শ্রীলঙ্কাকে গুড়িয়ে দিয়েছিল ভারত, নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে তা হলনা

জয়ের ধারা অব্যাহত রেখে ঠিক যেভাবে শ্রীলঙ্কাকে গুড়িয়ে দিয়েছিল ভারত, নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে তা হলনা

Facebook
Twitter
LinkedIn
Email
WhatsApp
Print
Telegram

জয়ের ধারা অব্যাহত রেখে শ্রীলঙ্কাকে গুড়িয়ে দিয়েছিল ভারত কিন্ত নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে জয় তত সহজ হল না। জিতলেও শেষ বল পর্যন্ত লড়তে হল ভারকে। দিনের শুরুটা যদি হয় শুভমান গিলের, শেষটা তাহলে মহম্মদ সিরাজের। প্রথম ম্যাচে নিউজিল্যান্ডকে ১২ রানে হারাল ভারত। হাড্ডাহাড্ডি ছিল ম্যাচ।

 

শেষ ওভারে নিউজিল্যান্ডের জয়ের জন্য দরকার ছিল মাত্র ২০ রান।শার্দুল ঠাকুরের প্রথম বলেই ৬ রান নেন ব্রেসওয়েলে। দ্বিতীয় বল ওয়াইড। তৃতীয় বল ইয়র্কার। বল সরাসরি আছড়ে পড়ে ব্রেসওয়েলের পায়ে। শার্দূলের আবেদনে সাড়া দেন আম্পায়ার। এলবিডব্লু আউট ব্রেসওয়েল। রিভিউ নিয়েও শেষরক্ষা হয়নি। টানটান উত্তেজনার ম্যাচে কিউয়িদের ১২ রানে হারিয়ে একদিনের সিরিজে ১–০ ব্যবধানে এগিয়ে গেল ভারত। ভারতের জয়ের নায়ক শুভমান গিল। দুরন্ত দ্বিশতরান করে তিনি দলের জয়ের ভিত তৈরি করে দেন।

 

তাঁর ২০৮ রানের সৌজন্যে প্রথমে ব্যাট করে নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৮ উইকেটে ৩৪৯ রান তুলেছিল ভারত। জবাবে ৪৯.‌২ ওভারে ৩৩৭ রানে গুটিয়ে যায় নিউ জিল্যান্ডের ইনিংস। অবিশ্বাস্য লড়াই করেও নিউজিল্যান্ডকে জয়ের মুখ দেখাতে পারলেন না মাইকেল ব্রেসওয়েল ও মিচেল স্যান্টনার। জয়ের জন্য ৩৫০ রানের লক্ষ্য নিয়ে ব্যাট করতে নামলে শুরুটা ভালো হওয়া খুবই জরুরি। যদি বড় রানের টার্গেটের সামনে কোনও দল শুরুতেই উইকেট হারিয়ে বসে,

লড়াই থেকে অনেকটাই দূরে সরে যায়। নিউজিল্যান্ডেরও সেটাই হয়েছিল। ২৮ রানে ডেভন কনওয়েকে ১০ হারায় নিউজিল্যান্ড। ভারতকে প্রথম ব্রেক থ্রু এনে দেন মহম্মদ সিরাজ। ঘরের মাঠে জীবনের প্রথম একদিনের ম্যাচ খেলতে নেমে দারুণ শুরু করেন হায়দরাবাদের এই জোরে বোলার। শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে একদিনের সিরিজে যেখানে শেষ করেছিলেন, নিউ জিল্যান্ডের বিরুদ্ধে সেখান থেকেই শুরু করেন।

 

প্রাথমিক ধাক্কা সামলে নিউ জিল্যান্ডকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছিলেন ফিন অ্যালেন ও হেনরি নিকোলস। ত্রয়োদশ ওভারে জুটি ভাঙেন শার্দুল ঠাকুর। তুলে নেন ফিন অ্যালেনকে ৩৯ বলে ৪০। এরপর দ্রুত নিকোলস ১৮ ও ড্যারিল মিচেলকে ৯ হারায় নিউ জিল্যান্ড। দুজনকেই ফেরান কুলদীপ যাদব। গ্লেন ফিলিপকে ১১ তুলে নেন মহম্মদ সামি। ১১০ রানে ৫ উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে যায় কিউয়িরা। দ্বিতীয় স্পেলে এসে অধিনায়ক টম লাথামকে ২৪ রান তুলে নিয়ে নিউজিল্যান্ডের মেরুদণ্ড ভেঙে দেন মহম্মদ সিরাজ।এরপর লড়াই শুরু করেন মাইকেল ব্রেসওয়েল ও মিচেল স্যান্টনার। এই দু’জনের হাত ধরে দারুণভাবে ম্যাচে ফিরে আসে নিউ জিল্যান্ড।

 

জুটিতে ১০২ বলে ১৬২ রান তুলে কিউয়িদের জয়ের স্বপ্ন দেখিয়েছিলেন ব্রেসওয়েল ও স্যান্টনার। স্যান্টনারকে ৪৫ বলে ৫৭ রান তুলে নিয়ে জুটি ভাঙেন সিরাজ। পরের বলেই শিপলেকে তুলে নেন কোন রান যোগ করার আগেই। ফার্গুসনকে ৮ রানে ফেরান হার্দিক। অবিশ্বাস্য লড়াই করেও দলকে জয় এনে দিতে পারেননি ব্রেসওয়েল। ৭৮ বলে ১৪০ রানের দুরন্ত ইনিংস খেলে তিনি শার্দুল ঠাকুরের বলে লেগ বিফোর আউট হন। ১২টি ৪ ও ১০টি ৬ মারেন ব্রেসওয়েল। ৪৬ রানে ৪ উইকেট নেন মহম্মদ সিরাজ। এদিন টস জিতে প্রথমে ব্যাট করতে নামে ভারত।

 

১২ ওভারে ৬০ রান তুলে ফেলেন দুই ওপেনার রোহিত শর্মা ও শুভমান গিল। ১৩তম ওভারে প্রথম ধাক্কা খায় ভারত। ব্লেয়ার টিকনারের বলে ড্যারিল মিচেলের হাতে ক্যাচ দিয়ে আউট হন রোহিত, ৩৮ বলে ৩৪ রান। ছন্দে থাকা বিরাট কোহলি এদিন ব্যর্থ ,১০ বলে ৮ রান। মিচেল স্যান্টনারের বলে বোল্ড হন তিনি। ঈশান কিশানকে চার নম্বরে পাঠানো হয়েছিল।নিজেকে মেলে ধরতে পারেননি। ১৪ বলে ৫ রান করে ফার্গুসনের বলে আউট হন কিশান। নিউ জিল্য়ান্ডের বিরুদ্ধে সিরিজের প্রথম ম্যাচে দুর্দান্ত ডাবল সেঞ্চুরি করেছেন শুভমান গিল। ওপেন করতে নেমে তিনি সেষ ওভার পর্যন্ত দলকে টানলেন। ১৪৯ বলে করলেন ২০৮ রান।

আরও পড়ুন – ৭১তম ‘মিস ইউনিভার্স’ বিজয়ী হলেন মার্কিন তরুণী আর’বনি গ্যাব্রিয়েল

ওডিআইতে নিজের ১৯ তম ইনিংসে তিনি এই দ্বিশতরান করলেন। পঞ্চম ভারতীয় হিসেবে ২০০-র বেশি রান করলেন। তবে এই তালিকায় সবার উপরে রোহিত শর্মার নাম থাকবে। ওডিআই ক্রিকেটের বেতাজ বাদশা তাঁকে বলাই যায়। ভারতের তিন ফর্ম্য়াটের অধিনায়ক রোহিত শর্মা ওডিআই ক্রিকেটে মোট তিনবার ডাবল সেঞ্চুরি করেছেন। তাঁর সর্বোচ্চ রান ২৬৪। শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে ২০১৪ সালে এই রানটি তিনি করেন। ১১০ রানের মধ্যে ৩ উইকেট হারায় ভারত। সেখান থেকে দলকে টেনে নিয়ে যান শুভমান গিল ও সূর্যকুমার যাদব। জুটিতে ওঠে ৬৫। জুটি ভাঙেন ড্যারিল মিচেল। তুলে নেন সূর্যকুমারকে,২৬ বলে ৩১।

 

তার আগেই সেঞ্চুরি পূর্ণ করেন শুভমান। এদিন তাঁর সেঞ্চুরি আসে ৮৭ বলে। ‌সেঞ্চুরির পর রীতিমতো তান্ডব চালান ভারতীয় দলের এই ওপেনার।১৪৫ বলে ২০০ রান পূর্ণ করেন। ইনিংসের ৪৯ তম ওভারে লকি ফার্গুসনের প্রথম ৩ বলে তিন–তিনটি ছক্কা মেরে দ্বিশতরানে পৌঁছন শুভমান। তাঁর পরের ১০০ আসে ৫৮ বলে। শেষ পর্যন্ত ১৪৯ বলে ২০৮ রান করে আউট হন শুভমান। মারেন ১৯টি ৪ ও ৯টি ৬।

 

শিপলের বলে দুরন্ত ক্যাচ ধরেন গ্লেন ফিলিপস। হার্দিক পান্ডিয়া ৩৮ বলে করেন ২৯। নিউ জিল্যান্ডের হয়ে শিপলে ও গ্লেন ফিলিপস ২টি করে উইকেট নেন। ভারতের এই জিত পরের ম্যাচকে আরও গুরুত্বপূর্ণ করে তুলল। যে নিউজিল্যান্ড পাকিস্তানের মাটিতে পাকিস্তান হারিয়ে দ্বিগুন মনোবল নিয়ে ভারতে এসেছে তারা বুঝতে পারছে পাকিস্তানের চেয়ে কত মজবুত।

RECOMMENDED FOR YOU.....

Scroll to Top